রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কোথায়?

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগারের কনডেম সেলে। প্রদীপকে গ্রেফতারের পর থেকেই কোনো হদিস মিলছে না তার স্ত্রী চুমকি কারণের।

প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি চুমকি। এ মামলায় দ্বিতীয় আসামি প্রদীপ। ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান চুমকি। তিনি যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠিও দেয় দুদক। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো হদিস মিলছে না চুমকির।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার ও বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এদিন অন্য আসামিদের আত্মীয়স্বজন আদালতে উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না প্রদীপের স্ত্রী চুমকি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রদীপপত্নী দেশে কোথাও লুকিয়ে আছেন, নাকি পালিয়ে বিদেশে গেছেন তা বলছেন না স্বজনরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও চুমকির অবস্থানের সঠিক কোনো তথ্য স্পষ্ট করতে পারছে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রদীপের স্ত্রীকে গ্রেফতারের পরোয়ানা তাদের কাছে এসেছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার কাছেও পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে। দেশে থাকলে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার হতে হবে।

বিভিন্ন সূত্রমতে, প্রদীপ গ্রেফতার হওয়ার পর চুমকি প্রথমে চট্টগ্রাম শহরের সদরঘাটে এক স্বজনের বাসায় কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর থেকে তার আর হদিস মিলছে না। অনেকে ধারণা করছেন, তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়েছেন।

২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকিকেও আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনেন তদন্ত কর্মকর্তা। রিয়াজ উদ্দিন জানান, প্রদীপ ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদ দৃশ্যমান হতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।

২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল প্রদীপ ও তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলা হলেও চুমকি তা জমা দেন ২০১৯ সালের ১২ মে। দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোল শহরে বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে। তার চার কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় দুই কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। ফলে দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। এছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসায়ের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অভিযোগপত্রে সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৯ জনকে।

অবশ্য চট্টগ্রামে ছয়তলা বাড়ির বিষয়ে চুমকি দুদককে জানান, ২০১৩ সালে বাড়িটি তার বাবা তাকে দান করেছেন। যদিও চুমকির অন্যান্য ভাই ও বোনদের তার বাবা কোনো সম্পত্তি দান করেননি। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৬ সালে শ্বশুরের নামে বাড়ির জমি কেনেন প্রদীপ। এরপর ছয়তলা বহুতল ভবন গড়ে তোলেন।

জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, মামলা হয়েছে, চার্জশিট হয়েছে। এখন শুধু মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য আছে। এ মামলার প্রধান আসামি ওসি প্রদীপের স্ত্রী যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য পুলিশ সদর দপ্তরসহ একাধিক ইউনিটে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু জানান, ২০২০ সালে ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ আশফাকুর রহমান ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে থাকা সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দেন।সূত্র: জাগো নিউজ।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION