বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস প্রতিবেদক, টেকনাফ:
জোয়ারের পানিবৃদ্ধি, নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড় হলেই সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেন্টমার্টিনে দ্বীপের রিসোর্ট, বসতবাড়ি ও চাষাবাদের জমি। এমন পরিস্থিতিতে চারপাশে বেড়িবাঁধ অথবা জিও ব্যাগ ফেলা না গেলে ধীরে ধীরে দ্বীপটি বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে পূর্ণিমায় জোয়ারের পানি বাড়লে, সৃষ্ট কোনো ঘূর্ণিঝড়, গভীর নিম্নচাপ বা জলোচ্ছ্বাস হলে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে তীব্র ঢেউ সৃষ্টি হয়। এতে পানির ধাক্কায় দ্বীপের বাড়ি-ঘর, গাছপালা, কৃষিজমি ও রিসোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক সপ্তাহ আগেও সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের ধাক্কায় ১১টি রিসোর্ট ও ২০টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া লবণ পানি ঢুকে চাষাবাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আব্দুল কুদ্দুস নামে এক কৃষক বলেন, ঝড়-বৃষ্টি বা সাগরে হালকা কোনো নিম্নচাপ হলেই জমিতে পানি ঢুকে পড়ে। সাগরের লবণ পানিতে চাষাবাদ নষ্ট হয়ে যায়। গত কয়েকদিনে আমার জমিতে জোয়ারের পানি ঢুকে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
সেন্টমার্টিন পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা রশিদ মাঝি বলেন, সাগরের পানি বেড়ে ঢেউয়ের ধাক্কায় আমার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষাকালে বা ঘূর্ণিঝড় হলে প্রতি বছর এভাবে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ছি।
সেন্টমার্টিন ড্রিমার্স প্রাডাইস রিসোর্টের ম্যানেজার রাকিব হাসান বলেন, সাগরের তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় ড্রিমার্স প্রাডাইস অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবারের মতো তীব্র পানির ঢেউ কখনো দেখা যায়নি। রিসোর্টের সঙ্গে থাকা ইটের প্রাচীর পর্যন্ত ভেঙে গেছে। দেখা যাচ্ছে আগের তুলনায় এখন সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজুল ইসলাম বলেন, দ্বীপের চারপাশে উঁচু করে বেড়িবাঁধ অথবা জিও ব্যাগ দেওয়া না গেলে বা দ্বীপ রক্ষায় কোনো বড় পরিকল্পনা না করা হলে সেন্টমার্টিন ধীরে ধীরে সাগরে বিলীন হয়ে যাবে। গত এক সপ্তাহে জোয়ারের পানি বেড়ে ঢেউয়ের ধাক্কায় ১১টি রিসোর্ট ও ২০টি বসতঘর এবং চাষাবাদের জমিতে লবণাক্ত পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টি হলে দ্বীপের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। দ্রুত পানি সরে যাওয়ারও ব্যবস্থা নেই। আমরা সবার কাছে বার বার বলছি দ্বীপটি রক্ষা করতে হলে চারপাশে বেড়িবাঁধ বা জিও ব্যাগ দেওয়া দরকার।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিনে বেড়িবাঁধ বা জিও ব্যাগ দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই বা পরিকল্পনা নেই৷ তবে সম্প্রতি সেন্টমার্টিনে সাগরের জোয়ারের পানির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জোয়ারের পানির ধাক্কায় সেন্টমার্টিনে যেসব স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো পরিদর্শন করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভয়েস/আআ