সোমবার, ৩০ Jun ২০২৫, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

হাতি ও বন্য প্রাণী রক্ষায় লামা বন বিভাগের সচেতনতামূলক সভা

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা:
বন্য হাতি সংরক্ষণ, মানুষ ও হাতির সহাবস্থান সৃষ্টি, বৈদ্যুতিক ফাঁদ হতে হাতির জীবন রক্ষা, হাতির অভয়ারণ্য সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতির আক্রমণ হতে জান-মালের রক্ষার কৌশল বিষয়ক এক সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করে লামা বন বিভাগ। সোমবার (১৫ জুন) লামা বন বিভাগের উদ্যোগে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী বাজারে এই সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সচেতনতামূলক ওরিয়েন্টেশন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার। অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার, লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা নুরে আলম হাফিজ, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জাবেদ মীরজাদা, সাংবাদিক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নুরুল করিম আরমান, ইউপি মেম্বার মোঃ আলমগীর চৌধুরী সহ প্রমূখ।
ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় কুমারী, আড়াই মাইল, চাককাটা, বড়ছন খোলা, কবিরার দোকান, ইয়াংছা সহ কয়েক গ্রামে দেড় শতাধিক স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেয়।
সভায় বক্তারা বন্য প্রাণী ও মানুষ সহাবস্থানে বেঁচে থাকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে উপস্থিত লোকজন মুক্ত আলোচনা অংশ নেয়। সেখানে তারা জানায়, বিগত ৪/৫ বছর যাবৎ হাতির আক্রমণে নিহত ও আহতরা নিয়মিত ক্ষতিপূরণ পেয়ে আসছে। এছাড়া বন বিভাগের পক্ষ থেকে ফসল ও শস্যের ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা জানায়, আর কোন ফাঁদ পেতে তারা বন্য প্রাণীর ক্ষতি করবে না।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার বলেন, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বাঘ ও হাতি হত্যায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও এই এলাকায় হাতি মারার ঘটনা ঘটে চলেছে। তার ওপর আছে চোরাকারবারিদের উপদ্রব৷ তাই বনের প্রাণী রক্ষায় সচেতনতার বিকল্প নেই৷
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন) ২০০৪ সালে হাতির ওপর একটা জরিপ করে৷ সেই জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মাত্র ২২৭টি হাতির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে৷ ভয়ের বিষয় হলো যে, এ সংখ্যাটাও কমছে ক্রমশই।
তিনি আরো বলেন, দেশে বন্য প্রাণী ও পাখি সংরক্ষণের জন্য আইন ও বিধিবিধান থাকলেও সেগুলো পর্যাপ্ত লোকবল সংকট, সচেতনতা, তদারকি ও জবাবদিহির অভাব; রাজনৈতিক প্রভাবসহ নানা কারণে কার্যকর হচ্ছে না। ফলে দিন দিন দেশে বন্য প্রাণী ও পাখি শিকার ও নিধনের ঘটনা বেড়েই চলেছে, যা পরিবেশের জন্য এক অশনিসংকেতই বটে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ জরুরি ভিত্তিতে এসব বন্য প্রাণী ও পাখি সংরক্ষণের জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। প্রয়োজন বন্য প্রাণী অপরাধ দমন বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে শক্তিশালী করা। সর্বোপরি সরকার, বন বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সবারই এ ক্ষেত্রে দ্রুত একযোগে এগিয়ে আসা প্রয়োজন; যেন বাংলার এই সবুজ প্রাকৃতিক ভূমি বন্য প্রাণী ও পাখিদের জন্য নিরাপদ অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেন, বন্য প্রাণী ও সম্পদ রক্ষায় এই ধরনের সচেতনতামূলক সভা আরো করা হবে। কিভাবে বন্য প্রাণী ও মানুষ সহাবস্থানে বসবাস করা যায় সে বিষয়ে নিদিষ্ট কমিটি করে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। এই বিষয়ে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগকে সাথে নিয়ে কাজ করা হবে।
ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION