রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৯ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ভয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় আসতে বাধ্য হয়েছে ভেনিজুয়েলায় ক্ষমতাসীন সরকার। সেখানে আগামী বছর দ্বিতীয়ার্ধে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিষেধাজ্ঞার চাপ কমানোর জন্য সরকার ও বিরোধী দল এমন চুক্তি করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাব্য পথ বেরিয়ে আসতে পারে। তবে দুই দলের মধ্যে চুক্তি হলেও সেখানে সরকারি পদে বিরোধী দলের প্রার্থীদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি আভ্যন্তরীণভাবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন দুই দলের মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ ছিল। তা নতুন করে শুরু হওয়ার পর চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে কিছু শর্ত প্রকাশ হয়েছে। সেমতে, এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। এর মধ্যে আছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ। বিভিন্ন সূত্র বলেছেন, মঙ্গলবার এই ঘোষণা দেয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যদি বিরোধীদের জন্য পর্যাপ্ত ছাড় দেন বলে সন্তুষ্ট হয় ওয়াশিংটন, তাহলে ওপেক সদস্য ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে তেল সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বলেছে, মাদুরোর পক্ষ থেকে যদি গণতন্ত্রের বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হয় তার বিনিময়ে তাদের বিরুদ্ধে দেয়া দীর্ঘদিনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কিছুটা প্রত্যাহার করা হবে।
বার্বাডোজে চূড়ান্ত হওয়া ওই চুক্তির বিস্তারিত স্টাডি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি যে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কত দ্রুত ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র অথবা তারা এ বিষয়ে কতটা অগ্রসর হবে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও কানাডা যৌথ এক বিবৃতিতে বলেছে, বার্বাডোজে ভেনিজুয়েলার রাজনৈতিক চুক্তিকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা ভেনিজুয়েলায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় একে প্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ বলে আখ্যায়িত করে। বিবৃতিতে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। মঙ্গলবার সম্পাদিত চুক্তিতে এসব ইস্যু আসেনি।
গত সপ্তাহে রয়টার্স রিপোর্ট করে যে, একটি চুক্তি নিয়ে নিজস্ব আলোচনায় অগ্রগতি করেছে ভেনিজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্র। এতে বলা হয় প্রেসিডেন্ট মাদুরো যদি বিরোধীদের সঙ্গে সমঝোতা শুরু করেন তাহলে বাড়তি একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ভেনিজুয়েলার অশোধিত তেল নিতে অনুমতি দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো যদি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি উল্টে যেতে পারে। আর্থিক সঙ্কটে থাকা ভেনিজুয়েলার রাজস্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তেল।
নরওয়ের মধ্যস্থতায় গত মঙ্গলবার বার্বাডোজে আলোচনায় বসে বিরোধী দল ও সরকারি দল। ১১ মাসের মধ্যে দুপক্ষের এটাই প্রথম বৈঠক। দেশটি দীর্ঘদিন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যে সঙ্কটের মুখে আছে, তা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজতে এই বৈঠক। তা অব্যাহত থাকবে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এতে অংশগ্রহণকারী দলগুলো ভোটের ফলের প্রতি সম্মান দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, দেশের আইনের অধীনে ২০২৪ সালের প্রার্থী বাছাই করতে হবে প্রতিটি পক্ষকে। তবে বিরোধী দল থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে না। এর মধ্যে আছেন ফ্রন্টরানার মারিয়া কোরিনা মাচাদো। বিরোধীরা বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন কন্ট্রোলার জেনারেল। এটা বেআইনি। তবে ওয়াশিংটন বিরোধী প্রার্থীদের সামনে কোনো বাধা থাকাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভয়েস/জেইউ।