বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন
ভয়েস প্রতিবেদক:
নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নাগরিক অধিকার নিয়ে স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরতে বিশ্ববাসীকে পাশে চেয়েছেন রোহিঙ্গারা।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে একযোগে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে সমাবেশে তারা এ আহ্বান জানান।
উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে সকাল থেকেই পালিত হয় নানা কর্মসূচি। বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষেরা জড়ো হন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশটি হয়েছে উখিয়া উপজেলার ৪ নম্বর বর্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বালুর মাঠে।
মাথায় নানা দাবি–সংবলিত ফিতা ও হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমাবেশে জড়ো হন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। কিছুক্ষণ পরপর মিছিল করে সমাবেশে নানা বয়সী মানুষকে জড়ো হতে দেখা যায়। সমাবেশে অনেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়া নিজেদের স্বজনদের ছবিও নিয়ে আসেন। প্ল্যাকার্ডগুলোতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধানের বিচার দাবি করা হয়। সমাবেশে রাখাইনে নিহত রোহিঙ্গাদের স্মরণে মোনাজাত করা হয়।
পাশাপাশি স্লোগান তুলে দাবি জানান— নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নাগরিক অধিকার নিয়ে স্বদেশ মিয়ানমারে তাদের প্রত্যাবাসন করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের ভাষ্য, আট বছর পেরিয়ে গেলেও একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার। উল্টো প্রত্যাবাসন পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ এখন সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। গত এক বছরে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। এদিকে আন্তর্জাতিক সহায়তাও কমছে দিন দিন। ফলে সংকটে পড়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য কার্যক্রম। এতে বেড়েছে উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা।
সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, রোহিঙ্গারা সবাই নিজ দেশে ফিরতে চায়, নিজেদের সুরক্ষা চায়, তাঁদের সহায়-সম্পত্তি ফেরত চায়। রাখাইনের ফিরিয়ে নেওয়ার আগে সেখানে স্থিতিশীল অবস্থা জরুরি। নইলে রোহিঙ্গাদের বারবার একই সংকটে পড়তে হবে।
রোহিঙ্গা কমিউনিটি যুবনেতা মোহাম্মদ হুমায়ুন সমাবেশে বলেন, আট বছর পরও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, সহায়তা কমছে। ভিন দেশে অনেকটা বন্দি জীবন কাটছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরাতে বাংলাদেশ সরকার নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন-নিপীড়ন, গণহত্যা থেমে নেই। এতে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে তাদের পালিয়ে আসা অব্যাহত রয়েছে। এ দুর্বিসহ জীবন থেকে মুক্তি পেতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের তৎপরতায় স্বদেশে ফেরার আকুতি জানাচ্ছেন রোহিঙ্গারা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রধান বক্তব্য- আইসিজে এবং আইসিসিতে যে বিচারকাজ চলছে তার নিষ্পত্তি চাই। একই সঙ্গে তারা স্বদেশে ফিরতে চেয়ে বিশ্ববাসীর সহযোগিতা চান তারা। সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।
ভয়েস/জেইউ।