শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ধর্মঘট: কক্সবাজারে আটকা পড়েছে অর্ধলাখ পর্যটক

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।ফাইল ছবি।

ভয়েস প্রতিবেদক:

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে হঠাৎ গণপরিবহণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় কক্সবাজার বেড়াতে এসে শুক্রবার ফিরে যাওয়ার সিডিউল থাকা প্রায় অর্ধলাখ পর্যটক আটকা পড়েছেন।

শনিবার যাদের বিশেষ কাজ রয়েছে সেসব পর্যটকদের অনেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় উড়োজাহাজে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। যাদের সেই সামর্থ্য নেই তারা ছোট যানবাহনে কক্সবাজার ছাড়ার চেষ্টা চালান সারাদিন। কিন্তু অন্য সময়ের চেয়ে ভাড়া দুই-তিনগুণ হওয়ায় বিকাল পর্যন্ত তারা কক্সবাজার ত্যাগ করতে পারেননি।

সপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে বৃহস্পতি-শুক্র ও শনিবার হাতে রেখে কক্সবাজার আসেন লাখো পর্যটক। অনেকে পূর্বের নির্ধারিত সময়ানুসারে কক্সবাজার এসেছেন বৃহস্পতিবার। আবার শুক্রবার ভোরেও পৌঁছান অনেকে। যারা শুক্রবার ফিরে যাওয়ার সিডিউলে ছিলেন তারা এসেছিলেন আরও কয়েক দিন আগে। এ ধরনের পর্যটক অর্ধলাখ হবে বলে হোটেল সংশ্লিষ্টরা জানান। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তারা নির্ধারিত সময়ে কক্সবাজার ছেড়ে যেতে পারেননি।

আবার পূর্ব থেকে হোটেল রুম বুকিং দিয়ে যাদের শুক্রবার বিকালে পৌঁছার কথা ছিল, কিন্তু যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় কক্সবাজারে ভ্রমণে আসতে পারেননি প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক। প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক পর্যটক শুক্রবার-শনিবারের জন্য হোটেলের কক্ষ অগ্রিম বুকিং দিয়েছিলেন। কিন্তু রাতের বাস ও নিজস্ব গাড়িতে যাত্রা করা ২০ হাজারের মতো পর্যটক শুক্রবার ভোরে কক্সবাজার পৌঁছলেও ভোরে যাত্রা করার কথা ভাবা অন্য পর্যটকরা শেষমেশ আসতে পারেননি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন, মালবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিবহন সংগঠনের নেতারা। হঠাৎ যান চলাচল বন্ধের ঘোষণায় সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে; যার প্রভাব পড়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষুদ্র যানবাহন জেলাকেন্দ্রিক সড়ক বা চট্টগ্রামের পথে চলাচল করছে। তবে সেসব যানবাহন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দিগুণ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

ফেনী এলাকার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আমিরুল ইসলাম বউ নিয়ে কক্সবাজার আসেন গত মঙ্গলবার। রোববার আবারো প্রবাসে ফিরে যাবেন বলে শুক্রবার সকালের বাসে কক্সবাজার ত্যাগ করার সিডিউল করেন। কিন্তু সকালে হোটেল ছাড়লেও বাসে কক্সবাজার ত্যাগ করতে পারেননি। কিন্তু রোববার বিদেশের ফ্লাইট ধরতে না পারলে বিমানের বিপুল টাকা লস যাবে- তাই বিকাল ৩টার বিমানে কক্সবাজার ত্যাগ করতে টিকিট নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

দুপুর ১২টার দিকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে কিটকট চেয়ারের পাশে লাগেজসহ দেখে কথার ছলে তিনি এসব শেয়ার করেন। তিনি বলেন, আরও অনেকে তার মতো সকালে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থেকেও যেতে পারেননি।

কক্সবাজার তাজ করপোরেশন অ্যান্ড ট্রাভেলস সেন্টারের মালিক জানে আলম বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে বিমানের টিকিটের জন্য বেশ কিছু কুয়েরি এসেছে। অনেকে নগদে টিকিট করলেও অনেকে চাহিদার সঙ্গে দামের সামঞ্জস্য না হওয়ায় টিকিট কাটেননি।

সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় সিলেট থেকে আসা নবদম্পতি নোমান শরিফ ও নাবিলা শরিফের সাথে। সকালে চট্টগ্রাম গিয়ে ট্রেনে সিলেটে ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু স্বপ্নের কক্সবাজারে হানিমুনটা শেষ বেলায় এসে বেদনায় ভরে দিয়েছে পরিবহন ধর্মঘট।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, হঠাৎ দূরপাল্লার বাস বন্ধ হওয়াতে পর্যটকরা চরম বেকাদায় পড়েছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও।

তিনি বলেন, বাড়ি ফেরার আশায় আনুমানিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার পর্যটক হোটেল ছেড়ে দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে যদি বাস খুলে দেওয়া না হয় তাহলে এসব পর্যটক চরম বেকায়দায় পড়বেন। একইভাবে বাস বন্ধ থাকায় বিপুল পরিমাণ পর্যটক কক্সবাজারে আসতে পারেননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, পর্যটক আটকা পড়ার বিষয়টি প্রশাসনকে কেউ জানায়নি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার রাতের অবস্থা দেখে আটকাপড়া পর্যটকদের বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION