মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

খুরুশকুলে জমজমাট জুয়ার আসর, বিপথগামী যুব সমাজ

এম এ সাত্তার, বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর।

দীর্ঘদিন যাবত এই “ডাব্বা”(জুয়া) খেলার কারণে এলাকায় ছিনতাই, চুরি ও মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন রাত সমানতালে চলছে এই জুয়ার আসর ও আড্ডা। কিন্তু রহস্যজনকভাবে নিরব রয়েছে থানাপুলিশ।

সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা উঠতি বয়সী যুবক থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন জুয়ার আড্ডায়। এই জুয়ার আড্ডায় স্কুল পড়ুয়া কিশোররাও আসেন। ওখানে জুয়া খেলার পাশাপাশি চলে রাতভর মাদকসেবন। এসব পেশাদার জুয়াড়িদের মাধ্যমে নানাভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছে এলাকার মানুষ। এ সমস্ত অনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অনাগত ভবিষ্যৎ। বিভিন্ন স্থানে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও জড়িয়ে পড়ছেন জুয়া ও মাদকের দুনিয়ায়। জুয়া ও মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে মা-বাবাকে নির্যাতন ও চুরি করছে । তাদের উৎপাতে বাড়ির আঙ্গিনায় ফলানো শাক-সবজি পর্যন্ত রাখতে পারছেন না স্থানীয় মানুষ। অনেকে প্রতিবাদ করেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবা কাটা ঢালার মেইন রোড লাগোয়া জয়নাল বাবুর্চির ঘরের দক্ষিণে একটি পাহাড়ের ঢালুজমিতে বেড়া বিহীন উপরে ছাউনী বিশিষ্ট একটি ঘরে জুয়া খেলছে তিনশো’র অধিক জুয়াড়ি। ওখানে দেখা গেছে, খেলোয়ারের চাইতে পাহাড়াদারের সংখ্যা বেশি। মেইন রোড থেকে জুয়ার আসর পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা বলয়। রাস্তার কিছুদূর পরপরই সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। অপরিচিত হওয়ার কারণে জূয়াখেলার স্থানে পৌছাতে কয়েক বার তাদের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। দেখা গেছে ওই এলাকায় চতুর্মুখী নিরাপত্তা বলয়ে দিন রাত চলছে এই জুয়া (ডাব্বা) খেলা। এই আসরে প্রতিদিন ২০-৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয় বলে জানায় আয়োজকদের একজন। সে জানিয়েছেন প্রশাসন সহ অন্যান্যদের ম্যানেজ করে এ খেলা চালাতে হয়। তবে প্রতিমাসে এরপিছনে একটি মোটা অংকের টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে তাদের। কোন মাসে তাদের ৩/৪ লাখ টাকা ঘাটটি থাকে। তবে দু-তিন মাসের গড়হিসেব করলে কিছু টাকা লাভ থাকে বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউপি’র হামজার ডেইল ঢাকবা কাটা নামক এলাকায় প্রতিদিন জুয়ার আসর (৬/ছয়গুটি খেলা) চলছে। তারা বলেন, সাপ্তাহ ২/১ পরপর পুলিশের একটি দল ঢাকবা কাটা ঢালা বা তার আশপাশে রাস্তার সাইটে গাড়ি পার্কিং করে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে। তবে কেন? কি উদ্দেশ্যে পুলিশ ওখানে অবস্থান থাকেন তার কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেননি তারা। স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, জুয়াড়িদের সাথে পুলিশের রয়েছে সখ্যতা। ওখানে পুলিশ জুয়াড়ি এক সাথে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিতেও দেখছেন তারা। অন্যকিছু নয়, নগদএ মাসোহারা নিতে ওখানে আসেন পুলিশ।

খুরুশকুল হামজার ডেইল গ্রামের জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের গ্রামের প্রকল্প এলাকার দক্ষিণে ঢাকবাকাটা ঢালার পিচ রোড লাগোয়া জমির উদ্দিন বাবুর্চির বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে চলছে জুয়ার আসর। দিনদিনই জুয়াড়িদের সমাগম বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরপর ভিড় এড়াতে জমির বাবুর্চির বাড়ি থেকে (দক্ষিণে) খেলাটি একটি পাহাড়ের তলীতে খেলাটি স্থানান্তরিত করা হয়েছে দীর্ঘ ৮/১০ মাস আগে থেকেই। ওখানে এলাকার সচেতন দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের অগোচরে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে নিত্যদিন জুয়া খেলার রমরমা আসর জমে।এই জুয়ার আসরে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়াচুরি হয়। যেটা সমাজে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ার দরুন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বিপদজনক ও হুমকি স্বরুপ বলে জানিয়ে তিনি এই সকল জুয়াচোরদের কঠোর হস্তে দমন করার লক্ষ্যে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এর সুদৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জমির উদ্দিন বাবুর্চি বলেন, আমি জুয়ার সাথে জড়িত নয়, খেলা চালছে আমার বাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থানে। তবে জুয়াড়িরা আমার বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া আশা করছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহমেদ পেয়ার বলেন, জুয়াড়ি ধরতে পুলিশ প্রশাসন সব সময় অভিযান চালাচ্ছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ভয়েস / জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION