শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকুলে ভাসমান ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলার দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ রবিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চজ্ঞার আদালতে হাজির করা হলে ২ জন ১৬৪ ধারামতে এই জবানবন্দি প্রদান করেন।
জবানবন্দি দেয়া আসামীরা হলেন, বাঁশখালীর ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি। এদের প্রত্যেককে তিনদিনের রিমান্ড মন্জুর করেছিল আদালত।
৩ দিনের রিমান্ড শেষে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক দূর্জয় বিশ্বাস ২ জনকে আদালতে হাজির করেন। তিনি জানিয়েছেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রাপ্ত তথ্য আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি দিতে রাজি হয়েছেন ২ জন। এর প্রেক্ষিতে ২ জন কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চজ্ঞার কাছে জবানবন্ধি প্রদান করেছেন। ১৬৪ ধারায় কি জবানবন্ধি দিয়েছেন তিনি জানেন না। এটা আদালতের বিচারক জানবেন।
তিনি জানান, রিমান্ড এই ২ আসামি স্বীকার করেছেন ৯ এপ্রিল সাগরে একটির ট্রলারকে (সামশু মাঝির) ঘীরে ৭/৮ টি ট্রলারের লোকজন ডাকাত-ডাকাত বলে মারতে দেখেছেন। যারা মারধর করতে ছিলেন তারা সকলেই মহেশখালী মানুষ। এরা বাঁশখালীর বাসিন্দা। ফলে এ ২ জন ঘটনাস্থল থেকে বাঁশখালী চলে গিয়েছিলেন।
এদিকে এ মামলায় গত ২৫ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। মুনির বদরখালী এলাকায় মো. নুর নবীর ছেলে।
রবিবার দুপরে কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চজ্ঞা এ আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মুনিরকে যে কোন সময় রিমান্ডের জন্য পুলিশ নিয়ে যাবে বলে জানান মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা র্দূজয়।
তিনি জানান, আদালতের আদেশে মামলার এজাহারভ‚ক্ত ১ নম্বর আসামি মাতারবাড়ির এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি করিম সিকদারের ৫ দিনের রিমান্ড রবিবার শেষ হচ্ছে। সোমবার যে কোন সময় ওই ২ জনকেও আদালতে প্রেরণ করা হবে। এই ২ আসামির কাছে কি তথ্য পাওয়া গেছে এটা জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রবিবার (২৩ এপ্রিল) গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধিন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা ট্রলারটি নাজিরারটেক উপক‚লে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে উদ্ধার হওয়া ৬ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও মর্গে রয়ে গেছে ৪ জনের মরদেহ ও কংকালটি। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এ ৫ জনের পরিচয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল গ্রেফতারের পর বাঁশখালীর কুদুকখালী এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে ফজল কাদের মাঝি (৩০) ও শামসুল আলমের ছেলে আবু তৈয়ব মাঝি (৩২) কে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিলেন র্যাব। এরপর আদালতে নির্দেশে গত ২৭ এপ্রিল ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মামলাটির অন্যতম আসামী বাইট্টা কামাল ও করিম সিকদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে ৫ দিনের রিমান্ডে নেন পুলিশ। আগামীকাল সোমবার ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।
ভয়েস/আআ