রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৪ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আপনারা ইতোমধ্যে জানেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা যিনি গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে একটি মিথ্যা মামলা সাজিয়ে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার নিম্ন আদালতের যে কোর্টে তার সাজা হলো, হাইকোর্ট ১০ বছর সাজা দিয়ে দিলেন। অথচ একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসহ বহু নেতা জামিন পেয়েছেন, পরবর্তীকালে মামলা খালাস হয়ে গেছে এবং তারা মন্ত্রীও ছিলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫ টি মামলা ছিল। সেই মামলাগুলো দুর্নীতির একই ধরনের মামলা ছিল। সেটাও ওয়ান ইলেভেনে দেওয়া হয়েছিল। সেই মামলাগুলো কিন্তু তারা অত্যন্ত কৌশলের বিভিন্ন বিচারক নিয়োগ দিয়ে মামলাগুলো আদালতেই খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। আসলে তারা আদালতকে ব্যবহার করছে অস্ত্র হিসেবে, তারা ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এসব সর্বক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে একটি মামলায় দণ্ড দেওয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘ আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বর্তমান রাজনীতির অবস্থা তুলে ধরেছেন। প্রকৃতপক্ষেই ফ্যাসিবাদী চক্রান্ত। তারা প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিচার বিভাগকে। এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তারা জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, সেই অধিকারগুলোকে পুরোপুরি হরণ নেওয়া হচ্ছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন, গণতন্ত্রেও জন্য মানুষের যে সংগ্রাম সেই সংগ্রাম স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য বিচার বিভাগকে দিয়ে আজকে চরমভাবে নিপীড়ন নির্যাতন করা হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষকে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে আমাদের এমপি ছিলেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরার, তাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। এর আগে ঈশ্বরদীতে আমাদের নেতা মিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। তাদের অপরাধ ২৫-২৬ বছর আগে পাবনায় একটা সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে এমনভাবে তারা প্রচার করছে যেন এগুলো সত্য, বাকিগুলো মিথ্যা। গণমাধ্যমকেও তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে সরকার আদালতকে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, জনগণ যে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছে, লাখ লাখ মানুষ গত কয়েক বছর ধরে এই সংগ্রামে করছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন লাখ লাখ মানুষ রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য একটাই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই জন্য তারা সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন চেয়েছে। ঠিক সেই সময়ে চলমান আন্দোলনের যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যিনি এই আন্দোলনকে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সঠিকখাতে নিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী অরাজনৈতিক মানুষ ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র লক্ষ্য আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া, তাকে ধীরগতি করা। যেখানে মামলাই হয় না, সেখানে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, নাসির উদ্দিন অসীম, নাজিম উদ্দিন আলম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।
ভয়েস/জেইউ।