মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ইসলামি উত্তরাধিকার শাস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা

মো. জোবাইদুল ইসলাম:

ফারায়েজ শব্দটি আরবি। অর্থ নির্ধারিত অংশ, নির্দিষ্ট ভাগ, উত্তরাধিকার শাস্ত্র। পরিভাষায় ফারায়েজ হলো- ফিকহ ও হিসাবশাস্ত্রের ওই সব নিয়মকানুন জানার নাম, যার দ্বারা মৃতব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পদের বণ্টননীতি সম্পর্কে জানা যায়। এই জ্ঞানকে ইলমুল ফারায়েজ বলা হয়। ইলমুল ফারায়েজ শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ফারায়েজ শিক্ষা করো এবং জনগণকে তা শিক্ষা দাও। কেননা এটা জ্ঞানের অর্ধেক।’

ইলমুল ফারায়েজকে জ্ঞানের অর্ধেক বলার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো- ইসলামের অন্য বিষয়গুলো শরিয়তের চারটি দলিল তথা কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াস থেকে নির্ধারিত হলেও ইলমুল ফারায়েজ শুধুমাত্র দুটি দলিল তথা কোরআন ও হাদিস থেকে নির্ধারিত। ইলমুল ফারায়েজকে বাংলায় উত্তরাধিকার শাস্ত্র বা উত্তরাধিকার বিজ্ঞান বলা হয়।

ইলমুল ফারায়েজের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা হলো- আসহাবুল ফারায়েজ বা জাবিল ফুরুজ, আসাবা, জাবিল আরহাম। জাবিল ফুরুজ অর্থ হলো- নির্ধারিত অংশের মালিকগণ। পরিভাষায় জাবিল ফুরুজ বলা হয় তাদের, যাদের নির্ধারিত অংশের কথা কোরআন মাজিদে বর্ণিত হয়েছে।

যেমন রাব্বে কারিম ইরশাদ করছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে তোমাদের এই আদেশ দিয়েছেন যে, এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান। আর যদি শুধু কন্যারা দুইজনের অধিক হয়, তাহলে তারা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে। আর যদি একটিমাত্র কন্যা হয় তাহলে সে অর্ধেকাংশ প্রাপ্ত হবে এবং যদি মৃত ব্যক্তির কোনো সন্তান থাকে তাহলে মাতা-পিতার জন্য অর্থাৎ উভয়ের প্রত্যেকেরই জন্য তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে এক ষষ্ঠাংশ রয়েছে। আর যদি তার কোনো সন্তান না থাকে এবং শুধু মাতা-পিতাই তার উত্তরাধিকারী হয় তাহলে তার মাতার জন্য রয়েছে এক-তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই থাকে তাহলে সে যা অসিয়ত করে গেছে সেই অসিয়ত ও ঋণ আদায়ের পর তার মাতার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ। তোমাদের পিতা ও তোমাদের পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের অধিকতর উপকারী তা তোমরা জানো না। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত বিধান। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানময়।’ -সুরা আন নিসা : ১১

ইসলামের উত্তরাধিকার আইনের নির্ধারিত অংশপ্রাপ্তরা হলো- মোট বারো জন। তাদের মধ্যে চার জন পুরুষ এবং বাকি আট জন নারী। পুরুষ চার জন হলো- ১. পিতা, ২. দাদা, ৩. বৈপিত্রেয় ভাই ও ৪. স্বামী। আর আট জন নারী হলো- ১) স্ত্রী, ২. কন্যা, ৩. পৌত্রী, ৪. সহোদরা বোন, ৫. বৈমাত্রেয় বোন, ৬. বৈপিত্রেয় বোন, ৭. মাতা ও ৮. দাদি/নানি।

ইসলামের এই উত্তরাধিকার আইন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলিম জাতির প্রতি বিশেষ রহমত। কারণ, নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার আইন না থাকলে মুসলমানদের মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে তারা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতো। তাই ইলমুল ফারায়েজের জ্ঞান অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইলমুল ফারায়েজ তথা ইসলামি উত্তরাধিকার আইনকে জ্ঞানের অর্ধেক বলেছেন।

ভয়েস/আআ/সূত্র: দেশ রূপান্তর

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION