মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে : তথ্যমন্ত্রী

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা থাকলে গণমাধ্যম এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশে গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে, যেভাবে অবাধে সব কিছু লিখতে পারে, পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশে সেটি পারে না। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন দরকার, তেমনি দায়িত্বশীলতারও প্রয়োজন।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ‘মানবাধিকার সংরক্ষণ ও গণতন্ত্র সম্প্রসারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল। সভায় আরো বক্তৃতা করেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, সমকাল সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া ও সেমিনার উপকমিটির আহ্বায়ক জুলহাস আলম।

সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। যেটি বর্তমান সরকার দিচ্ছে। প্রতিদিনই টেলিভিশনগুলোতে টক শোর মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করা হয়। সেখানে সরকার হস্তক্ষেপ করে না, কারণ আমরা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাসী।

তিনি আরো বলেন, ‘সকলের প্রটেকশন দেওয়ার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। তবে এই আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে, এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। কারণ ডিজিটাল অপরাধের শিকার আমিও। যদিও আমি কোনো ব্যবস্থা নিইনি। তবে অনেকে ব্যবস্থা নিয়েছেন। একজন সাংবাদিক আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা করেছেন। একটি আইন থেকে কোনো পক্ষকে বাদ রাখা ঠিক না।’ অপপ্রয়োগ বন্ধ করলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দায়িত্বশীলতার অভাবে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন সময়ে সংকট তৈরি হয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক উন্নত দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন আছে, একইভাবে তাদের কাজের জবাবদিহি রয়েছে। সেখানে ভুল বা অসত্য সংবাদের জন্য জরিমানা গুনতে হয়, শাস্তি পেতে হয়। বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ ধরনের নজির থাকলেও আমাদের দেশে এমন নজির এখনো হয়নি।’

তিনি আরো বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, সিঙ্গাপুরের চারটি টেলিভিশন সরকার নিয়ন্ত্রিত। মালয়েশিয়ার মিডিয়া তাদের সরকার নিয়ন্ত্রিত। ভুল/অসত্য তথ্য বা সংবাদের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রতি মাসে অসংখ্য লোককে জরিমানা করা হয়। আমাদের দেশে কিন্তু সেসব নেই। মাঝেমধ্যে প্রেস কাউন্সিল থেকে তিরস্কার করা হয়। কারণ তিরস্কার করা ছাড়া কাউন্সিলের আর কোনো ক্ষমতা নেই। সুতরাং স্বাধীনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে।

পুঁজির দৌরাত্ম্য সাংবাদিকদের ওপর খড়্গ বসায় উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, টাকা থাকলেই মালিকরা এখন গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করছেন, যার খড়্গ এসে পড়ে সাংবাদিকদের ওপর। কোনো সংবাদ লেখার সময় তাকে চিন্তা করতে হয় যে তা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে গেল কি না। কারণ সেখানে মালিক পক্ষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ পরিবেশনের সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য শুধু সরকারের বিরুদ্ধে বললে হবে না, এ ধরনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সেই স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই আইনের জন্য মূলধারার সাংবাদিকরা প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই দ্রুত এ আইনের সংশোধন দরকার। সাংবাদিকদের ওপর এ আইনের প্রয়োগ বন্ধ করতে তথ্যমন্ত্রীসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সভার শুরুতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরীসহ প্রয়াত সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION