শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক:
উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ (৫০)কে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ইষ্ট-ওয়েষ্ট ১নং ব্লকে তার অফিসে এ ঘটনা ঘটে। আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইট সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ঘটনায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা উগ্রবাদি সংগঠন ‘আরসা’কে দায়ী করেছেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ১৪নং ‘এপিবিএন’র পুলিশ সুপার নাইমুল হক জানিয়েছেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা মুহিবুল্লাহর নিজ অফিসে ৫ রাউন্ড গুলি করে। এসময় ৩ রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। এতে সে ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। পরে উখিয়া থানা পুলিশকে মৃতদেহটি হস্তান্তর করে।
উখিয়া থানার ওসি সন্জুর মোর্শেদ জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আরেক শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ জোবাইর জানিয়েছেন, ‘কে বা কারা আমাদের নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে। এঘটনায় আমরা শংকিত। আমরা খুবই আতংকে আছি। তিনি জানান, বন্দুকধারীদের গুলিকে মুহিবুল্লাহ নিহত হওয়ার পর উখিয়া ও টেকনাফ রোহিঙ্গাদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেক রোহিঙ্গা চীৎকার দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারের আরাকানে ফিরে যেতে ইচ্ছুক। নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ সাধারণ রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়া নিয়েই লড়ে আসছিলেন।
২০১৯ সালের ২৫ আগষ্ট কুতুপালং শিবিরে রোহিঙ্গাদের এক বিশাল সমাবেশ করেই তিনি আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট সফর করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্ফের সাথেও দেখা করেন। সেই থেকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচনায় আসেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সে দেশের সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী মগদের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। পরে নতুন-পুরাতন মিলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা অস্থায়ী বসবাস করে আসছে।
ভয়েস/আআ