বশির আল মামুন:
বান্দরবনের লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর এ জান্নাত রুমী দাম্পত্য কলহের জের ধরে তার অধ্যাপক স্বামীকে তালাক প্রদান করেছেন। প্রথমে তিনি গত ২৪ জুন রাতে মৌখিক ভাবে তালাক দেন। পরে ৬ জুলাই ডাকযোগে রেজিস্টার্ড এডি সহকারে তালাকনামা পাঠান স্বামীর ঠিকানায়। এরপর নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নিজ কর্মস্থলের লামা থানায় গত মঙ্গলবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন। নিজের তালাক দেওয়া স্বামীর বিরুদ্ধে লামা থানায় এ জিডি দায়ের করেন তিনি। বর্তমানে এ ঘটনায় বান্দরবন সহ পুরো দেশ জুড়ে চলছে তুলপার।

ইউএনও নুর এ জান্নাত রুমী জিডিতে উল্লেখ করেন, সাংসারিক মনোমালিন্য এবং কর্মস্থলে অন্যায়ভাবে প্ররোচিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন পূর্বক হুমকি ধামকি প্রদর্শন করায় এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে গত ২৪ জুন রাতে আমার স্বামী এ টি এম ওমর ফারুককে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মৌখিকভাবে তালাক দেই। এতে সে ক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আমাকে হত্যা করবে অথবা নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। পরে ৬ জুলাই আমি তাকে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড এডি সহকারে তালাকনামা প্রদান করি। তালাকনামা পেয়ে ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সে আমার লামা উপজেলা সরকারি বাসভবনে এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে আমি প্রতিবাদ করলে সে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারতে আসে এসময় আমার চিৎকার শুনে ঘরের কাজের বুয়া সেখানে উপস্থিত হলে কোনো রকম প্রাণে বেঁচে আমার সন্তানকে নিয়ে অন্যরুমে চলে যাই।

জিডিতে আরও উল্লেখ করেন, পরে সে সময় সুযোগ বুঝে আমাকে মেরে পঙ্গু করবে নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসাবে এমন হুমকি দিয়ে চলে যায়। সে আমার সন্তান রাহিবকে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে লুকিয়ে রেখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা করবে বলেও হুমকি দেয়। তাই এ অবস্থায় আমার সন্তানকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যোগদান করা ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর এ জান্নাত রুমী ওনার স্বামীকে তালাক দেওয়ায় ওনাকে হুমকি দিয়েছেন। উনি নিরাপত্তা চেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছেন। আমরা তার নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’ ইউএনও নুর এ জান্নাত রুমীর স্বামী এটিএম ওমর ফারুকের বাড়ি কক্সবাজারের মহেষখালীতে। তিনি বান্দরবন কলেজে শিক্ষকতা করেন বলে জানাগেছে।

তাদের সংসারে ৩ বছরের একটি শিশু সন্তানও রয়েছে। মাত্র সাপ্তাহ খানেক আগেও ইউএনও দম্পতি ঘটা করে জন্মদিন পারন করেছেন।

এদিকে এ ঘটনায় অনেকে নিজেদের পেইজবুক পেজে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন। ’
তারা রিখেছেন শত শত, হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, শুভাকাঙ্কি চায় এর সমাধান। রুবেল-রুমি দাম্পত্য জীবনে পুনরায় শান্তি সহমর্মিতায় ফিরে আসুক এই দোয়া করি।

পুরুষ নির্যাতনের বিচার আমাদের দেশে প্রচলিত আইনে নাই তাইতো এমন ঘটনাদি ঘটে,আরও যদি হয় সে সরকারী কর্মকর্তা বিচারের তো প্রশ্ন ও হয়না,,।

আবুল মনসুর মোঃ মহসিন রিখেছেন হে আল্লাহ তুমি আমার ভাই প্রফেসর ওমর ফারুক রুবেল কে ধৈর্যধারণ করার তৌফিক দান করুন, আমিন। অন্য ধর্ম থেকে এনে, নিজের ধর্মে রূপান্তরিত করে, রাত দিন পরিশ্রম করে, নিজে পড়িয়ে বিসিএস এ পাশ করতে কি না করেছে? সহজ সরল স্বভাবের প্রিয় ভাইয়ের কপালে এই কি অপবাদ?এটি মানা খুবই কষ্ট কর।

অনেকে এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এখানে অন্য ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছি দ্রæত সত্যিটা উদঘাটন হবে।
একজন লিখেছেন বেশ, ভালো। আপনাদের সা¤প্রতিকটা জানা নেই। তবে চোখে দেখা অতীতটা ভালই জানি। আপনার মেধা বা চেষ্টা তো আছেই। তারপরও কি আপনার আজকের এ অবস্থান ওমর ফারুক মামার ত্যাগের ফসল নয়? জীবনের দীর্ঘ ব্যাপ্তিতে ধৈর্যের ফুরসত কি একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছিল? তদন্ত পূর্বক সত্য টা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাই।

ভয়েস/আআ