সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

যে মানুষ আল্লাহর প্রিয়

ধর্ম ডেস্ক:
মুমিন জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হলো, দয়াময় আল্লাহতায়ালাকে খুশি করা। আল্লাহকে পেয়ে গেলে জীবন সার্থক। আল্লাহকে পেতে হলে মানতে হবে তার বিধান। চলতে হবে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শের পথে। আল্লাহর বিধান আর নবীজির আদর্শ ছাড়া আল্লাহতায়ালার প্রিয় হওয়া সম্ভব নয়।

আল্লাহতায়ালা প্রতিটি মানুষকে মায়া করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ যেমন মানুষকে ভালোবেসে মায়া করে সৃষ্টি করেছেন; মানুষের উচিত আল্লাহকে ভালোবাসা। আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করা। তার পছন্দনীয় কাজ করা। তার ভালোবাসা অর্জন করা। প্রিয়পাত্র হওয়া। আল্লাহর প্রিয় হওয়া গেলেই জান্নাত অবধারিত। আল্লাহর কাছে প্রিয় হওয়ার কিছু আমল উল্লেখ করা হলো

মুমিন হওয়া : আল্লাহতায়ালা মুমিন-মুসলমানের জন্য জান্নাত তৈরি করেছেন। জান্নাতে যেতে হলে মুমিন হতে হবে। এক আল্লাহবিশ্বাসী হতে হবে। কোরআন-হাদিস মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে হবে। যারা মুমিন তাদের সঙ্গে আল্লাহর ভালোবাসা গভীর। তারা আল্লাহকে সবকিছুর চেয়ে বেশি ভালোবাসে। আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা মুমিন আল্লাহর সঙ্গে তাদের ভালোবাসা প্রগাঢ়।’সুরা বাকারা : ১৬৫

তওবা : মানুষ গোনাহ করে। আল্লাহর নাফরমানি করে। ভেতরে অনুশোচনা জাগলে তওবা করে। যারা গোনাহ করার পর তওবা করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। তাদের গোনাহ মাফ করে দেন। কিন্তু যারা গোনাহের পর তওবা করে না, আল্লাহ তাদের প্রতি রাগান্বিত হন। তাদের দূরে ঠেলে দেন। কোরআন মজিদে ঘোষণা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন।’সুরা বাকারা : ২২২

নবীজির অনুসরণ : নবী মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর সেরা মানুষ। তার অনুসরণ ও অনুকরণই মানুষের একমাত্র মুক্তির পথ। তার অনুসরণ ছাড়া কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। আর যারা তার অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। তারা আল্লাহর প্রিয়। আল্লাহ বলেন, ‘(হে রাসুল! আপনি) বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো; তবেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’সুরা আলে ইমরান : ৩১

পবিত্রতা অর্জন : ইবাদত গ্রহণযোগ্য হওয়ার পূর্বশর্ত হলো পবিত্রতা অর্জন। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) মানুষকে পবিত্রতার বিষয়ে অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে বলেছেন। আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের।’সুরা বাকারা : ২২২

ন্যায়বিচার : আপনার অবস্থান অনুযায়ী মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পৃথিবীর কোনো সৃষ্টির ব্যাপারেই অন্যায় বিচার করা যাবে না। গরিব-অসহায়কে অবহেলা আর অন্যায়ভাবে শাস্তি দিলে আল্লাহ নারাজ হন। যেভাবেই হোক যোগ্যতা ও সমর্থন অনুযায়ী সবার মধ্যেই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহ ন্যায় প্রতিষ্ঠাকারীকে ভালোবাসেন। ন্যায়বিচারকের প্রতি খুশি হন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা ন্যায়বিচার করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালোবাসেন।’সুরা হুজুরাত : ৯

আল্লাহর ওপর ভরসা : আল্লাহ কিছুর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক। আল্লাহ চান, তার নিয়ন্ত্রণাধীন বান্দারা তার ওপর নির্ভরশীল হোক। সবকিছুতে তার প্রতি মুখাপেক্ষী হোক। তার প্রতি নির্ভরশীল আর মুখাপেক্ষীতে রয়েছে বান্দার জন্য কল্যাণের বিশাল ভা-ার। তার প্রতি নির্ভরশীল হলে তিনি খুশি হন। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর তুমি কোনো সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ (তার ওপর) নির্ভরশীলদের ভালোবাসেন।’সুরা আলে ইমরান : ১৫৯

আল্লাহকে ভয় করা : দুনিয়া-আখেরাতে মুত্তাকিরাই সফলকাম। মুত্তাকিরাই আল্লাহর ভালোবাসা পায়। যে আল্লাহকে ভয় করে পৃথিবীর কোনো কিছুই তাকে ভিতু কিংবা বিচলিত করতে পারে না। তাকে পর্যুদস্ত করতে পারে না; বরং পৃথিবীর সবকিছু তাকে শ্রদ্ধা ও ভয় করে। তার সামনে মাথানত করে। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘অবশ্যই যে তার অঙ্গীকার পালন করে এবং সংযত হয়ে (আল্লাহকে ভয় করে) চলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকিদের ভালোবাসেন।’সুরা আলে ইমরান : ৭৬

ধৈর্যধারণ : আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা অসম্মানিত করেন। যাকে ইচ্ছা বিত্তশালী বানান, যাকে ইচ্ছা গরিব করেন। আল্লাহ মাঝেমধ্যে মানুষদের কষ্টের মধ্যে ফেলেন। দুঃখ ও অসুখ দেন। বান্দার ধৈর্য পরীক্ষা করেন। যারা বিপদে ধৈর্যধারণ করেন আল্লাহ তাদের কল্যাণ করেন। তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন। আর বিপদে পড়ে বান্দা আল্লাহকে স্মরণ করে। তাকে হৃদয় দিয়ে ডাকে ফলে সে আল্লাহর প্রিয় হয়, তার গোনাহ মাফ হয়।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বিপদ যত তীব্র হবে, প্রতিদানও তদনুরূপ বিরাট হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো জাতিকে ভালোবাসলে তাদের পরীক্ষা করেন। যে ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট থাকে তার জন্য আছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর যে তাতে অসন্তুষ্ট হয়, তার জন্য আছে অসন্তুষ্টি।ইবনে মাজাহ : ৪০৩১

সৎকর্মশীল হওয়া : অন্যায় মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। মানুষ ও সভ্যসমাজে অন্যায়কারী অপ্রিয় ও ঘৃণার পাত্র হয়ে ওঠে। সে যদি ক্ষমতাবান হয়, তার ক্ষমতার কাছে হয়তো কেউ তাকে কিছু বলে না; কিন্তু পেছনে ঠিকই তার মন্দাচার করে। তাই মানুষের উচিত, সভ্য হওয়া। সৎকর্মশীল হওয়া। আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করো এবং (ব্যয় না করে) নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ করো না। আর তোমরা সৎকর্ম করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’সুরা বাকারা : ১৯৫

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION