রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০২:০৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

চন্দনাইশ ও পটিয়ার সুস্বাদু পেয়ারার কদর দেশ জুড়ে

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম ব্যুরো:
দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও পটিয়া উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে এবছর পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানকার বাগানে উৎপাদিত পেয়ারা চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সারাদেশে যাচ্ছে। পেয়ারার দাম নিয়েও সন্তুষ্ট চাষিরা। গায়ে কোন রকম দাগ না লাগে মত বাগান থেকে পাঁকা পেয়ারা ছিড়ে লাল কাপড়ে মুড়িয়ে তা বাজারে বিক্রে করতে নিয়ে যাচ্ছে চাষীরা। চন্দনাইশ ও পটিয়ার অলি গলিতে এবং সড়কের পাশে দেখা যাচ্ছে লাল কাপড়ে মোড়ানো থলিতেই বিক্রেতাদের কাঁধে সারি সারি পেয়ারার ভার। পটিয়া ও চন্দনাইশে উৎপাদিত পেয়ারা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, স্বাদেও অনন্য। এই পেয়ারা একটানা পাওয়া যাবে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত।

কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চট্টগ্রামের পটিয়া ও চন্দনাইশে বিশাল পাহাড়ি এলাকাজুড়ে রয়েছে শত শত পেয়ার বাগান। শুধু চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ, ছৈয়দাবাদ ও লালুটিয়া পাহাড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০০ থেকে এক হাজার পেয়ারা বাগান রয়েছে। পটিয়ায় রয়েছে তিন’শ পেয়ারা বাগান। এছাড়া পাশ্ববর্তী সাতকানিয়ার কাঞ্চরনগর, মাদারসা ও বাঁশখালীতে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। এখানকার চাষীদের অনেকেই পেয়ারা চাষ করে ঘুচিয়েছেন বেকারত্বের অভিশাপ।

পটিয়ার পেয়ারা বিক্রেতা রমজান আলী বলেন, পটিয়া ও চন্দনাইশের পেয়ারা চট্টগ্রাম ছাড়াও বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের পাহাড়ের এসব পেয়ারা অনেক সুস্বাদু। এবার করোনা হলেও ফলন ভালো হয়েছে। দেশে দুই জাতের পেয়ারার মধ্যে একটি কাজী পেয়ারা অন্যটি কাঞ্চননগরী পেয়ারা। কাজী পেয়ারা আকারে বড় হলেও স্বাদ একটু কম। তিনি বলেন, পেয়ারা সংরক্ষণে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি হিমাগার নির্মাণের দাবি আজ দীর্ঘদিনের। এটি নির্মাণ হলে লক্ষ লক্ষ টাকার পেয়ারা নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে বলে জানান তিনি।

চন্দনাইশের পেয়ারা ব্যবসায়ী নুরুল আলম বলেন, ব্যাপারীরা শ্রাবণ মাস থেকে তিন মাসের জন্য পেয়ারা বাগানগুলো কিনে নেন। বাগানের পরিধি অনুযায়ী দাম নির্ধারিত হয়। তারপর পুরো সিজনে চলে পেয়ারা সংগ্রহ। সূর্য উঠতেই চাষীরা পেয়ারা সংগ্রহে নেমে পড়েন। তিনি বলেন, চন্দনাইশের কাঞ্চননগরী পেয়ারার আকার ছোট হলেও স্বাদ ও পুষ্টিতে ভরপুর। চট্টগ্রামের পটিয়া ও চন্দনাইশের কাঞ্চননগর এলাকায় কাজী পেয়ারা আর কাঞ্চননগরী পেয়ারার মূল উৎপাদনস্থল বলেও জানান তিনি।

খবর নিয়ে জানাগেছে এ অঞ্চলের সম্ভাবনাময় সুমিষ্ট পাহাড়ি পেয়ারা হাজারো কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। এ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে হাজারো মানুষের। এরপরও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না এ খাত। অথচ একটি সংরক্ষণাগার নির্মাণ করে বিদেশে রফতানির পরিকল্পনা করলে আয় করা যেতো বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।

সরজিমিনে দেখাগেছে ভোরের আলো না ফুটতেই পাহাড় থেকে দল বেঁধে পেয়ারা নিয়ে ফিরছেন চাষিরা। লাল কাপড়ে মোড়ানো পুঁটলি বেঁধে আনা হচ্ছে তিন থেকে চার মাইল পায়ে হেঁটে। পরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ের চক্রশালা, কাঞ্চননগর, রওশনহাাট ও বাগিচাহাটসহ নানা হাটে তোলা হয় দেশীয় এ ফল। ভাঁড়ে ভাঁড়ে সাজিয়ে রাখা এ পেয়ারা চাষ বদলে দিচ্ছে হাজারো কৃষকের জীবন। খেতে সুস্বাদু ও দেখতে সুন্দর বলে এ পেয়ারা কদরও বেশি। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসেন ভিটামিনে ভরা এ পেয়ারা কিনতে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION