বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

নেইমার নেই ব্রাজিল তো আছে

খেলাধুলা ডেস্ক:

কে খেলবে নেইমারের জায়গায়? দানিলোর বিকল্পই-বা কে হবে? সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ‘জি’ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ব্রাজিলের চোটগ্রস্ত দুই তারকাকে নিয়ে ঘুরে ফিরছে এ দুটি প্রশ্ন। সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিল কোচ তিতে অবশ্য রহস্য রেখে দিলেন। দলের সেরা দুই তারকাকে না পাওয়াটা তার জন্য বড় ধাক্কা। সেটা সামলে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষেও দলকে রাখতে হবে জয়ের ধারায়। জিতলে নিশ্চিত হবে সেরা ষোলো। ড্র হলেও সম্ভাবনা থাকবে। তবে হেরে গেলে, কঠিন হয়ে পড়বে ব্রাজিলের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের পথটা। তাই নেইমারবিহীন ব্রাজিলকে নামতে হচ্ছে বড় পরীক্ষায়।

দুদলই আসর শুরু করেছে জয় দিয়ে। রিচার্লিসন ঝলকে ব্রাজিল ষষ্ঠ শিরোপার অভিযান শুরু করেছিল সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে। আর ক্যামেরুনকে সুইজারল্যান্ড ধরাশায়ী করেছে ১-০ ব্যবধানে। গ্রুপের সেরা দুদলের লড়াইটা নিয়ে আগে থেকেই চলছে চাপান-উতোর। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ১-১ এ রুখে দিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। ফিলিপে কৌতিনহোর গোলে এগিয়ে যাওয়া ব্রাজিলকে থমকে দিয়েছিল ৫০ মিনিটে স্টিভেন জুবেরের গোল। অবশ্য জুবেরের সেই গোলটা নিয়ে ফিফার কাছে নালিশ করেছিল ব্রাজিল। ভিএআর প্রযুক্তির ব্যবহার হলে সেই গোলটা হতো না দাবি ব্রাজিলের। জুবের বলটা জিততে ব্রাজিল মিরান্ডাকে হালকা ধাক্কা দিয়েছিলেন।

চার বছর আগের সেই বিতর্ক ফিরে এসেছে কাতারে। একটা শঙ্কাও ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশ্বকাপে কখনই যে সুইজারল্যান্ডকে হারানো হয়নি সবটি আসরে খেলা ব্রাজিলের। পাঁচবারের শিরোপাধারীদের দুবারই রুখে দিয়েছে সুইসরা। গত আসর ছাড়াও দুদলের বিশ্বকাপ মঞ্চে দেখা হয়েছিল ১৯৫০ সালে। সেবার ম্যাচটা ২-২ অমীমাংসিত ছিল। আজও যদি অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটে, তবে একটু হলেও চাপে পড়ে যাবে ব্রাজিল। তবে এই পরিসংখ্যানই তাদের দিচ্ছে বাড়তি আত্মবিশ্বাস। বিশ্বকাপের তারা কখনই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়নি। সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারানোর পর সেই শঙ্কাটা একেবারেই নেই বলা যেত যদি নেইমার ও দানিলো সুস্থ থাকতেন। তারা থাকছেন না। তার ওপর এই বিশ্বকাপে এমন অনেক কিছুই ঘটছে, যা আগে ঘটেনি। তাই পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সার্বিয়া ম্যাচ শেষে নেইমার নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোট পাওয়া পায়ের ছবি পোস্ট করেছিলেন। ফুলে ডোল হওয়া ডান পা দেখে চমকে গেছে গোটা বিশ্ব। এর পরপরই খবর আসে এই চোট তাকে অন্তত বাইরে রাখবে গ্রুপের বাকি দুম্যাচে। দানিলোর অবস্থাও তাই। সার্বিয়ার ম্যাচে চোট পেয়ে এই ডিফেন্ডারও থাকছেন না।

নেইমার-দানিলোবিহীন ব্রাজিল কেমন খেলবে, কীভাবে সামলাবে সুইজারল্যান্ডকে, এ নিয়েই উৎসুক সাংবাদিকদের যেন একটু রহস্যের মধ্যেই রাখতে চাইলেন কোচ তিতে, ‘দলে কে খেলবে, কীভাবে খেলবে তা এর মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে আমার একটা বদভ্যাস (হাসি) হলো এ তথ্যগুলো শেষ মুহূর্তে জানানো। হয়তো দলে কিছু পরিবর্তন আসবে, পজিশনেও হয়তো কিছু বদল হবে। দানিলোর জায়গাটাতে মিলিতাও এর আগেও খেলেছে। আর দানি আলভেজের নেতৃত্ব দেওয়ার গুণের পাশাপাশি আছে নিচ থেকে আক্রমণ গোছানোর ক্ষমতা। তবে মোট কথা হলো, কে কে খেলবে সেটা আমি এখনই বলব না।’

নেইমার আর দানিলোর চোট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। তিতে আশাবাদী এই বিশ্বকাপেই তাদের পাওয়ার ব্যাপারে, ‘আমি বিশ্বাস করি, তারা এই বিশ্বকাপেই ফিরবে। তবে বিষয়টা সম্পূর্ণই চিকিৎসা ও চিকিৎসকের ওপর। আর কিছু বলা সাজে না। তবে আবারও বলছি ওদের আমরা এই আসরেই পাব।’

সেটা যে গ্রুপ পর্বে হচ্ছে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত। তাই অন্যদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে তিতেকে। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত সব বলের জোগান দিয়ে তিতের মন জয় করে নেন রিয়াল তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। অথচ কদিন আগেও তিতের সেরা একাদশে অনিয়মিত ছিলেন দারুণ ছন্দে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স দিয়ে তিতের মন জয় করে নিয়েছেন ভিনি। আর রিচার্লিসন তো জোড়া গোলে জিতে নিয়েছেন লক্ষ-কোটি হৃদয়। তিতের চোখে বাকিরাও রোমাঞ্চকর সব ফুটবলার। এই তরুণদের কাছ থেকে কোচ সেরাটা চাইছেন, ‘আমাদের আর যারা আছে তারা প্রত্যেকেই এই প্রজন্মের দূত। অসাধারণ সব খেলোয়াড়। ভিনির অ্যাসিস্ট, রিচার্লিসনের ক্লিনিক্যাল ফিনিশ, পেদ্রোর জোরালো হেডে ভীতি ছড়াতে দেখেছি। জেসুসকে দেখেছি দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য ঝাঁপাতে। রদ্রিগো যখন দৌড়ায় তখন মনে হয় বলটা তার পায়ের সঙ্গে আঠার মতো এঁটে আছে। এরা সবাই প্রস্তুত নেইমার, দানিলোর শূন্যতা পূরণে।’ সার্বিয়ার বিপক্ষে নেইমারকে সর্বোচ্চ ৯ বার ফাউলের শিকার হতে হয়েছে। যার পরিণতিতে তার খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তিতে মনে করেন ফুটবলকে যারা সুন্দর করেছে, তাদের সামলে রাখার দায়িত্ব সবার, ‘সবার উদ্দেশ্যেই বলতে চাই, খেলাটাকে যারা শিল্পীর পর্যায়ে নিয়ে গেছে, সেসব শিল্পীকে, বিশেষ করে বড় তারকাদের সামলে রাখার দায়িত্ব সবার। সবারই উচিত এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা। যেভাবে ফাউল করা হয়েছে নেইমারকে, এটা থামানো উচিত।’ ব্রাজিল ডিফেন্ডার মার্কিনিওস জানালেন মাঠে ফিরতে কতটা মরিয়া নেইমার, ‘সে সারাক্ষণ ফেরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘুমাচ্ছেও ফিজিওথেরাপি নিতে নিতে। তাতেই বোঝা যায়, ফেরার জন্য কতটা মুখিয়ে আছে ও। আমরাও চাই নেইমার ও দানিলো দ্রুত আমাদের মাঝে ফিরে আসুক।’

ক্যামেরুনকে হারানোর পর সুইজারল্যান্ড কোচ মুরাত ইয়াকিন একটা রোমাঞ্চকর ম্যাচের আশাই করছেন ব্রাজিলের বিপক্ষে, ‘আমি এই ম্যাচটার জন্য অপেক্ষায় আছি। ব্রাজিল অসাধারণ একটা দল। তাদের সামনে আমার ছেলেরা কেমন খেলে সেটা দেখতে মুখিয়ে আছি। বিশ্বকাপ এমন একটা মঞ্চ যেখানে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আমরা প্রস্তুত ব্রাজিলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে।’

আগের রাতে লিওনেল মেসির জাদুতে মেক্সিকোকে হারিয়ে কক্ষে ফিরেছে আর্জেন্টিনা। তাতে প্রাণ ফিরেছে মরুর বিশ্বকাপে। আজ ব্রাজিল জিতলে আরও জমজমাট হবে বিশ্বকাপের মঞ্চ। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল দুটির আগেভাগে বিদায় যে কারোই প্রত্যাশিত নয়।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION