সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:২১ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
মহেশখালীতে লবণ মাঠ দখল নিয়ে গোলাগুলির ঘটনায় আহত ওসমানের মৃত্যু আবহাওয়া: চলতি মাসে ফের ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা উপজেলা নির্বাচন:সম্পদ অর্জনে এমপিদের চেয়ে এগিয়ে উপজেলা জনপ্রতিনিধিরা উপজেলা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা রামুতে পাহাড়ী ছড়ায় গোসলে নেমে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে কুফরের প্রকারগুলো পেকুয়ায় চেয়ারম্যান পদে চমক দেখাতে পারে নারী প্রার্থী রুমানা আক্তার, গণসংযোগে গণজোয়ার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২ ঘন্টার মাথায় আরো এক রোহিঙ্গা খুন বাজিমাত করতে পারে জয়নাল, পিছিয়ে নেই হাবিবুল্লাহ, স্পিড বাড়ালালেই জয়ের বন্দরে কুদ্দুস চৌধুরী নাফনদী সীমান্ত দিয়ে বিজিপির আরও ৮৮জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয়

ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে জান্নাত

মাওলানা আশরাফুল ইসলাম:
আল্লাহতায়ালা কোমল হৃদয়ের অধিকারীদের ভালোবাসেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন কোমলতার শ্রেষ্ঠ উপমা। তিনি মানুষকে কোমলতার গুণ অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন। কোমলতার অধিকারীদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। যারা কোমলতার গুণে নিজেদের গুণান্বিত করে তারা দুনিয়ার জীবনে সবার কাছে হয়ে ওঠে শ্রদ্ধার পাত্র। আর পরকালের জীবনে থাকে মহাসফলতা। পক্ষান্তরে যারা কঠোর ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষ তাদের জীবনে এমন শ্রদ্ধা ও সফলতা আসে না। কেননা তারা মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করতে পারে না। যা পারে কোমলতার অধিকারী মানুষরা। তাই কোমলতার গুণ অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়। মানুষের ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে, তেমনি খারাপ আচরণ কষ্টের কারণ হতে পারে। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে আমাদের উচিত সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা।

সুন্দর ব্যবহার ও আচার-আচরণ বলতে আমরা বুঝি কারও সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলা, দেখা হলে সালাম দেওয়া, কুশলাদি জিজ্ঞেস করা, কর্কশ ভাষায় কথা না বলা, ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত না হওয়া, ধমক বা রাগের সুরে কথা না বলা, পরনিন্দা না করা, অপমান-অপদস্থ না করা, উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা, গম্ভীর মুখে কথা না বলা, সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা, অন্যের সুখে সুখী হওয়া এবং অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া। এ ছাড়া কারও বিপদে দেখা করে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করাও সুন্দর আচরণের অন্তর্ভুক্ত।

আমরা সবাই সুন্দর আচরণ প্রত্যাশা করি। কিন্তু আমরা প্রায়ই অন্যের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে ভুলে যাই। সামান্য একটু অসতর্কতার কারণে আমাদের আচরণে একজন মানুষ অনেক কষ্ট পেতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিত। যাতে আমাদের আচরণে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়। যার আচরণ যত বেশি সুন্দর সবাই তাকে তত বেশি ভালোবাসে, সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। যার আচরণ ভালো নয় সবাই তাকে ঘৃণা করে এবং এড়িয়ে চলে। সুন্দর ব্যবহার এবং সুন্দরভাবে কথা বলা সুন্দর মনের পরিচয় বহন করে। মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে, তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে আমাদের উচিত সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা। সুন্দর ব্যবহারের কারণে যে মুখটি প্রিয় হয়, বিপরীতভাবে অসুন্দর ব্যবহার করায় একই মুখটি অপ্রিয় হয়ে যায়। তাই সবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়, পরকালে বিনিময় হিসেবে মেলে অনন্ত সুখের জান্নাত। এ প্রসঙ্গে হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না। যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে, তাকে আল্লাহতায়ালা ঘৃণা করেন। আর যার ব্যবহার সুন্দর, সে তার ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে।’ (সুনানে তিরমিজি)

হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষকে যা সবচেয়ে বেশি জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো, আল্লাহতায়ালার ভয় এবং সুন্দর আচরণ। আর মানুষকে যা সবচেয়ে বেশি জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো, মানুষের মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (সুনানে তিরমিজি)। ‘সুন্দর আচরণই নেক আমল।’ (সহিহ মুসলিম)। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’ (সুনানে তিরমিজি)

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর।’ (মুসনাদে আহমদ)। আরেক হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি।’ (আবু দাউদ)

ইসলাম আমাদের যে সুন্দর ও ভালো আচরণের যে শিক্ষা দিয়েছে, প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত তা যথাযথভাবে নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করা এবং রাগ-ক্ষোভ সর্বাবস্থায় মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। তাহলে তা সবার জন্য কল্যাণকর হবে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION