শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৯ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

জোয়ারিয়ানালা রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে চলছে গাছ নিধন ও পাচারের মহোৎসব

ভয়েস প্রতিবেদক:
রামু উপজেলায় বনবিভাগের জোয়ারিয়ানালা রেঞ্জের বেঙডেবা বনবিটের সংরক্ষিত বণাঞ্চলের মূল্যবান গাছ কেটে কাঠ পাচারের মহোৎসব চলছে। চট্টগ্রাম বন সার্কেলের কক্সবাজর উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন এ বনবিট থেকে সংঘবদ্ধ চোরা কাঠ পাচারকারী চক্র সম্প্রতি সময়ে বনের গাছ কেটে পাচার করছে বলে ভিলেজার ও স্থানীয়দের অভিযোগ। এদিকে দিন-রাত গাছ কাটা এবং কাঠ পাচার অব্যাহত থাকলে ও সংশ্লিষ্ট ডিএফও কিংবা রেঞ্জ কর্মকর্তার টনক নড়ছেনা। তাদের রীতিমত নিরব ভুমিকার কারণে কাঠ চোরেরা উৎসাহ পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে গাছ নিধনে মেতে উঠেছে।
জানাগেছে ১৪ শত একরের বিশাল বেঙডেবা বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে রয়েছে শতবর্ষী মাদার ট্রি গর্জন, সেগুন, করাই, গামারী, জারুল, জাম, মেহগনী, তেলসুর ও সিভিটসহ বিভিন্ন প্রজাতির মুল্যবান গাছ। সম্প্রতি সময়ে স্থানীয় চোরা কাঠ পাচারকারী চক্রের লোলোপ দৃস্টি পড়ে বনের এসব মূল্যবান গাছের প্রতি। তারা দিনে-রাতে প্রতিযোগিতা দিয়ে গাছ কেটে গাড়িতে করে অন্যত্র পাচার করে যাচ্ছে। এতে করে রিজার্ভ বনাঞ্চল বৃক্ষ শুন্য হয়ে ন্যড়া ভুমিতে পরিণত হচ্ছে। অন্যদিকে গাছ চুরি অব্যাহত থাকায় সরকার বিপুল অংকের রাজস¦ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং সরকারের প্রতিবছর গৃহিত নতুন বনায়ন কর্মসুচী ভেস্তে যেতে বসেছে। খোদ জোয়ারিয়া নালা রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বেঙডেভা বনবিট কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে চোরা কাঠ পাচারকারী চক্র বনের মূল্যবান গাছ কেটে অন্যত্র পাচার করে দিচ্ছে বলে স্থাণীয়রা অভিযোগ করলেও কক্সবাজার উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে নিরব ভুমিকা পালন করছে।
একটি সূত্র দাবী করেছে বনের গাছ কেটে পাচার সহজতর এবং দ্রæত অন্যত্র নিয়ে যেতে সংরক্ষিত বনের ভেতর গাছ ও পাহাড় কেটে বেঙডেবা হতে জোয়ারিয়া পর্যন্ত রাস্তা তৈরী করেছে কাঠ চোরেরা। এসব রাস্তা দিয়ে নির্বিগ্নে গাড়িতে করে কাঠ অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভিলেজার জানান এ বনবিটের দলবণ্যা ঘোনা, হেডম্যানের ঘোনা, মংচানুর ঘোনা, জানুর ঘোনা, দোয়ালের ঝিরি, ক্ষেতের ঘোনা, শীলের গুলা খিলা, মনির উল্লাহর ঘোনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন ও রাতে সেগুন, গর্জন ও সিভিট গাছ কাটা হচ্ছে। পাচারকারী চক্র এসব গাছ কেটে গাড়িতে করে রাতের আধারে পাচার করে দিচ্ছে অন্যত্র। আরও অভিযোগ চোরাই কাঠের গাড়ি তিতুলিয়ার ঘাট, টংতলী ও রেঞ্জ অফিসের সামনের সড়ক দিয়ে চলে যায়। এমনকি মুল্যবান গাছ ছাড়াও বেঙডেবা বন থেকে লাকড়ী যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী ইট ভাটায়। তারা জানান কয়েকদিন আগেও দলবন্যা ঘোনা হতে দুই গাড়ি সিভিট গাছ কেটেছে কাঠ চোরেরা। এবিষয়ে এসিএফ সোহেল রানাকে অবগতকরা হয়েছে। তাদের দাবী সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কমকর্তারা এসব এলাকা পরিদর্শন করলে শতশত সদ্যকাটা গাছের মোথা পাওয়া যাবে। রেঞ্জ কর্মকর্তা মাঝে মধ্যে টহলে এসে এসব দেখেও এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। উপরোক্ত বনাঞ্চলে এসব গাছ বড় করতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গাছ বড় করতে লেগেছে দীর্ঘ সময়। অতচ বনের রক্ষক রেঞ্জার সুলতান মাহমুদ ও বিট কর্মকর্তা কাঠ চোরদের সাথে আতাত করে এসব গাছ অতিঅল্প সময়ে মোটা টাকায় কাঠচোরদেরকে বিক্রি করে দিচ্ছে।
অপরএকটি সূত্র জানায় বেঙডেপা বনবিটে ২০১৯/২০২০ অর্থ বছরে সুফল প্রকল্পের অধিনে পৃথক ভাবে ৫০ ও ২০ মোট ৭০ হেক্টর বাগান করা হয়। গত জানুয়ারীর দিকে ওই বাগানের আগাছা পরিস্কারের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তা দুইজনেই বাগানের আগাছা ছাঠাই না করে সমুদয় টাকা আত্বসাৎ করেছেন। আরও অভিযোগ উক্ত বনবিটের হেডম্যান আলী আহমদ বিগত ৩০ বছর ধরে হেডম্যানি করছে। কাঠ চোরকারবারীদের সাথে তার রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। ফলে রেঞ্জার, বিট কর্মকর্তা ও হেডম্যন পরস্পর যোগসাজসে পাচার করে দিচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ। সরকারী বনের গাছ বিক্রি করে হেডম্যান আলী আহমদ বর্তমানে কোটি টাকার মালিক। রেঞ্জার তার কথায় চলে। বর্তমানে বেঙডেবার ৪০ পরিবার তাদের কাছে জিম্মী , প্রতিবাদ করার সাহষ পায়না।।
আরও একটি সুত্র দাবী করেছে বেঙডেবা বনবিটে বাগান করার জন্য গত অর্থ বছরে ৯০ বেডের নার্সারী করা হয়েছিল। ওই বেড গুলোতে ৩৫ রকমের ২ লাখ চারা করা হয়। কিন্তু বিনা কারণে রেঞ্জ কর্মকর্তা ৯ বেড তছনছ করে পলি ব্যাগ সহ চারা গুলো খালে ভাষিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ হাওলাদার বলেন রেঞ্জ অফিস থেকে বেঙডেবা বনবিটের দুরত্ব অনেহ বেশী। তাই এখান থেকে বাগনের গাছ কাটা যাওয়া ও পাচার রোধ করা কস্টকর। এরপর ও গাছ কাটা বন্ধে চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগাছা পরিস্কার করা হয়নি বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এদিকে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের এসিএফ সোহেল রানা বলেন রেঙডেবা বনবিটের সংরক্ষিত বাগান থেকে গাছ কাটা যাওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ভয়েস/বএম/আআ

 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION