বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:২৯ অপরাহ্ন
মাওলানা আশরাফুল ইসলাম:
নবী-রাসুল ছাড়া পৃথিবীতে নিখুঁত ও নির্দোষ মানুষ নেই। কমবেশি সবার মধ্যেই দোষ-ত্রুটি আছে। আর আমাদের মতো মানুষের মধ্যেও দোষ-ত্রুটি থাকা খুবই স্বাভাবিক। যেহেতু সবার মধ্যেই কমবেশি দোষ-ত্রুটি আছে, তাই নিজের মধ্যে দোষ রেখে অন্যের দোষ খুঁজতে যাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যের দোষ খোঁজা কিছু মানুষের স্বভাব। অথচ হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যের দোষ এড়িয়ে যেতে বলেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের চোখে পতিত সামান্য ময়লাটুকুও দেখতে পায়, কিন্তু নিজের চোখে পতিত খড়কুটাও (বেশি ময়লা) দেখে না।’ (সহিহ ইবনে হিববান : ৫৭৬১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই। সে না তার ওপর জুলুম করতে পারে, আর না তাকে শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারে। যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট হয় আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের একটি কষ্ট দূর করে দেয় এর বিনিময়ে আল্লাহতায়ালাও কেয়ামতের দিন তার কষ্টসমূহ থেকে একটি কষ্ট দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে রাখবে, মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন। (সহিহ বুখারি)
যে ব্যক্তি অন্যের দোষ খোঁজে আল্লাহতায়ালাও তার দোষ খোঁজেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) মানুষের দোষত্রুটি খুঁজতে নিষেধ করেছেন এবং এর মন্দ পরিণতি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা দোষ-ত্রুটি তালাশ করবে না। কারণ যারা মানুষের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াবে মহান আল্লাহও তাদের দোষত্রুটি খুঁজবেন। আর আল্লাহ কারও দোষ-ত্রুটি তালাশ করলে তাকে তার ঘরের মধ্যেই অপদস্থ করে ছাড়বেন। (জামে তিরমিজি ২০৩২)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের গোপনীয় বিষয় গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার গোপনীয় বিষয় গোপন রাখবেন। আর যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের গোপনীয় বিষয় ফাঁস করে দেবে, মহান আল্লাহও তার গোপনীয় বিষয় ফাঁস করে দেবেন। (ইবনে মাজাহ : ২৫৪৬) তাই আমাদের সবার জন্য করণীয় হলো এ বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকা। যেন আমরা অন্যের দোষ কারও কাছে বর্ণনা না করি। তাহলে স্বয়ং আল্লাহতায়ালা আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতে অপদস্ত করবেন। যদি আমরা কারও দোষ সম্পর্কে জেনেও মহান আল্লাহর ভয়ে তা অন্যের কাছে বর্ণনা না করি তাহলে আল্লাহতায়ালা আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতে অসংখ্য কল্যাণ দান করবেন।
ভয়েস/আআ