টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে মুছা আকবর (৩৫) ও সাহাব উদ্দিনকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে একদিনে আরো দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সাবজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ – ৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এই দুই মামলার আবেদন করা হয়েছে। নিহত মুছা আকবরের স্ত্রী শাহেনা আকতার ও সাহাব উদ্দীনের বড় ভাই হাফেজ আহামদ বাদি হয়ে এই দুই মামলার আবেদন করেন।
একটি মামলায় হোয়াইক্যং ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমানকে প্রধান ও প্রদীপ কুমার দাশকে ২নং এবং অন্য মামলায় এসআই দীপক বিশ্বাসকে প্রধান এবং ওসি প্রদীপকে ৩নং আসামী করা হয়। এনিয়ে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৭টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা গুলো এখনো তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে আদালত।
নিহত মুছা আকরের মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাইঙ্গ্যা ঘোনা নিহত মুছা আকবরের বড় ভাই আলী আকবরের বাড়ি পুড়িয় দেয় টেকনাফ থানারর একদল পুলিশ এই ঘটনায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পরিবার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৮ মার্চ রাতে আবু মুছাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ক্রসফায়ার না দেয়ার কথা বলে মুছার পরিবারের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তিন লাখ দিতে সামর্থ্য হয় মুছার পরিবার। তিন লাখ টাকা নিয়েও ওই দিন ভোরে মুছা আকবরকে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাদি পক্ষের আইনজীবি রিদুয়ান আলী বলেন, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনায় থানায় এ সংক্রান্ত কোন মামলা হয়েছে কিনা তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে নিহত সাহাব উদ্দীনের মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল টেকনাফ থানার এসআই দীপক বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সাহাব উদ্দীনকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ক্রসফায়ার না দেয়ার কথা বলে তার পরিবার থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু পরিবার ৫০ হাজার দেয়। কিন্তু আরো ৪লাখ ৫০ হাজার টাকা না দেয়ায় ২০ এপ্রিল রাতে কাঞ্জরপাড়া ধানক্ষেতে ক্রসফায়ারের নামে সাহাব উদ্দীনকে গুলি হত্যা করা হয়।
এই মামলা বাদি পক্ষের আইনজীবি শাহা আলম জানান, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনায় এ সংক্রান্ত কোন মামলা হয়েছে কিনা তা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।