রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে নারায়ণ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন ঢাকা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “ওই মসজিদটির মেঝের নিচ দিয়ে গ্যাসের পাইপ লাইন নেওয়া হয়েছে। আমরা আগুন নেভানোর জন্য পানি দেয়ার পর সেখানে বুদবুদ দেখতে পেয়েছি। এর অর্থ গ্যাস লিকেজ হচ্ছিল। মূলত পাইপটি ছিদ্র হয়ে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। এদিকে পুরো মসজিদ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় গ্যাস মসজিদের ঘরের মধ্যেই আটকে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মসজিদের কোনো ফ্যান চালানোর সময় সুইচবোর্ড থেকে আগুনের ফুলকি নিগর্ত হয়। সাথে সাথে মসজিদের ভেতরে থাকা ৬টি এসিতে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরিত হয়।”
আবদুল্লাহ আল আরেফিন আরও বলেন, “এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি আহত হয়েছে। এর মধ্যে কোনো শিশু আছে কিনা বলা যাচ্ছে না। তবে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।”
এর আগে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে এশার নামাজ চলাকালীন অবস্থায় মসজিদের ছয়টি এসি বিস্ফোরিত হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শঙ্কর পাল। আহতদের মধ্যে ২৫ জন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দীন ও পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম।
এসপি জায়েদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৭ জনকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস লিকেজের কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। আমরা পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির প্রতবেদনেই অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ জানা যাবে।”
“সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে দ্রুত আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করার। আমাদের একটি প্রতিনিধি দলও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থান করছে,” যোগ করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। আমি ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে অবগত করেছি। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও বার্ন ইউনিটের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে দগ্ধ রোগীরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পায়।”
এ সময় দগ্ধ মানুষের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। সূত্র:ঢাকা ট্রিবিউন।
ভয়েস/জেইউ।