মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন
বশির আল মামুন, চট্টগ্রাম :
চলতি বর্ষা মৌসুম প্রাণহানির শঙ্কাসহ যেকোনো ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড়ের পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে চট্টগ্রামের পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি।
বুধবার (৯ জুন) দুপুরে পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রামের সম্মেলন কক্ষে অনুস্টিত এ সংক্রান্ত উপ-কমিটির সভায় আগামী মঙ্গলবার থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ শুরুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে অন্তত দুই সপ্তাহজুড়ে। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী। বক্তব্য দেন অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মফিদুল আলম।
এছাড়া জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সেবা সংস্থা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত নগরীর বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক সড়কের দু’পাশের পাহাড়ে বসতি উচ্ছেদের মাধ্যমে এই অভিযান কার্যক্রম শুরু হবে। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে এই কর্মসূচি চলবে।
পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক নুরুল্লাহ নুরী বলেন, ‘বায়েজিদ-ভাটিয়ারি সড়কের আশপাশে যেসব পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেখান থেকে বসতি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাল সোমবার থেকে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পাহাড়ে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করা হবে। তবে যেসব পাহাড়ের বিষয়ে মামলা রয়েছে, সেগুলোর উচ্ছেদ আপাতত বন্ধ থাকবে। উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাহাড় কেটে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৈরী করা বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডে বিপর্যয়ের আশঙ্কায় যানবাহন চলাচল ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সড়কটি নির্মাণের জন্য সিডিএ ছোট-বড় ১৮টি পাহাড় কেটেছে। এর মধ্যে অন্তত আটটি পাহাড়ে আছে কয়েক’শ অবৈধ বসতি।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিডিএর কেটে ফেলা পাহাড়সহ নগরীতে এখন মোট ২৫টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে। অতিবৃষ্টিতে ধসের আশংকা তৈরি হয়েছে এসব পাহাড়ে। ঘটতে পারে প্রাণহানিও।
২০১৯ সালে সরকারিভাবে গঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি চট্টগ্রামে বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের তালিকা করেছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রামে মোট ১৭টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে। এর মধ্যে ১০টি ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়। বাকি সাতটি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার। এসব সংস্থার মধ্যে আছে- রেলওয়ে, চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত বিভাগ, বন বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালের তালিকায় ১৭টি পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য চিহ্নিত করা হয়।
ভয়েস/আআ