রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

সৌদি আরবে পাচার হচ্ছে ইয়াবা

ইয়াবা,ফাইল ছবি

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা এখন বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে সৌদি আরবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে চোরাকারবারিরা। টাকার লোভ দেখিয়ে কিংবা আত্মীয়ের কাছে পার্সেল দেওয়ার নামে প্রবাসীদের কাছে দেওয়া হচ্ছে ইয়াবার চালান। মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়ে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন প্রবাসীরা। সৌদি আরবে বাঙালিদের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে সৌদি পুলিশ। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের বিমানবন্দরে ইয়াবাসহ ধরা খেয়ে মাদক মামলায় জেলে যাচ্ছেন প্রবাসীকর্মীরা।

সবশেষ ৯ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদিগামী একজন যাত্রীর কাছ থেকে ১ হাজার ৮৭৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক)। সোহেল রানা নামের ওই যাত্রী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেন, তার গ্রামের এক নারী নিজের প্রবাসী ছেলেকে দেওয়ার জন্য এই ব্যাগ দিয়েছিলেন তাকে।

আটক হওয়া প্রবাসীদের প্রায় সবারই অভিযোগ- তাদের অজান্তে পরিচিতজনরা খাবার, জামা, সবজি, আচারের নামে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়েছেন ব্যাগে।

প্রবাসী কর্মীদের তথ্যানুযায়ী- জেদ্দা, মক্কা, মদিনা, রিয়াদ, আল কাসিম, দাম্মামসহ বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশিরা ইয়াবা ব্যবসা ও সেবন করছেন। সৌদিসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মধ্যেও এই মাদকের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।

ইয়াবাসহ সৌদিতে অনেক বাংলাদেশির ধরা পড়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রবাসীদের অনেকে। তাদের মন্তব্য, এ কারণে বাংলাদেশিদের দেখলেই তল্লাশি করে সৌদি পুলিশ। তাই একধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতে হয় প্রবাসীকর্মীদের।

সৌদি প্রবাসী কাওসার আহমেদ বলেন, ‘সৌদি আরবে বাংলাদেশিদের মধ্যে মাদকসেবনের প্রবণতা বেড়েছে। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। মাদকের কারণে বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খবর পেলেই তাদের ধরে নিয়ে যায়। বাঙালি বাজারগুলোতে এখন প্রায়ই অভিযান চালায় পুলিশ। এতে একদিকে যেমন দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ শ্রমিকরা হুমকির মধ্যে আছে।’

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে ২০০-৩০০ টাকায় ইয়াবা নিয়ে সৌদি আরবে প্রতি পিস এক-দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সহজে বেশি টাকা আয়ের নেশায় অনেকে স্বেচ্ছায় জড়িয়ে পড়ছেন মাদক পাচারের সিন্ডিকেটে। এর সদস্যরা ছুটিতে আসা প্রবাসীদের লক্ষ্য বানায়। পরিচিত প্রবাসীদের কাছে আচার, খাবার, ওষুধসহ নানান কথা বলে ইয়াবার চালান ভরে দেয় তারা। যাচাই ছাড়া এসব পার্সেল নিয়ে বিপদে পড়ছেন প্রবাসীরা।

এদিকে মাদক পাচারকারীদের সহযোগী হিসেবে বিমানবন্দর কর্মীদের যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে সৌদির আদালতে প্রবাসী মো. আবুল বাশারের ২০ বছরের কারাদণ্ডের ঘটনার কথা বলা যায়। তাকে আচারের প্যাকেটের কথা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইয়াবাভর্তি একটি প্যাকটে নিতে বাধ্য করেছিল বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্নতা কাজের সুপারভাইজার নূর মোহাম্মদ।

যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমানবন্দরের কোনও কর্মী অপরাধে জড়ালে ছাড় দেওয়া হবে না।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসানের দাবি, ‘বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা দক্ষতার সঙ্গে মাদক শনাক্ত করতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে এগুলো পাচারের আগেই ধরা পড়ছে।’

বিমানবন্দর কর্মীদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অপরাধ করে কেউ ছাড় পাবে না। বিমানবন্দরের সর্বত্র সিসি ক্যামেরা আছে, ফলে অপরাধ করে লুকিয়ে থাকার সুযোগ নেই। আমরা আশা করবো, বিমানবন্দরের কোনো কর্মী অপরাধে জড়াবে না। যাত্রীদেরও অন্যের মালামাল নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।’

প্রবাসীদের একই পরামর্শ দিয়েছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক। তার শঙ্কা, ‘অন্যের দেওয়া জিনিসপত্র না দেখে, যাচাই না করে বহন করলে বিপদে পড়তে হতে পারে।’

আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উল্লেখ করেছেন, বিমানবন্দরে বিভিন্ন কৌশলে মাদক পাচারের অপচেষ্টা চালানো হয়। তবে তার কথায়, ‘বিমানবন্দরের বিভিন্ন সংস্থা মাদক চোরাচালান রোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। সৌদি আরবে ইয়াবা পাচারের সময় বেশকিছু যাত্রীকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছি। অতিরিক্ত লোভের আশায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তারা ইয়াবা পাচারের চেষ্টা করেছিল। তবে বিমানবন্দরের স্ক্যানিংয়ে অবশ্যই তা ধরা পড়বে।’

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION