সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন
আবদুল আজিজ:
কক্সবাজার জেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনার পর প্রাণ ফিরেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। জেলা যুবলীগকে ঢেলে সাজানোর খবরে তৃলমুল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। একারণে কক্সবাজার জেলা যুবলীগের আগামী নেতৃত্বে কে আসছে এ নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়। শুধু যুবলীগের নেতাকর্মীরা নয়, আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষের মুখে মুখে কে হচ্ছে যুবলীগের আগামী কমিটির কর্ণধার। যোগ্য নেতৃত্বে কে আসছেন সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক পদে। এ নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। তবে সাধারণ নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ নেতৃত্ব।
কক্সবাজার যুবলীগ নেতাকর্মীদের অনেকেই জানিয়েছেন, বিলুপ্ত করা অতীতের কমিটিতে যারা অতিথিতে নেতৃত্ব দিয়েছিল তাদের নিয়ে সাধারণ নেতাকর্মীরা অসন্তুষ্ট। বিশেষ করে দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করে সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল নানা কারণে আলোচিত ও সমালোচিত। সম্প্রতি কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেলকে বহিষ্কার করে পুরো কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটি। ইতিমধ্যে যুবলীগ নেতাদের কাছ থেকে জীবন বৃত্তান্ত নেয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর আহবায়ক কমিটি বা একটি নতুন কমিটি ঘোষনায় চাঙ্গা হয়ে উঠে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা। অপেক্ষার প্রহর গুনছে কে হচ্ছেন জেলা যুবলীগের নতুন কমিটির আহবায়ক বা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের কয়েকজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বিলুপ্ত কক্সবাজার যুবলীগের অতিথিতের কমিটি নিয়ে খুব অসন্তুষ ছিল কেন্দ্রীয় কমিটি। তাই কমিটিকে ঢেলে সাজাতে এবার বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্বের প্রতিই হাইকমান্ড আস্থাশীল। আর নেতৃত্বের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত খুব শিগ্গরই।
দলীয় একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র বলছে, খুব দ্রুত কক্সবাজার জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি হচ্ছে। এজন্যই আগ্রহীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এতে আহবায়ক হিসেবে জিএম জাহিদ ইফতেখার, কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের সোয়েব ইফতেখার, ইফতেখার উদ্দিন পুতু এবং নাম শোনা যাচ্ছে লোকমুখে।
এদিকে, কক্সবাজার জেলা যুবলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীদের ভাষ্য, আগামী যুবলীগের নতুন কমিটির হাল ধরতে যাচ্ছেন প্রতিশ্রুতিশীল ও দলের ত্যাগী নেতা জাহিদ ইফতেখার। দলের জন্য ত্যাগের পাশাপাশি তার আছে দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে। তাছাড়া ছাত্রজীবনে জেলার নামকরা মেধাবী শিক্ষার্থীদের তালিকায় অন্যতম এই জাহিদ।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক পিতা ও বোর্ড স্ট্যান্ডধারী মাতার সহচার্যে গড়ে উঠা সুশিক্ষা, মানবিক, অসম্প্রদায়িক, উদার মানসিক ও প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার মূর্ত মানব। শিক্ষাজীবনের ১ম ধাপে মেধাতালিকায় ১৪তম কুমিল্লা বোর্ড স্ট্যান্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে শেষ ধাপে সাংবাদিকতা বিষয়ে যার প্রতিটি স্তরেই রেখেছেন প্রখর মেধার স্বাক্ষর। মেধাবী ছাত্র হিসেবে গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে দেশ মাতৃকার টানে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন রাজনীতির আদর্শে। নীতি আদর্শে অটল ও মনে প্রাণে স্বাধীনতার স্বপক্ষে শক্তিকে বুকে নিয়ে ছাত্রলীগে একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন বারংবার। পদপদবীর মোহে আবদ্ধ না থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ও মানবিক সেবায় জড়িয়ে পড়েন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কমিটির গ্রন্থ ও গবেষণা সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। ২০০৩ সালে তৎকালীন বিএনপি জোট সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ কর্তৃক শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৩টি মিথ্যা মামলা দারের করার পর এক বছর ফেরারী জীবন কাটাতে বাধ্য হন তিনি। এরপরও কিছুতেই নীতি আদর্শিক রাজনীতিতে হাল ছাড়েননি।
জিএম জাহেদ ইফতেখারকে নিয়ে আরও জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে ২০০১ইং হতে ২০০৫ইং পর্যন্ত কক্সবাজার শহর-আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে যুব রাজনীতির একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। ২০০৫ইং হতে ২০১৮ ইং পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা যুবলীগের ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ইং সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে ও কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মেধাবী ও দক্ষ নেতৃত্বের অধিকারী জি. এম জাহিদ ইফতিকার শুধু রাজনীতির মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি বহু সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনে জড়িত থেকে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার এর আজীবন সদস্য, কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্য নির্বাহী সদস্য, ব্ল্যাক ফাইটার কারাত ফেডারেশন কক্সবাজার এর সভাপতি, আবাহনী ক্রীড়াচক্র কক্সবাজার এর সভাপতি, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক কক্সবাজার এর সাবেক পরিচালক, সিমুনিয়া খেলাঘর আসরের সহ-সভাপতি, জেলা চিংড়ি খামার মালিক সমিতির কার্য নির্বাহী সদস্য, কক্সবাজার জেলা জ্বালানি তেল পরিবেশকের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ভারুয়াখালী আয়েশা সিদ্দিকা বালিকা মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ভারুয়াখালী বানিয়াপাড়া জামে মসজিদের সভাপতিসহ অসংখ্য সামাজিক কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন এই মেধাবী যুবলীগ নেতা। শুধু ইফতেখার জাহেদ নয় আলোচনায় রয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়, সোয়েব ইফতেখার, ইফতেখার উদ্দিন পুতুসহ অনেকের নাম। এখন সকলের কাছ থেকে জীবন বৃত্তান্ত নিচ্ছেন দলের হাই কমান্ড। পরে খুব দ্রুত আহবায়ক কমিটি বা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনা আসতে পারে।
ভয়েস/আআ