রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

আধাআধি ডিজিটাল পথে স্মার্ট যাত্রা

জাকির হোসেন:
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প ঘোষণা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল প্রযুক্তি ব্যবহার, দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য মোচনের ব্যবস্থা করা। টানা ক্ষমতায় থেকে ১৫ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে অনেক কাজ হয়েছে। সরকারি সেবা কম্পিউটারভিত্তিক হয়েছে, আর্থিক লেনদেন এখন খুবই সহজ, ইন্টারনেট ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। সার্বিকভাবে মানুষের জীবনযাত্রাও আগের চেয়ে সহজ ও প্রযুক্তিনির্ভর হয়েছে। সরকার এখন স্মার্ট বাংলাদেশ নামে নতুন একটি রূপকল্পের কথা সামনে এনেছে। যদিও ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে সরকার যেসব সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের কথা বলেছিল, তা অনেকাংশই পূরণ হয়নি। বলা যায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় সবকিছু টাচ করা গেছে। যাকে বলে আধা ডিজিটাল হয়েছে বাংলাদেশ। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জনে শতভাগ সফলতা দাবি করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ডিজিটালাইজেশনের জন্য অন্যতম প্রধান উপাদান ইন্টারনেট। আমাদের দেশের ইন্টারনেট-প্রাপ্তি, খরচ এবং উপযোগিতার অবস্থা খুবই নাজুক। দুর্নীতি কমানো, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রেও অগ্রগতি কম।

ডিজিটাল সেবার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী ও সমপর্যায়ের অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। যেমন ইন্টারনেটের গতি বাংলাদেশে কম। বিশ্বের ১৪৩ দেশের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম। আর ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতিতে ১৮২ দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৬তম। কোনো দেশে মোবাইল ও ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি নির্ধারণে ‘স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স’ নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান গত ৩০ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

মোবাইল নেটওয়ার্কের মান, কার্যক্ষমতা, ব্যবহারযোগ্যতা নির্ণয় ও বিশ্লেষণের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছরের জুলাইয়ে মোবাইল ইন্টারনেটে বাংলাদেশের গড় ডাউনলোড স্পিড ছিল প্রতি সেকেন্ডে ১৭ দশমিক ১৮ মেগাবিটস (এমবিপিএস)। গড় আপলোড স্পিড ছিল ৮ দশমিক ৯৯ এমবিপিএস। পাশাপাশি একই মাসে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে গড় ডাউনলোড স্পিড ছিল ৩৭ দশমিক ৯২ এমবিপিএস আর আপলোড স্পিড ছিল ৩৯ দশমিক ২১ এমবিপিএস।

ডিজিটাল সেবা নিতে যে স্মার্টফোন দরকার, সেই স্মার্টফোন ব্যবহারের হার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে অনেক কম। যদিও গত বছরের জুলাই মাসে সরকারের এক মন্ত্রী জানিয়েছিলেন দেশের ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। আর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৯৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ। তবে গ্লোবাল ডেটা রেফারেন্স লাইব্রেরি-ডেটা রিপোর্টালের ২০২৩ সালের গ্লোবাল ডিজিটাল ওভারভিউ রিপোর্টে, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ১০ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০ কোটি ৫১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ (মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬১.১ শতাংশ) ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগহীন জনসংখ্যার দিক থেকে চতুর্থ বৃহৎ জনগোষ্ঠী রয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশিরা ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রায় ৬ দশমিক ৯ গুণ বেশি অর্থ খরচ করছে। ডিজিটালের ক্ষেত্রে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান বোঝা যায় বিভিন্ন সূচকে। সে রকম একটি সূচক হলো জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (ইজিডিআই)। প্রতি দুই বছর পরপর এই প্রতিবেদনে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোয় অনলাইনে সেবার হার, টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো ও দক্ষ মানবসম্পদের চিত্রটি তুলে ধরা হয়। ২০২২ সালের এই সূচকে দেখা যায়, পাকিস্তান, নেপাল ও ভিয়েতনামের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। পিছিয়ে আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে। ১৯৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১১তম।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নেটওয়ার্ক রেডিনেস ইনডেক্সে (এনআরআই) ১৩১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনাম। পিছিয়ে পাকিস্তান ও নেপাল। সূচকটিতে বাংলাদেশের সবল দিক হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার, সাশ্রয়ী মূল্য, টেলিযোগাযোগ সেবায় বিনিয়োগ, ডিজিটাল লেনদেনে শহর ও গ্রামের বৈষম্য কমিয়ে আনা ইত্যাদিকে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের দুর্বল দিক হিসেবে বলা হয়েছে ই-কমার্স নীতি, ইন্টারনেট ব্যবহারে লিঙ্গভিত্তিক ব্যবধান ও নিয়ন্ত্রণের মানকে। ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান কেবলডটইউকের হিসাবে মোবাইল ইন্টারনেটের দামে ২৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। অর্থাৎ এ দেশে ইন্টারনেটের দাম কম। তবে বাংলাদেশের চেয়েও মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কম ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে। ইন্টারনেটের গতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা প্রতিষ্ঠান ওকলার গত অক্টোবরের তথ্যানুযায়ী, ১৪১টি দেশের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৬তম। বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহকই বেশি, ১১ কোটির মতো। যদিও গতিতে দক্ষিণ এশিয়ার সব কটি দেশের পেছনে বাংলাদেশ।

২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নীতিমালায় করা হয়, যা সর্বশেষ ২০১৮ সালের হালনাগাদ করা হয়। সেখানে ৩৩৩টির মতো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, ২০২১ সালের মধ্যে যেকোনো স্থান থেকে সহজে, স্বচ্ছভাবে, কম খরচে ও কম সময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে সব সরকারি সেবা পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সরকারি সেবা কম্পিউটারভিত্তিক হয়েছে, ডিজিটাল হয়নি। যেমন জন্মনিবন্ধনের ফরম এখন অনলাইনে পাওয়া যায়। কিন্তু সেটি প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে মানুষকে অন্তত তিনবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। পাসপোর্ট ফরম অনলাইনে পূরণ করেও ছবি তোলা ও ফিংগার প্রিন্টের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হয়। সরকারি সেবা খাতগুলো পানি বিদ্যুৎ গ্যাস বিল অনলাইনে পরিশাধের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু আবার ম্যানুয়াল ব্যবস্থাও চালু আছে। ভূমির খাজনা অনলাইনে পরিশোধ করা যায়, তবে অনেক কাজ এখনো করতে হয় ভূমি অফিসে গিয়ে। অনেক সময় আশ্রয় নিতে হয় দালালের। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ব্যবসা সহজ করতে এক দরজায় সেবা বা ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার (ওএসএস) চালু করেছে। যদিও তা খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না।

যদি রূপকল্পে প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ ইউনিয়ন পর্যন্ত ডিজিটাল কানেক্টিভিটি স্থাপন, ডিজিটাল সেন্টার (তথ্য সেবা কেন্দ্র) স্থাপন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন এবং বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন, কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক স্থাপন এবং ফোর টিয়ার ডাটা সেন্টার স্থাপন, যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন, সরকারি অফিসগুলোতে ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম স্থাপন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইটি পার্ক নির্মাণ, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ, আইসিটি টাওয়ারে সাইবার সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার স্থাপন হয়েছে। কিন্তু এগুলো কোথায় কতটুকু কার্যকর আছ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। যেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের ঘোষণা আছে। এজন্য স্কুলগুলোতে কম্পিউটার পৌঁছানো হয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালর এসএসসি পাস করা অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তাদের স্কুলে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তারা জানেই না সরকার তাদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য বিদ্যালয়ে ল্যাব স্থাপন করেছে।

কাগজে কলমে বাধ্যতামূলক, বাস্তবে আইসিটি শেখানোর শিক্ষকই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ৯০ শতাংশ ল্যাবের করুণ অবস্থা, নষ্ট হয়ে পড়ে আছে ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ। ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর দেওয়া হচ্ছে অনুমানের ওপর ভিত্তি করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ‘সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৫টি ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবসহ হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা বা তদূর্ধ্ব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ হাজার ১টি ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ তৈরি করা হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা মুখস্থ করেই আইসিটি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আর ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর নির্ভর করে শিক্ষকের মর্জির ওপর।

ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্জন যতটুকু হয়েছে তার ওপর ভিত্তি তরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কথা বলেছেন। বলেছেন স্মার্ট সিটির কার্যক্রম শুরু হবে নারায়ণগঞ্জ থেকে। দেশের প্রথম স্মার্ট সিটি হবে নারায়ণগঞ্জ। এই স্মার্ট সিটি আসলে কী? স্মার্ট সিটি বলতে এমন এক নগরায়ণকে বুঝায় যেখানে ন্যূনতম পরিবেশগত প্রভাব নিশ্চিত করে কোনো একটি শহরের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি নাগরিকদের জন্য উন্নততর জনবান্ধব সেবা প্রদানে আধুনিক প্রযুক্তিগুলোকে কাজে লাগানো হবে।

স্মার্ট শহরগুলোর মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। এর মধ্যে আছে স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, শাসনব্যবস্থা, পরিবহনব্যবস্থা, নিরাপত্তার জন্য আরও ভালো নজরদারি, স্মার্ট অবকাঠামো, আর ভালো কাজের সুযোগ এবং আরামদায়ক জীবনের জন্য অন্যান্য সমস্ত সুবিধা ও সুযোগ। এই বৈশিষ্টগুলো অন্যান্য শহর থেকে স্মার্ট শহরগুলোকে আলাদা করে। শহরগুলোর অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য তাদের অবকাঠামো উন্নত করতে অন্যান্য শহরগুলোকে অনুপ্রাণিত করার জন্য স্মার্ট শহরগুলো তৈরি করা দরকার। ইন্টারনেট অব থিংস, জননিরাপত্তা, স্মার্ট গতিশীলতা, বর্ধিত পর্যটক, সামাজিক অবকাঠামো এবং ভৌত অবকাঠামো একটি শহরকে একটি স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরিত করে। বিশ্বের নেতৃস্থানীয় শহরগুলোর রোডম্যাপ থেকে প্রাপ্ত অন্তর্দৃষ্টিগুলো চারটি স্তম্ভে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এই স্তম্ভগুলোর মধ্যে রয়েছে ১) একটি আইওটি-সক্ষম অবকাঠামো যা ডিভাইস এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। ২) স্মার্ট সিটিগুলোর জন্য কার্যকর গতিশীলতা অর্জনে বুদ্ধিমান পরিবহন ব্যবস্থা, ভাগ করা গতিশীলতা পরিষেবা এবং আরও সহায়তা। ৩) সাইবার স্থিতিস্থাপকতা দক্ষতা এবং ডেটা গোপনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা। ৪) স্মার্ট সিটির উদ্যোগে সম্প্রদায়কে জাগ্রত করা।

২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে সৃজনশীল জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল অর্থনীতির প্রাথমিক বিকাশ ঘটাতে কাজ করতে হবে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রম-পাঠদানসহ পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করতে হবে। কারণ স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করতে হবে আগে। ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি করে বিদেশে পাঠাতে পারলে প্রচুর ফরেন কারেন্সিও পাওয়া যাবে। অন্যদিকে স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট ইকোনমিতে রূপান্তরের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে নীতিনির্ধারণে ও পরিকল্পনায় যেতে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। সর্বোপরি ডিজিটাল নিরাপত্তাকে সর্বোত্তম গুরুত্ব দিয়ে তার নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করতে হবে।

করোনা মহামারীর সময় করোনার টিকা প্রদান, অনলাইনভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা, ই-কমার্সের বিকাশ ঘটেছে। যদিও সঠিক নীতিমালা না থাকায় অনেক গ্রাহক প্রতারিত হচ্ছেন। ব্যাংকিং খাত ডিজিটাল হয়েছে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় এসেছে দেশের অধিকাংশ মানুষ। বিশে^র সঙ্গে তাল মেলাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের বিকল্প নেই। তবে সরকারের ভাবনার সঙ্গে বাস্তবতার সমন্বয় ঘটাতে না পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে।

লেখক: সাংবাদিক

zakpol74@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION