শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

প্রতিমা বিসর্জন: সৈকতে সম্প্রীতির মেলবন্ধন

আবদুল আজিজ:
হিন্দু ধর্মলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এই দুর্গাপূজাকে ঘিরে উৎসবে মেতেছে পুরো সৈকত। যেন সম্প্রীতির মেলবন্ধন। রোববার দুপুর থেকে বিকালে যখন সূর্য ডুবার আগেই একে একে সব প্রতীমাকে বিসর্জন দিয়ে মা দেবীকে বিদায় জানান পূজারীরা। সাথে যোগ দেন লাখো উৎসুক জনতা। সনাতন ধর্মাবলম্বীর পাশাপাশি নানা ধর্মের মানুষের সরব উপস্থিতি বলে দিচ্ছে, এ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহামিলন। সৈকতের লাবনী পয়েন্ট শুরু করে উত্তরে শৈবাল ও কবিতা সত্ত্বর ও দক্ষিণে সুগন্ধা, কলাতলী সৈকত। পুরো সৈকত জুড়ে মানুষ আর মানুষ।

দুর্গাপূজার শুরু থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বেষ্টনী গড়ে তোলে স্থানীয় প্রশাসন।গত ৫দিন ধরে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি সাদা পোষাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপরতা ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। একারণে কক্সবাজারে এ পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল বলেন, ‘এ বছর কক্সবাজার জেলার ৯টি উপজেলায় ৩২১টি মন্ডপে পূজা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫১টি প্রতিমা ও ১৭০টি ঘটপূজা। শুধু কক্সবাজার সৈকত নয়, জেলার রামুর বাঁকখাল নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। রবিবার বিকালে লাখো দর্শাণার্থীদের উপস্থিতিতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সরব উপস্থিতির কারণে কোন ধরণের ঘটনা ছাড়াও দুর্গাপূজা সম্পন্ন হলো।’

এদিকে, প্রতীমা বিসর্জন ও টানা ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটক ও পূজারি মিলে ২ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে সৈকতে। পুরো সৈকত জুড়ে লোকে লোকারণ্য সৈকত।

দুপুর থেকে সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টে তৈরী করা হয় বিশাল মঞ্চ। উক্ত মঞ্চে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় জেলা পুজা উদযাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সাজার জেলা প্রশাসক মো: সালাহ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো: রহমত উল্লাহ। আলোচনা সভা শেষে বিকেলে মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে একযোগে সব প্রতিমা সাগরে বিসর্জন দেওয়া হয়।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন, পর্যটক ও পূজারীদের নিরাপত্তায় আমাদের কন্টোল রুম চালু করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা কাজ করছে। এতে করে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো: রহমত উল্লাহ বলেন, ‘বিশাল মানুষের উপস্থিতিতে বুঝা যায় এ যেন এক সম্প্রীতির বাংলাদেশ। বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে প্রতিমা বিসর্জন দেশের আর কোন এলাকায় হয় কিনা জানা নেই। তাই, সব মানুষের ভালবাসায় বিসর্জন দেয়া হলো প্রতীমা।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: সালাহউদ্দিন বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম প্রতিমা বিসর্জন উৎসব হয়ে গেলো কক্সবাজারে।এতে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এখন কক্সবাজার ভ্রমণ করছেন লাখো পর্যটক। সৈকতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এদিকে, দুর্গা পূজার সরকারি ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে চার দিনের লম্বা ছুটি থাকায় কক্সবাজার সমুদ্রকৈত যেন খানায় খানায় ভর্তি। সমদ্র সৈকত ছাড়াও হিমছছড়ি, ইনানী, দরিয়া নগর পাটুয়ার টেক সহ সবগুলো পর্যটন স্পটে সমাগম ঘটেছে পর্যটকের। পর্যটকদের পদচারনায় মুখর এখন এসব এলাকা।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION