বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুখবর। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম শেষ হতে পারে অক্টোবরের মধ্যে। এ নিয়োগের পর চলতি বছরই প্রাথমিকে আরও ৩০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কাজ শুরু হবে। অন্যদিকে, অক্টোবরে ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে চেষ্টা করছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয় ২০২০ সালে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে দুই বছর পর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। তিন ধাপে দেশের ৬১টি জেলায় লিখিত পরীক্ষা শেষে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী চলছে মৌখিক পরীক্ষা, তবে তা শেষের দিকে।
দিনাজপুর ছাড়া অন্যান্য জেলার প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। দিনাজপুরের শেষ হবে ২ অক্টোবর। মৌখিকের ফল প্রকাশের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা শেষের দিকে। অক্টোবরের শুরুর দিকে তাদের নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দিনাজপুর ছাড়া বাকি অঞ্চলের মৌখিক পরীক্ষা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি, অক্টোবরের মধ্যেই শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হবে
মনীষ চাকমা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন)
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনীষ চাকমা বলেন, দিনাজপুর ছাড়া বাকি অঞ্চলের মৌখিক পরীক্ষা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি, অক্টোবরের মধ্যেই শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ শেষে চলতি বছরই আরও ৩০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনলাইনে বদলির (পাইলটিং) কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এ কথা জানান।
চলমান ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে আরও ৩০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করবে মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের হাতে আগামীর বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশ যাতে মেধা ও জ্ঞাননির্ভর হয়ে গড়ে ওঠে, সেজন্য সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। চলমান ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে আরও ৩০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করবে মন্ত্রণালয়।৭০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেবে এনটিআরসিএ
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুল ও কলেজের শূন্য পদের শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করছে এনটিআরসিএ। তালিকা সংগ্রহ শেষ হলেই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার জন্য চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে সংস্থাটি। এনটিআরসিএ এবার ৭০ হাজারের বেশি শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এর আগে দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় একসঙ্গে এত বেশি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, শূন্য পদগুলোর অনুমোদন ও গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চেষ্টা করছে এনটিআরসিএ। সূত্র বলছে, এবার আবেদন ফিও কমিয়ে আনা হচ্ছে। অনলাইন আবেদন পদ্ধতি সহজ করাসহ নানা সুবিধা পাবেন নতুন আবেদনকারীরা।
শূন্য পদের সংখ্যা অনেক প্রতিষ্ঠানই দিচ্ছে না। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০টি পদ খালি হলেও ৫-৬টির তথ্য দিচ্ছে। এর কারণ কী, তা আমাদের জানা নেই। যদি সবগুলো শূন্য পদ পাওয়া যায় তবে এই সংখ্যা লাখের কাছাকাছি চলে যাবে
এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান
তিনি বলেন, শূন্য পদের সংখ্যা অনেক প্রতিষ্ঠানই দিচ্ছে না। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০টি পদ খালি হলেও ৫-৬টির তথ্য দিচ্ছে। এর কারণ কী, তা আমাদের জানা নেই। যদি সবগুলো শূন্য পদ পাওয়া যায় তবে এই সংখ্যা লাখের কাছাকাছি চলে যাবে।
ওবায়দুর রহমান বলেন, আমরা ৬৯ হাজারের বেশি শূন্য পদের তথ্য পেয়েছি। এখনো আসল সংখ্যা পাইনি। ৭ সেপ্টেম্বরের পর এ তথ্য পাওয়া যাবে। এরপর মোট পদসংখ্যা সম্পর্কে বলা যাবে।
এনটিআরসিএ সচিব বলেন, আমরা অক্টোবরের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার চেষ্টা করছি। মাউশির কাছে তথ্য পাঠাব। এরপর দেখি তারা কত দ্রুত জবাব দেয়, এর ওপর নির্ভর করছে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ।
এবার একজন প্রার্থী সনদ পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। আগের নিয়মে এ জন্য তার খরচ হওয়ার কথা ছিল চার হাজার টাকা। কিন্তু এবার তা কমিয়ে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আবেদনের নিচে লেখা থাকবে—‘পছন্দের ৪০টি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পান, তাহলে যোগ দেবেন কি না, সেখানে প্রার্থী ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বাছাই করতে পারবেন
জানা গেছে, এনটিআরসিএর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন করার ক্ষেত্রে দুই দফায় টাকা নেওয়া হয়। আবেদনের শুরুতে ৩৫০ টাকা নেওয়া হয়। আরেকটি হচ্ছে পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে সনদ পাওয়ার পর পছন্দের প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সময়। আগে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের জন্য ১০০ টাকা করে ফি নেওয়া হতো। চাকরিপ্রার্থী যত ইচ্ছা, তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারতেন। কেউ ৫০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে তাকে দিতে হতো পাঁচ হাজার টাকা।
তবে এবার এনটিআরসিএ সনদ পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের নিয়মে কিছুটা বদলের সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ অনুযায়ী এবার একজন প্রার্থী সনদ পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। আগের নিয়মে এ জন্য তার খরচ হওয়ার কথা ছিল চার হাজার টাকা। কিন্তু এবার তা কমিয়ে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আবেদনের নিচে লেখা থাকবে—‘পছন্দের ৪০টি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পান, তাহলে যোগ দেবেন কি না, সেখানে প্রার্থী ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বাছাই করতে পারবেন।
২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ দেয় এনটিআরসিএ। সে অনুযায়ী এবার চতুর্থ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে তারা। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ মার্চ এনটিআরসিএ ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। এবার সর্বোচ্চ বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভয়েস/আআ