মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ছয় দিনে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব

মুফতি আতিকুর রহমান:
অতিবাহিত হলো মহিমান্বিত মাস রমজান। মাসব্যাপী রোজা রেখে শোধিত হলো পাপাচার, অর্জিত হলো আত্মশুদ্ধি, সঞ্চিত হলো সংখ্যাতীত নেকি, সমৃদ্ধ হলো পরকালের তহবিল। মাসব্যাপী রোজা মানুষকে করল সংযমী এবং মানুষের মাঝে আনল শৃঙ্খলা। রোজার এই সংযম ও শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে সারা বছর। তাহলে রোজায় অর্জিত শিক্ষা অবশিষ্ট এগারো মাস কাজে দেবে। এ ছাড়া রোজায় অর্জিত শিক্ষার প্রতিফল অবশিষ্ট এগারো মাস পেতে করণীয় হলো রমজানের পর অন্যান্য মাসেও বেশ কিছু নফল রোজা রাখা।

রমজানের ফরজ রোজার পর শাওয়াল মাসের ছয় রোজার বিশেষ মর্যাদা রয়েছে, যা বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যারা রমজানের রোজা রেখেছেন, তারা পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখলে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত উবাইদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘একদিন হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। তাই সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখো। তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ (সুনানে তিরমিজি ১৫৩৪)

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের ফরজ রোজাগুলো রাখল, অতঃপর শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছর ধরেই রোজা রাখল।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ ১৭৯)

মজানের ত্রিশ এবং শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার দ্বারা সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়, বিষয়টি কোরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কেউ নেক কাজ করলে মহান আল্লাহ তার প্রতিদান দশগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কেউ কোনো সৎকাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে।’ (সুরা আনআম ১৬০)

এ মর্মে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের রোজা দশ মাস রোজা রাখার সমতুল্য। আর শাওয়ালের ছয় রোজা দুই মাসের সমতুল্য। এই হলো মোট এক বছরের রোজা।’ (সুনানে নাসায়ি ২৮৬০)

এ বিষয়টির বিশ্লেষণ হলো, রমজানের ৩০ দিন আর শাওয়ালের ৬ দিন মিলে মোট রোজা হয় ৩৬ দিন। ৩৬ এর দশ গুণ হলো ৩৬০ দিন। আরবি দিনপঞ্জির হিসাবে ৩৬০ দিনে এক বছর পূর্ণ হয়।

শাওয়ালের ছয় রোজা রাখা যাবে ঈদুল ফিতরের দিন ব্যতীত মাসের অন্য যেকোনো দিনে। এই ছয় রোজা একনাগাড়ে রাখা উত্তম। তবে সুবিধামতো দুয়েক দিন বিরতি দিয়েও রাখা যাবে। কারও যদি রমজানের রোজা কাজা হয়ে থাকে এবং শাওয়ালের নফল রোজাও রাখতে চায় তাহলে উত্তম হলো প্রথমে রমজানের কাজা রোজা আদায় করা। এরপর শাওয়ালের নফল ছয় রোজা রাখা। তবে রমজানের কাজা রোজা থাকা অবস্থায় শাওয়ালের ছয় রোজা রাখলে তা আদায় হয়ে যাবে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION