সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
ধর্ম ডেস্ক:
মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘কিং ফয়সাল প্রাইজ ২০২৩’ সালের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পুরস্কারের ৪৫তম পর্বে কিং ফয়সাল প্রাইজ বোর্ডের চেয়ারম্যান পবিত্র মক্কা নগরীর গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল পাঁচ বিভাগে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন।
সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ সূত্রে জানা যায়, এ বছর কিং ফয়সাল প্রাইজের পাঁচ বিভাগÑইসলামের সেবা, ইসলাম শিক্ষা, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, চিকিৎসা এবং বিজ্ঞানে মোট আটজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ইসলামের সেবা শাখায় আরব আমিরাতের শেখ নাসের বিন আবদুল্লাহ আল-জাবি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অধ্যাপক ড. চৈ ইয়ং কিল হামিদ মনোনীত হয়েছেন।
ইসলামি স্থাপত্য শাখায় মনোনীত হয়েছেন যুক্তরাজ্যের অধ্যাপক রবার্ট হিলেনব্র্যান্ড। উত্তর আফ্রিকা, মিসর, ফিলিস্তিন ও মধ্য এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত তার গবেষণা ইসলামি স্থাপত্যের মৌলিক রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আরবি ভাষা ও সাহিত্য শাখায় মরক্কোর অধ্যাপক আবদেল ফাত্তাহ কিলিতো মনোনীত হয়েছেন। ক্ল্যাসিক্যাল আরবি বর্ণনাকে পাঠকদের সামনে নতুন আঙ্গিকে নিয়ে আসতে দীর্ঘ গবেষণা করেন তিনি।
এ ছাড়া মহামারী ও ভ্যাকসিন উন্নয়নের ভূমিকা রাখায় চিকিৎসা শাখায় যৌথভাবে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক ড্যান হাং বারুচ এবং যুক্তরাজ্যের অধ্যাপক সারাহ ক্যাথরিন গিলবার্ট। রসায়ন বিজ্ঞানে যৌথভাবে মনোনীত হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক জ্যাকি ই রু ইং ও অধ্যাপক চাদ আলেকজান্ডার মিরকিন। এই বছর চিকিৎসা ও বিজ্ঞান বিভাগে দুজন নারী বিজ্ঞানী পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। কভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন তৈরিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
পুরস্কার হিসেবে এ বছর প্রত্যেক বিজয়ীকে দুই লাখ মার্কিন ডলার, ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণপদক ও আরবি ক্যালিগ্রাফিতে লেখা একটি প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়।
পুরস্কার বিজয়ীদের নাম প্রতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়। এর দুই মাসের মধ্যে সৌদি আরবের বাদশাহ কিংবা তার প্রতিনিধি রিয়াদের কিং ফয়সাল ফাউন্ডেশনের সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। যৌথভাবে পুরস্কার বিজয়ীদের ক্ষেত্রে পুরস্কারের অর্থ ভাগ করে দেওয়া হয়।
জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখা বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলিমদের সম্মাননা দিতে ১৯৭৭ সালে কিং ফয়সাল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৯ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বের নির্বাচিত গুণী ব্যক্তিত্বদের এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। প্রথম বছর শুধু ইসলামের সেবা, ইসলাম শিক্ষা ও আরবি সাহিত্য, এই তিনটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে চিকিৎসা ও বিজ্ঞানকে পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর বিশেষজ্ঞ কমিটি বিজয়ীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এখন পর্যন্ত ৪৩টি দেশের ২৭৫ জন এ সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ২১ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
ভয়েস /আআ