সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রোজায় কোরআন পাঠে বেশি সওয়াব

ফেরদাউস হাসান:
কোরআন তেলাওয়াতের মাস রমজান। এ মাসে রাসুল (সা.) ও জিবরাঈল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। কোরআন অধিক পাঠ করতেন। পরবর্তীতে আলেমগণও রমজানে অধিক পরিমাণে কোরআন পাঠ করতেন। কেননা রমজানে কোরআন পাঠে অধিক সওয়াব। কোরআন তেলোয়াতের ক্ষেত্রে আপনাকে অর্থ বুঝতে হবে না, শুধু তেলাওয়াত করুন। আমাদের দেশের কোনো কোনো মহলে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে, কোরআন না বুঝে পড়ে কোনো লাভ নেই! এটা নিতান্তই একটি ভুল ধারণা। এই ধারণার অপনোদন স্বয়ং রাসুল (সা.) করে গিয়েছেন। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করো। কারণ এর প্রতিটি বর্ণ পাঠের বিনিময়ে তোমাদের দশটি করে নেকি দেওয়া হবে। আমি বলছি না যে আলিফ-লাম-মিম’ একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মিম আরেকটি হরফ।’ -তিরমিজি

রাসুল (সা.) এই হাদিস কেবলই তেলাওয়াতের ব্যাপারে। এখানে বুঝে পড়া বা না বুঝে পড়ার কোনো ফারাক নেই। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-এর ছেলে আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি যে, তিনি স্বপ্নে আল্লাহতায়ালাকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহ! কোন ইবাদত আমাকে আপনার আরও কাছাকাছি নিয়ে যাবে? জবাবে আল্লাহতায়ালা বললেন, কোরআনের তেলাওয়াত। বাবা আবার জিজ্ঞেস করলেন, বুঝে তিলাওয়াত নাকি না বুঝে? আল্লাহতায়ালা বললেন, বুঝে করলেও, না বুঝে করলেও।’

ইমাম মালেক (রহ.) রমজান মাস এলে ক্লাস নেওয়া কমিয়ে দিতেন। ছাত্ররা তাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন, ‘এটা কোরআন তেলাওয়াতের মাস। এই মাসে আমি আরও বেশি তেলাওয়াত করতে চাই।’ অথচ আমরা জানি ইমাম মালেক (রহ.) মসজিদে নববিতে বসে হাদিসের দরস দিতেন (ক্লাস করাতেন)। হাদিসের দরস দান একটি মহান ইবাদত এবং সওয়াবের কাজ। তারপরও ইমাম মালেক কেবল তেলাওয়াতের জন্য দরস কমিয়ে দিতেন। আমাদের মাজহাবের ইমাম আবু হানিফা (রহ.) রমজান মাসে চল্লিশবার কোরআন খতম করতেন।

রমাজানকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে হাদিসে যে নির্দেশনাগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো কোরআনুল কারিমের তেলাওয়াত। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ছিলেন সবচেয়ে বেশি দানশীল। রমজানে তার দানশীলতা আরও বেড়ে যেত। রমজানে প্রতি রাতে জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে রাসুল (সা.) কোরআনের দাওর (একে অপরকে শোনানো) করতেন। রমজানে রাসুল (সা.) প্রবহমান বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল হতেন। রমজানে রাতের নামাজে তিনি অন্যান্য মাসের তুলনায় লম্বা ক্বেরাত পাঠ করতেন।’ -সহিহ বুখারি

আমাদের পূর্বসূরি ইমামদের সবাই রমজান মাসে অধিক পরিমাণ কোরআন তেলাওয়াত করতেন। ইমাম ইবরাহিম নাখায়ী (রহ.) রমজানের প্রতি তিন রাতে এক খতম এবং শেষ দশ দিনে প্রতি রাতে এক খতম কোরআন তেলাওয়াত করতেন। ইমাম জুহরি (রহ.) রমজান এলে তার ছাত্রদের বলতেন ‘এটা হলো কোরআন তেলাওয়াতের মাস, এটা মানুষকে খাবার খাওয়ানোর মাস।’ ইমাম সুফিয়ান ছাওরি (রহ.) রমজান এলে নফল নামাজ কমিয়ে দিতেন এবং তার বদলে কোরআন তেলাওয়াত করতেন।

আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করার এবং কোরআন অনুযায়ী জীবনকে পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION