বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

উখিয়ায় ককটেল মৌলভীর সাম্রাজ্যে বনবিভাগের থাবা, বনের জমি উদ্ধার

সাজন বড়ুয়া সাজু:

কক্সবাজারের উখিয়ায় অবৈধভাবে গরুর খামার, সুপারি বাগান ও ফলজ বাগানের নামে দখল করে রাখা বিপুল পরিমাণ বনের জমি উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানীতে এ অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আল আমিন। তিনি বলেন, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলমের নির্দেশে উখিয়া উপজেলায় এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখলে রাখা ৫ একর বনভূমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।

ফরেস্ট রেঞ্জার মো. ফিরোজ আল আমিন আরও বলেন, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন সময় গত ১৫ বছর ধরে উপকূলীয় জালিয়াপালং এলাকায় বিস্তৃত বনভূমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বাণিজ্যিক আকারে নানান কিছু গড়ে তুলেছেন নুরুল হক আনসারী ওরফে ককটেল মৌলভী নামের এক ব্যক্তি। ওই জমি বনবিভাগের হলেও জমিদারিত্ব ছিল তার। তিনি সরকারি জমি দখলে নিয়ে পাহাড় কেটে গড়ে তুলেছে গরুর খামার, সুপারি বাগানসহ নানান ধরণের গাছের বাগান। তার দখলে থাকা সরকারের বিশাল এই জমি দখল উচ্ছেদ করে বনায়ন করার দাবি তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। অবশেষে বৃহস্পতিবার বনবিভাগের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এই জমি দখলমুক্ত করা হলো।

স্থানীয়দের সূত্র মতে, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ইনানী রেঞ্জের ইনানী বড় খাল কড়ই বাগানের পূর্ব পাশে বিস্তৃত বনভূমি দখলে নিয়ে পাহাড় কেটে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন আওয়ামীলীগের প্রভাব দেখানো ওই এলাকার নুরুল হক আনসারী ওরফে ককটেল মৌলভী। অভিযোগ রয়েছে, স্বৈরাচারী সরকারের আমলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের ছত্রছায়া ও প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে এই সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বনবিভাগের সূত্র মতে, নুরুল হক আনসারী ওরফে ককটেল মৌলভী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গত ১৫ বছরে প্রায় ১০ একর বনভূমি দখলে নেয়। অবৈধভাবে দখলকৃত বনভূমিতে বাণিজ্যিক আকারে গড়ে তুলেছে পশুপাখির খামার, বিভিন্ন গাছগাছালী ও সুপারি বাগান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুরুল হক আনসারী ওরফে ককটেল মৌলভী এলাকা সরকারি জমি জবর দখলের পাশাপাশি নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা ছাড়াও বিএনপি নেতা জাগির হোসেন হত্যার মামলার আসামি।
গতকাল সন্ধ্যায় এব্যাপারে অভিযুক্ত নুরুল হক আনসারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অবৈধভাবে দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি রেজিস্ট্রার্ড ভিলিজার। সরকারের অনুমতি নিয়ে বনভূমির জায়গায় ভোগ দখলে আছি। ১৯৭৭ সালে ভিলিজারি হিসেবে বিনা বেতনে সরকার জায়গাটিতে থাকার জন্য আমাকে দিয়েছে। আমার ব্যাপারে তোলা অভিযোগ মিথ্যা।
তার প্রসঙ্গে জানতে উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শামীম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নুরুল হক আনসারী ওরফে ককটেল মৌলভীর ব্যাপারে ইতিমধ্যে নানা অভিযোগ শুনেছি। তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই অভিযানে আরো নেতৃত্ব দেন ইনানী বিট কর্মকর্তা মো. তোসাদ্দেক হোসেন, জালিয়াপালং বিট কর্মকর্তা মো. সোহেল হোসেন, ছোয়ানখালী বিট কর্মকর্তা মো. আল আমিন, ফরেস্টার মো. রোকনুজ্জামানসহ, স্টাফ ও সিপিজি সদস্যরা।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সারওয়ার আলম বলেন, ইতিমধ্যে জেলাজুড়ে দখলবাজদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর সূত্র মতে, সব দখলবাজের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ, মামলা করা হবে। তিনি বলেন, শুধু ইনানী এলাকায় নয়, গত ১৫ বছর অদৃশ্য ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যেইসব এলাকায় বনভূমি দখল করে ঘরবাড়ি ও বাণিজ্যিক আকারে স্থাপনা গড়ে তুলা হয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে উদ্ধার করা হবে।

অপরদিকে, ‘মৌলনা নুরুল হক আনছারি ওরফে ককটেল মলই জানান, ‘বনবিভাগের জমি ঠিক আছে, তবে এই জমিগুলোতে গাছের চারা রোপনের জন্য বনবিভাগের প্রত্যায়ন রয়েছে। এখন নির্বিচারে আমার গাছগুলো কাটা হলো, পরে নিশ্চিয় আবার রোপন করবো। সমস্যা নেই। তবে একশ্রেণীর সুবিধাভোগী মানুষ আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে।’

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION