সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
মকছুদুর রহমান, মহেশখালী
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে লবণের দাম না থাকায় চাষিদের ঘরে ঘরে নীরব কান্না চলছে।
লবণের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে ১৩ অক্টোবর সোমাবার সকাল ১১ টায় মহেশখালী ইউএনও কার্যালয়ের সামনে মহেশখালী লবণ উৎপাদনকারি ও ব্যবসায়ি সংগ্রাম পরিষদে ব্যানারে বিশাল এক মানববন্ধন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন কক্সবাজারের উত্তরের উপজেলা মহেশখালীর প্রান্তিক লবণ চাষিদের নীরব কান্না শোনার যেন কেউ নেই।
ধারদেনা আর ঋণের টাকায় লবণের মাঠ করে এখন বেকায়দা প্রান্তিক লবণচাষিরা। কেউ জীবনের শেষ পূঁজিটুকু, আবার কেউ স্ত্রীর গয়না বিক্রির টাকায় লবণ চাষ করে তারা আজ দিশেহারা। বাজারে লবণের দাম নেই, যেহেতু এখন লবণ উৎপাদন বন্ধ, যারা লবণ মজুদ করেছেন তারা দাম পাচ্ছেনা। খুবই স্বল্প লবণ পরিমাপ করছে তার দাম ধরা হচ্ছে প্রতিমণে দুইশো থেকে দুইশো বিশ টাকা।
লবণের দাম না বাড়লে ঋণগ্রস্ত এইসব প্রান্তিক চাষিরা লবণ চাষে উৎসাহ হারানোর পাশাপাশি বড় লোকসানের মুখোমুখি হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দ্রুত লবন বোড় গঠন করে লবণ আমাদানি বন্ধ সহ লবণের দাম বাড়ানো এবং বিসিকের মতো প্রতিষ্ঠানকে চাষি এবং মালিকদের পক্ষে দাড়ানো সহ বেশ কয়েকটা দাবি উপস্থাপন করা হয় মানববন্ধনে ও লবণ চাষী সমাবেশে।
এসময় সড়কে লবণ ছিড়িয়ে প্রতিবাদ করেন হাজারো চাষি।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অত্র সংগঠনের আহবাবায়ক সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল্লাহ, সদস্য সচিব মৌঃ আতাউর রহমান,ব্যবসায়ী আয়াত উল্লাহ সিকদার, মনিরুজ্জামান, মোঃ সাহাব উদ্দিন, সালাহ উদ্দিন রতন, মহেশখালী প্রেসক্লাব সভাপতি জয়নাল আবেদিন, মৌঃ কামাল উদ্দিন, নুরুল কবির মেম্বার,জাকের বাদসা সহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
চাষিদের তথ্যমতে, একজন চাষির পক্ষে ৩ কানি (১.২০ একর) জমি চাষ করা সম্ভব। ৩ কানি জমির ইজারা বাবদ খরচ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। পলিথিন খরচ ২০ হাজার টাকা। শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ ২০ হাজার টাকা। মোট খরচ হয় ২ লাখ ৫০ হাজার। ১ কানিতে লবণ উৎপাদন গড়ে ৩’শ মণ। ৩ কানিতে মোট উৎপাদন ৯’শ মণ। এখন লবণের বাজার দর ২’শ টাকা থেকে ৩’শ বিশ টাকা। তাহলে মোট আয় ১,৯৮,০০০ টাকা। যাতে ৩ কানিতে লোকসান হয় ৫২ হাজার টাকা। প্রতি কানিতে প্রায় ১৭ হাজার টাকার অধিক। আর ৬ মাসে চাষির শ্রমের মূল্য ১ লাখ টাকা ধরলে মোট লোকসান হয় ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা। গত মৌসুমে লবণের দাম ছিলো ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা। যার কারণে এই মৌসুমে কোনো কোনো জায়গায় জমির দামও বেড়েছে অধিক। কিন্তু এই বছর বর্তমান লবণের দাম ২’শ থেকে ২২০ টাকা। ভোক্তা পর্যায়ে কিন্তু দাম কমেনি। তাহলে উৎপাদক পর্যায়ে কেন দাম কমিয়ে দেয়া হলো তার উত্তর নেই সংশ্লিষ্ট কারো কাছে।
ভয়েস/জেইউ।