মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আমার কথা খুব সোজা… ১৪ বছর বহু জ্বালাইছেন দেশের মানুষকে। এখন মানুষ আপনাদের দেখতে চায় না, আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। সোজাসুজি বলতে চাই, দয়া করে মানে মানে সরে পড়েন। আমাদের সব কিছুকে ধ্বংস করে দিয়েছেন, দেশের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন, চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছেন। দয়া করে সরে পড়েন, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। মানুষ ভোট দিয়ে যাকে খুশি তাকে নির্বাচন করুক।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) লালবাগে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনেক দুঃখের সঙ্গে বলেছেন যে ইভিএম-ব্যালট কোনোটাই কাজে দেবে না যদি বিরোধীদল অংশ না নেয়। অর্থাৎ বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় সেটা কাজে দেবে না। কেউ মানবে না। সুতরাং একটাই দাবি পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
ফখরুল বলেন, বঙ্গবাজার পুড়ে গেছে- এ বাজার বড় লোকের বাজার নয়, সাধারণ মধ্যবিত্তদের বাজার। দুর্ভাগ্য আমাদের এর আগে সিদ্দিক বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন মানুষ মারা গেলো.. এর আগে চট্টগ্রামে হয়েছে। কিন্তু এ সরকারের এসব ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই। তারা উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চায়। তারা না কী এখন বলে যে, নাশকতার গন্ধ পায়। আওয়ামী লীগের অবস্থা হয়েছে যে, তারা সারাক্ষণ একটা দুঃস্বপ্ন দেখে। এই বুঝি বিএনপি এলো, এ আন্দোলন করলো, এ তারেক রহমান এলো। রাতে অনেক মানুষ খারাপ স্বপ্ন দেখে আঁতকে ওঠে না, চিকিৎকার করে না? আওয়ামী লীগও সারাক্ষণ দুঃস্বপ্ন দেখে এ বিএনপি এলো বলে…।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের দেওয়ার কিছু না। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভোট দিতে পারছেন না আপনারা.. ভোট আগের রাতে হয়ে গেছে। আর ওরা (আওয়ামী লীগ) সরকারে বসে গেছে।২০১৪ সালে ভোটই হয়নি ১৫৩টি আসনে নির্বাচিত ঘোষণা হয়ে গেলো। আর প্রত্যেক কথায় কথায় তারা খালি বলে উন্নয়নও করেছে। আমি এখানে আসার পথে দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখা- উন্নয়ন কি চুবাইয়ে খাবো? উন্নয়ন তো চিবাইয়ে খাওয়া যায় না। আমার পেটে যদি ভাত না থাকে, ১০টা উড়াল সেতু বানালে তাতে আমার কি আসে যায়….।
পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যাপক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে সরকার চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
লালবাগের সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টুকে স্মরণ করে ফখরুল বলেন, লালবাগের মানুষ ঢাকার সবচেয়ে পুরনো মানুষ। আপনাদের এ এলাকায় অনেক নামকরা নেতা ছিলেন। সবশেষে আমাদের নাসির উদ্দিন পিন্টু ভাই.. আমাদের একজন ত্যাগী, সাহসী, বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। এ সরকার তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। জেলখানার মধ্যে হত্যা করেছে। এ এলাকায় মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করে নিয়ে গেছে….।
এ জুলুমবাজ ও নির্যাতনকারী সরকারকে কেউ দেখতে চান না। আসুন, আমরা আল্লাহ তালার কাছে এ দোয়া করবো তিনি যেন আমাদের সেই শক্তি দেন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এ দানবকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।
লালবাগে ‘হৃদয় কমিউনিটি সেন্টারে’ থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এ ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা হয়। এতে লালবাগ থানার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেন। মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে এ ইফতারে মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদসহ ওয়ার্ড নেতারা বক্তব্য দেন।
ভয়েস/জেইউ।