রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০০ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

চালু হচ্ছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট, উচ্চঝুঁকিতে দেশের সব বিমানবন্দর

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে ফের চালু হচ্ছে অভ্যন্তরীণ চার রুটের ফ্লাইট। কভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া স্বাস্থ্যবিধি ও নীতিমালা অনুসরণ করে ফ্লাইট পরিচালনার সব রকম প্রস্তুতিও নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইনসগুলো। যদিও ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সির (ইএএসএ) এক প্রতিবেদন বলছে, যাত্রী ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কভিড-১৯ সংক্রমণে এখনো উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে দেশের সব বিমানবন্দর।

ইইউর সদস্য দেশগুলোর তথ্য সমন্বয়ের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (ইসিডিসি) এবং খ্যাতিসম্পন্ন বিভিন্ন গণস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে থাকা বিমানবন্দরগুলোর তালিকাটি তৈরি করেছে ইএএসএ। গত ২৭ মে প্রকাশিত এ তালিকায় বাংলাদেশের সবগুলো বিমানবন্দরকেই উচ্চঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, বিমানবন্দরগুলো কভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে, এটা সত্য। তবে সেটা রুখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্যবিধি ও আইকাও নির্দেশনা অনুযায়ী এয়ারলাইনসগুলোকে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, ১ জুন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালুর পর থেকে বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হবে। এয়ারলাইনসগুলো নির্দেশনা মেনে চলছে কিনা, সেটা প্রতিটি ফ্লাইট উড্ডয়নের আগেই বেবিচকের ইন্সপেক্টররা যাচাই করবেন। কোনো ব্যত্যয় পেলেই সেই ফ্লাইট উড্ডয়নের অনুমতি দেয়া হবে না।

দেশের অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ বেসরকারি তিনটি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছিল। করোনার কারণে বন্ধ হওয়ার আগে এসব রুটে চারটি এয়ারলাইনসের দৈনিক প্রায় ১৪০টির মতো ফ্লাইট চলাচল করত। প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফের ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক। প্রাথমিকভাবে শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট চলবে।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, নিরাপদে ফ্লাইট চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের সব এয়ারলাইনস, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং এভিয়েশন খাতের সঙ্গে জড়িত সবার জন্য ৩৫টি নির্দেশনা দিয়ে গত ১০ মে একটি সার্কুলার জারি করেছে বেবিচক। এতে চেক-ইন, ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, ক্রুদের নিরাপত্তা, সার্বিক দিকনির্দেশনা, এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা, ক্রুদের কোয়ারেন্টিন ম্যানেজমেন্ট, এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স, কেবিন এয়ার ফিল্টারেশন, অক্সিজেন মাস্কসংক্রান্ত নির্দেশনা, ফ্লাইটে সন্দেহজনক রোগী পেলে করণীয় সম্পর্কে অবহিত করার বিষয়ে এয়ারলাইনসগুলোকে কী কী করতে হবে সেসব বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।

বেবিচকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাত্রীদের চেক-ইনের সময় কাউন্টার ও আশপাশের সহযোগীদের সার্বক্ষণিক মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, ডিসপোজেবল ক্যাপ পরতে হবে। এছাড়া কাউন্টারের পাশে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ফ্লাইটে যাত্রীর আসনবিন্যাস করতে হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। উড়োজাহাজের শেষের দুই সারি খালি রাখতে হবে। ফ্লাইটে যদি কোনো করোনা আক্রান্ত সন্দেহে রোগী পাওয়া যায় তাহলে একজন কেবিন ক্রু তাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফ্লাইটের ওই সিটগুলোতে নিয়ে বসাবেন।

অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি দেখতে গত শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ রুটে পরিচালিত ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিমানবন্দরে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যাত্রীদের ভ্রমণ করার সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার অনুরোধও করেন তিনি।

ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সির প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের বিমানবন্দরও উচ্চঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় স্থান পেয়েছে। ভারতের গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তামিলনাড়ু ও উত্তর প্রদেশের সব বিমানবন্দর এবং পাকিস্তানের সব বিমানবন্দর কভিড-১৯ সংক্রমণে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইএএসএ। এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের সব বিমানবন্দরকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইএএসএ।

এছাড়া উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে বেলজিয়াম, আফগানিস্তান, বেলারুশ, চিলি, ডমিনিকান রিপাবলিক, একুয়েডর, মিসর, ইরান, কুয়েত, পেরু, কাতার, সৌদি আরব, তুরস্ক ও আরব আমিরাতের সব বিমানবন্দর।

উচ্চঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দরের তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের সব বিমানবন্দরও। অঙ্গরাজ্যগুলো হচ্ছে আলাবামা, অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, কানেটিকাট, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ইলিনয়, ইন্ডিয়ানা, লুইজিয়ানা, মেরিল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস, মিশিগান, নিউ জার্সি, নিউইয়র্ক, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, পেনসিলভানিয়া, রোড আইল্যান্ড, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া ও ওয়াশিংটন।

তালিকায় স্থান পাওয়া যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দরগুলো হলো বার্মিংহাম, ডনকাস্টার, শেফিল্ড, ইস্ট মিডল্যান্ডস, গ্যাটউইক, গ্লাসগো, হিথরো, লিডস ব্র্যাডফোর্ড, লিভারপুল জন লেনন, লন্ডন সিটি, লুটন, ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্ট, নিউক্যাসল ইন্টারন্যাশনাল ও স্ট্যানস্টেড।

এছাড়া ফ্রান্সের ইলে-ডে-ফ্রান্স, ইতালির এমিলিয়া রোমানা, লোম্বার্ডি, পিয়েমন্তে ও ভেনেতো, নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শিফোল এয়ারপোর্ট, আইন্দহোফেন এয়ারপোর্ট, মাসট্রিস্ট আচেন এয়ারপোর্ট ও রটারড্যাম দ্য হেগ এয়ারপোর্ট, পোল্যান্ডের ক্যাটোভিচ এয়ারপোর্ট, পর্তুগালের ফ্রান্সিসকো সা কার্নেইরো এয়ারপোর্ট ও লিসবন পোর্তেলা এয়ারপোর্ট, স্পেনের কাস্তিলে অ্যান্ড লিওন, কাস্তিলা-লা মানচা, কাতালোনিয়া, মাদ্রিদ, সুইডেনের স্টকহোম, ব্রাজিলের আমাজোনাস, বাহিয়া, সিয়ারা, এস্পিরিতো সানতো, মারানহাও, পারনামবুকো, রিও ডি জেনিরো, সান্তা কাতারিনা ও সাও পাওলো, কানাডার অন্টারিও ও কুইবেক, মেক্সিকোর মেক্সিকো সিটি, রাশিয়ার মস্কো, মুরমানস্ক, নিজনি নভগারোদ ও সেন্ট পিটার্সবুর্গ এবং ইউক্রেনের চেরনিভিস ও কিয়েভ এয়ারপোর্ট। সূত্র:বণিকবার্তা।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION