বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

তিন লক্ষ্য ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি

বিএনপি,ফাইল ছবি

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ ক্রমে উত্তপ্ত হচ্ছে। ধীরে ধীরে নানা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথমুখী হচ্ছে সরকারবিরোধীরা। নির্বাচনের এক বছরের বেশি সময় বাকি থাকলেও এরই মধ্যে মাঠ গরম করতে শুরু করেছে বিএনপি। ডিসেম্বর সামনে রেখে বিভিন্ন মতাদর্শের সংগঠন নিয়ে ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে বড় আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা তাদের। এরই অংশ হিসেবে তিনটি মূল লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে দলটি। এগুলো হলো- ‘চূড়ান্ত আন্দোলনের’ উদ্দেশ্যে দল গোছানো, সমমনা দলের সঙ্গে রাজনৈতিক ঐক্য গড়া এবং মানবাধিকার ইস্যুকে সরকারের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এতে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মপরিকল্পনার নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। উঠে এসেছে চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি ও সরকারবিরোধী সম্ভাব্য জোটের হিসাব-নিকাশের বিষয়ও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারকে চাপে ফেলতে বিএনপি-জামায়াত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠক করছে। এসব তৎপরতার ওপর সরকারের তীক্ষষ্ট দৃষ্টি দেওয়াসহ সমন্বিত নজরদারি বাড়াতে হবে।

সাধারণত সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর ছায়া নজরদারি থাকে গোয়েন্দা সংস্থার। এটি সব সরকারের আমলেই ঘটে। রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করা হয় তাদের প্রতিবেদনে। এরপর প্রয়োজন মনে করলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মকৌশল ঠিক করেন।

প্রতিবেদনে জামায়াতের ব্যাপারে বলা হয়েছে, দলটি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে প্রকাশ্যে তেমন সক্রিয় নয়। ভোটের রাজনীতিতে নিবন্ধন হারানো দলটির নেতাকর্মীরা সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করেছেন। সেখানে তাঁরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট এবং লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছেন। বিএনপি রাজপথে সরব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াতও ঝটিকা কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় থাকছে। তারা বিএনপির আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এ ছাড়া কৌশলে অন্য সংগঠনের আড়ালে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করারও ছক কষছে।

এ জন্য আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ মুসলিম সমাজ, আধিপত্যবিরোধী আন্দোলন ও স্বাধীনতা পার্টিকে ব্যবহার করতে পারে জামায়াত।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া শীর্ষ অনেক জামায়াত নেতার সন্তান বিদেশে অবস্থান করছেন। সেখানে বসেই তাঁরা সরকারবিরোধী নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ঢাকায় জামায়াত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক, রুকন সমাবেশ, ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সভা ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। জামায়াতকে সম্প্রতি ঢাকার যে কয়েকটি এলাকায় বেশি সক্রিয় দেখা গেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, বাড্ডা ও মতিঝিল।

জামায়াতের তৎপরতা নিয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে সমকালের কথা হয়। তাঁরা জানান, সম্প্রতি জামায়াত-শিবিরের কিছু ঝটিকা কর্মসূচির তথ্য পাওয়া গেছে। তারা কয়েক মিনিটের জন্য রাস্তায় নেমে মিছিল করে পালিয়ে গেছে।
বিএনপির নির্বাচনমুখী তৎপরতার ব্যাপারে প্রতিবেদনে বলা হয়, দলটি তৃণমূল থেকে ঢেলে সাজানোর কার্যক্রম শুরু করেছে। আন্দোলনের কর্মকৌশল ঠিক করতে এবং নেতাকর্মীর মতামত নিতে সিরিজ বৈঠক, রাজনৈতিক সংলাপ ও ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে। অব্যাহত আছে ছাত্রদল, যুবদল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নতুন কমিটি গঠনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট জনগণের দাবি-দাওয়া নিয়ে বড় কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ইস্যুকে পুঁজি করে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে দলটি নেতাকর্মীকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে। শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সমালোচনাসহ বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করার চেষ্টা করছেন।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কূটনৈতিক তৎপরতার বিষয়েও নানা তথ্য উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশের

কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা। এসব বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. মঈন খান ছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা আগামী নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমা নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চান। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশল নিয়েছে দলটি।

এ নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
প্রতিবেদনে এও বলা হয়, আন্দোলনকারীদের আরেকটি লক্ষ্য হলো ইস্যু তৈরি করা। এ জন্য বিএনপিসহ অন্য সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সংযমের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অগ্রিম গোয়েন্দা তথ্য রাখার ওপর জোর দিতে হবে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও দলটি নেতৃত্বাধীন জোটের গতিবিধিতে নজর রাখা হচ্ছে। বিচার-বিশ্নেষণ চলছে ওই জোটের সদস্য কয়েকটি ধর্মভিত্তিক ও বাম দলের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION