শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৩ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

সৈকতে আশানুরূপ পর্যটক নেই!

আবদুল আজিজ:
পর্যটন খুলে দেয়ার পরবর্তী সময়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আশানুরূপ পর্যটক নেই। গত ১৯ আগস্টের প্রথম দিকে বেশকিছু দিন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সরগরম থাকলেও শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) ছুটির দিনে কমে গেছে পর্যটক। আর যেসব পর্যটক সৈকতে ভ্রমনে এসেছে তাদের অধিকাংশ পর্যটক স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট মালিকরাও সরকারের বেধে দেয়া বিধিনিষেধ মানছে না। একারণে কক্সবাজারে করোনা সংক্রামন পুনরায় বেড়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। দীর্ঘদিন করোনার কারণে ঘরবন্দি থাকার পর পর্যটন খুলে দেয়ার ভ্রমনে আসে লাখ পর্যটক। এসব পর্যটকদের সবধরণের সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে নানা শর্ত আরোপ করে সরকার। ফলে জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের মাইকিং স্বত্তেও মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছেন পর্যটকরা। সামাজিক দূরত্ব বা মাস্ক পরা নিয়ে পর্যটকদের রয়েছে চরম অনীহা। দিচ্ছেন নানা অজুহাত।

রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে আসা পর্যটক সৌরভ দেব জানান, ‘মাস্ক নিয়ে আসছিলাম। এখন পানিতে নামব তাই ফেলে দিয়েছি। পানিতে নামলে তো মাস্কটা ভিজে যাবে। পরে মাস্ক কিনে পরব।’

ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক তৌফিকুল ইসলাম জানান, ‘মাস্ক পরা বিষয়টা অনীহা নয়। বিষয়টা হচ্ছে, বাসা থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছি। এটার জন্য কক্সবাজার ছুটে আসা। এখন স্বাস্থ্যবিধি বা মাস্ক ব্যবহার কেউ মানছে না।’

এদিকে শুক্রবার ছুটির দিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা যায়, কয়েক হাজার পর্যটক এসব পয়েন্টে ভিড় করেছেন। আগত পর্যটকরা সৈকত, পানি, বালিয়াড়ি ও কিটকটে (ছাতায়) বসে আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে মেতে রয়েছেন। আর তাদের আনন্দ ও হৈ-হুল্লোড়ে হার মেনেছে করোনার স্বাস্থ্যবিধি। কেউ মানছেন না সামাজিক দূরত্ব বা মাস্ক ব্যবহারের বিধিনিষেধ। যারা মাস্ক ব্যবহার করে সৈকতে নেমেছেন তারাও কিছুক্ষণ পর সৈকতের বালিয়াড়িতে ফেলে দিচ্ছেন ব্যবহৃত মাস্কটি। বালিয়াড়িতে শয়ে শয়ে ব্যবহৃত মাস্ক পড়ে তাকতে দেখা যায়।

সি-সেইভ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে লাইফ গার্ডের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করি। কিন্তু যেসব পর্যটক সৈকতে মাস্ক পরে আসেন তারা ওই মাস্ক ব্যবহার করে সৈকতেই ফেলে যান। যে কারণে সৈকতের বালিয়াড়ি নোংরা হচ্ছে। তারপরও চেষ্টা করি, বালিয়াড়ি থেকে ব্যবহৃত মাস্কটি তুলে ডাস্টবিনে ফেলার। এক্ষেত্রে পর্যটকদের সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়োজন।’

কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান জানান, করোনার কারণে গত বছর পাঁচ মাস বন্ধ ছিল রিসোর্ট। এ বছরও চার মাস বন্ধ। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার সুযোগ না পেতেই আবার চলতি লকডাউনে আমাদের ক্ষতি পাহাড় সমান। ক্ষতি পোষাতে না পেরে কর্মচারীদের ছাঁটাই করতে হয়েছে। আশা করেছিলাম এবার সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু, প্রথম দিকে প্রচুর পর্যটক আসলেও এখন আশানুরূপ পর্যটন নেই।’

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: আবুল কাসেম জানান, ‘সরকারের দেয়া সব শর্ত মানা হচ্ছে। সৈকতে পর্যটকরা স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা সেই দায়িত্ব আমাদের নয়। কক্সবাজারে পর্যটন জোনে যেসমস্ত হোটেল মোটেল রয়েছে সবকটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের রুম বুকিং দিচ্ছে। তবে আগের মত পর্যটকদের আগমন নেই’।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: মহিউদ্দিন আহমদ জানান, ‘প্রতিদিনই সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা দায়িত্বপালন করে যাচ্ছে। আগে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করলেও এখন পর্যটকদের নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে পর্যটকদের সচেতন করতে মাইকিং, টহলরত মাইকিং, বিচ বাইকযোগে মাইকিং ও পর্যটকদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনেক পর্যটক সৈকতে আসেন। তারা সবাই নতুন। সবাইকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা সকলের দায়িত্ব।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন ও প্রটোকল শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সৈকতে পর্যটকের ঢল নামে। তবে এই সপ্তাহে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমনে আসেনি। এরপরও করোনার সংক্রমণ রোধে পর্যটকদের সচেতন করতেই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এটি ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION