শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক, কক্সবাজার ভয়েস:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘স্বৈরাচার পতনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা দ্বিতীয় স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাদের রক্তের বিনিময় যদি আমরা পরিশোধ করতে চাই, তাহলে আমাদের কিছু কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ রয়েছে। কারণ, ফ্যাসিবাদি সরকার আমাদের সব সময় শাসন ও শোষণ করেছে। আজকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম হিসাবে ব্যবধানটি বুঝিয়ে দেয়া সেটা আমাদের কর্তব্য। এই কত্যব্যটি পুরন করার জন্য আমাদের সমাজে বিদ্যমান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পারিবারিক দুর্নীতি, সমাজের দূর্নীতি, রাষ্ট্রের দূর্নীতি সহ সকল দূর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহ আরো বলেন, আমাদের রাজনীতির মতাদর্শ আলাদা থাকতে পারে, আমাদের এখানে জামায়াত থাকতে পারি, শিবির থাকতে পারি, ছাত্রদল থাকতে পারি, আমরা বিএনপি হতে পারি, আমরা পেশীবাদ বিরোধী যতগুলো রাজনীতিদল ছিল তাদের নেতা হতে পারি, কিন্তু আমাদের সকলের একটি বিষয়ে এক্য থাকতে হবে সেটি হচ্ছে স্বেরাচারের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজারের পাবলিক হলে আয়োজিত দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নির্মূলে ছাত্র-নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এসব কথা বলে তিনি।
মতবিনিময় সভায় হাসনাত বলেন, ‘যখন ভাঙার সময় আসে তখন আমরা এক হয়ে যাই। যেমন ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়, একাত্তরের যুদ্ধে, নব্বইয়ের অভ্যুত্থানে কিংবা ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমরা সবাই এক হয়ে লড়েছিলাম। এসময় আমরা কাউকে জিজ্ঞেস করিনি কে সরকারি চাকরি করে- কে করে না, কে বিসিএস ক্যাডার- কে ক্যাডার না। এভাবে পৃথিবীর সবকিছুতেই ভাঙার সময় এক হয় মানুষ, কিন্তু যখন গড়ার সময় আসে তখন বিভাজন সৃষ্টি হয়। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের আগপর্যন্ত আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ ছিল না। যখন রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের সময় এসেছে তখনই বিভাজন তৈরি করছি। এই জায়গা থেকে আমাদের বের হতে হবে। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন-ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা এখনো ওত পেতে আছে। সুযোগ পেলেই তারা বহু জীবনের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানতে পারে। এমন অবস্থায় জুলাই-আগস্টে যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, জনগণের অধিকার রক্ষায় সবাইকে সার্বক্ষণিক সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের সরাতে শত শত ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। তারা তো কোনো পদ-পদবি চাননি। আন্দোলন শেষে আমরা যখন রাষ্ট্র ও সরকার মেরামতের কাজে হাত দিয়েছি, তখন অনেকেই পদ-পদবির জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন
মতবিনিময সভায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, কক্সবাজারের সমন্বয়ক শাহেদ ওয়াহেদ, শাহেদ মাহমুদ লাদেস, সাহাব উদ্দিন চৌধুরী, ফাহমিদা হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে কক্সবাজারের পেকুয়া-চকরিয়ায় শহিদদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে যান কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। সেখান থেকে আজ বৃহস্পতিবার ছাত্র-জনতার আলোচনা সভায় যোগ দিতে কক্সবাজার শহরে আসেন। কলাতলী জোনে একটি হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেখানে কেউ একজন তার ফোন চুরি করে নিয়ে যায়।
ভয়েস/আআ