রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মিথ্যার ভয়াবহ পরিণতি

শামসুল আরেফীন:
সত্য সর্বদা জয়ী হয়। মিথ্যা ধ্বংস ডেকে আনে। একটি সমাজ ও দেশ তখনই উন্নতির শীর্ষে পৌঁছতে পারে যখন সে দেশের মানুষ মিথ্যা ছেড়ে সত্যকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। আজকাল মানুষ মিথ্যাকে সত্যের মতো বলে বেড়ায়। অথচ আমরা ভুলেই গিয়েছি মিথ্যা বলা কবিরা গুনাহ।

মিথ্যা বলার অভ্যাস মানুষকে দুনিয়ায় কলঙ্কিত করে এবং আখেরাতে ডেকে আনে ভয়াবহ পরিণাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা মিথ্যাচার থেকে বেঁচে থাকো। মিথ্যা পাপাচারের পথ দেখায়। আর পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। যে ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং মিথ্যা বলতে সচেষ্ট থাকে, আল্লাহর দরবারে তাকে বড় মিথ্যুক বলে লেখা হয়।’ (সহিহ বুখারি ৫৭৪৩)

য কোনো কাজের ক্ষেত্রে মিথ্যা বললে সে কাজের বরকত নষ্ট হয়ে যায়। পরোক্ষভাবেও কোনো বরকত তাতে অবশিষ্ট থাকে না। অনেক ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা অর্জনের লোভে ভেজাল পণ্যকে খাঁটি পণ্য বলে চালিয়ে দেয়। এমন লোকদের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ে মিথ্যা কসম করা থেকে বিরত থাকো। কেননা এর কারণে পণ্য বেশি বিক্রি হলেও বরকত কমে যায়।’ (সহিহ মুসলিম ১৫৬০)

মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া খুবই জঘন্য অপরাধ। মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা মূলত চারটি বড় গুনাহে লিপ্ত হয়। প্রথমত, সে মিথ্যা ও মনগড়া কথা বলে। দ্বিতীয়ত, সে যার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় তার ওপর জুলুম করে। তৃতীয়ত, সে যার পক্ষে সাক্ষ্য দেয় তার জন্য হারাম কর্মের ব্যবস্থা করে দেয়, ফলে তার জন্য জাহান্নাম অবশ্যম্ভাবী হয়ে যায়। চতুর্থত, সে মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে একজনের সম্পদ বা হকের ওপর অন্যের হস্তক্ষেপ বৈধ বানিয়ে দেয়। অতএব মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হারাম ও কবিরা গুনাহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবগত করব না? তা হলো আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, পিতামাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা।’ (সহিহ বুখারি ৬৪৬০)

আজকাল মানুষের কাজ-কর্মে মিল পাওয়া খুবই কঠিন একটি ব্যাপার। মানুষ মুখে বলে এক কথা আর কাজে গিয়ে অন্য আরেকটি জিনিসের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। কাজ আর কথা দুই রকম হয়ে যায়। হাদিসের ভাষায় এমন কাজকে মুনাফেকি বলে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফেকদের নিদর্শন তিনটি। তথা: কথা বলার সময় মিথ্যা বলা, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা এবং আমানতের খেয়ানত করা।’ (সহিহ বুখারি ২৬৮২)

ইসলামে শরিয়ত সমর্থিত কৌতুক, আনন্দ ও বিনোদনকে বৈধ করা হয়েছে। তাই বলে মিথ্যা বলা বৈধ করা হয়নি। আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজে হাস্য-রসিকতা করতেন কিন্তু মিথ্যা পরিহার করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস।’ (তিরমিজি ২৩১৫)

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION