শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কথা সংক্রান্ত বাজে অভ্যাস

ধর্ম ডেস্ক:
মানুষ অভ্যাসের দাস, তবে সেই অভ্যাস যেন অন্যের বিরক্তির কারণ না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় দৈনন্দিন নানান সমস্যায় পড়তে হয়, অনেক সময় লজ্জা-অপমানও হজম করতে হয়। তেমনি কিছু অভ্যাস ও সেগুলো থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো

কথা চালাচালি করা

বিশ্বস্ততা জীবনে খুব জরুরি। কেউ হয়তো আপনাকে বিশ্বাস করে কোনো কথা বলেছে। আপনি যদি সেই কথা অন্যকে বলে দেন, তাহলে এটা আপনার বাজে অভ্যাস। কেউ যখন আপনাকে বিশ্বাস করে বলেছে, মনে রাখবেন তা রক্ষা করার দায়িত্বও আপনার। যদি মনে করেন আপনি বলে দিতে পারেন, তাহলে এ ধরনের কথা শোনা থেকে বিরত থাকুন।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ওহে! আমি কি তোমাদের জানাবো চোগলখুরি কী? চোগলখুরি হচ্ছে, মানুষের মাঝে কথা চালাচালি।’ সহিহ মুসলিম

হাদিসে স্পষ্টভাবে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘চোগলখোর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ সহিহ বোখারি

বেশি কথা বলা

বাচালতা নিজের ব্যক্তিত্বের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত কথা আপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেবে।ইসলামি স্কলাররা এই মন্দ অভ্যাস থেকে পরিত্রাণের সমাধান দিয়েছেন এভাবে, কথা দীর্ঘ করলে আসল কথাই হারিয়ে যতে পারে। যদি মনে করেন আপনি বেশি কথা বলছেন, তাহলে বলার সময় সচেতন থাকুন। আপনজনদের বলে রাখুন, কথা বলার সময় খেয়াল করতে আপনি বেশি বলছেন কিনা। তাহলে থামিয়ে দিতে কিংবা বিরক্তি প্রকাশ করতে। অনর্থক কথা না বলে সার কথাটুকু বলুন। দেখবেন যা বলছেন সবাই তা মনোযোগ দিয়ে শুনছে। চেষ্টা করুন, যা ঘটেছে বা যা সত্য তাই বলতে। এ প্রসঙ্গে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ যে কথাই বলুক না কেন, তার কাছে একজন তৎপর প্রহরী প্রস্তুত থাকেন।’ সুরা কাফ : ১৮

কোরআন মাজিদের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ, যারা বিনয়-নম্র নিজেদের নামাজে। যারা অসার ক্রিয়াকলাপ বা নিরর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে।’ সুরা আল মুমিনুন : ১-৩

আঘাত দিয়ে কথা বলা

আপনি স্পষ্টবাদী, এর অর্থ এই নয় যে, অন্যকে আঘাত দিয়ে কথা বলবেন। কেউ আপনার মতো নাও হতে পারে। মনে রাখবেন, অন্যকে আঘাত দেওয়ার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। অনেক কঠিন কথাও অনেক সুন্দর করে বলা সম্ভব। এ অভ্যাস রপ্ত করুন। কথা বলার সময় সচেতন

থাকুন যেন আপনার কথায় কেউ কষ্ট না পায়। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়ছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে রেওয়াত করেন, কোনো মুমিন তিরস্কারকারী, লানতকারী, গালিগালাজকারী, খারাপ-মন্দ উচ্চারণকারী হতে পারে না। আরবিতে একটি বহুল প্রচলতি প্রবাদে বলা হয়েছে, ‘তীরের ক্ষত শুকিয়ে যায়, তবে মুখের কথার আঘাত শুকায় না।’

অন্যকে বলতে না দেওয়া

অনেকেই একতরফা কথা বলতে থাকেন। অথচ আলোচনা বা আড্ডার সময় অন্যের কথাও শুনতে হয়, বলার সুযোগ দিতে হয় এ খেয়াল থাকে না। অতএব আলোচনা বা আড্ডায় ভালো শ্রোতার কদর অনেক। আগে অন্যের কথা শুনে তারপর বলুন। খেয়াল রাখুন, অন্যরা বলার সুযোগ পাচ্ছে কিনা। নিজে কম কথা বলে অন্যকে বলতে দিন।

এ প্রসঙ্গে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি পদক্ষেপ করবে সংযতভাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করবে, কেননা স্বরের মধ্যে গর্দভের স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।’ সুরা লোকমান : ১৯

কথা না রাখা

অনেকেই আছেন কথা দেওয়ার সময় হয়তো না বুঝেই কথা দিয়ে ফেলেন। পরবর্তী সময় রক্ষা করতে পারেন না। তেমনি সবসময় দেরি করে পৌঁছানোও বাজে অভ্যাস। দেরি করে আসার কারণে অনেকেই হয়তো বিরক্ত হন এবং বিড়ম্বনায় পড়েন।

অতএব মনে রাখুন, খেয়ালের বশে কখনো কাউকে কথা দেবেন না। কথা দেওয়ার সময় সচেতন থাকুন, আপনি রক্ষা করতে পারবেন তো? কথা দেওয়ার পর যদি বুঝতে পারেন আপনি রাখতে পারবে না, তবে আগেভাগেই জানিয়ে দিন। যাতে আপনার জন্য কারোর অসুবিধা না হয়। সময়ানুবর্তিতা জীবনের জন্য জরুরি। সবসময় হাতে সময় নিয়ে বের হবেন। যাতে নির্দিষ্ট সময় পৌঁছাতে পারেন। এ প্রসঙ্গে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা কেন এমন কথা বল, যা কাজে পরিণত কর না, এটা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ যে তোমরা বল এমন কথা যা করবে না।’ সুরা সাফ : ২-৩

হাদিসে বলা বলা হয়েছে, হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ধ্বংস তার জন্য! ধ্বংস তার জন্য! ধ্বংস তার জন্য! যে ওয়াদা করল এরপর তা রক্ষা করল না।’ মুজামুল আওসাত, তারিখে দিমাশক।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION