শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কক্সবাজারে আইন তোয়াক্কা না করে টপ সয়েল কাটার মহোৎসব, নির্বিকার প্রশাসন

এম এ সাত্তার:

কক্সবাজারে পরিবেশ ও ভূমি আইনকে তোয়াক্কা না করে ফসলি জমির মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে দুর্বৃত্তরা।

এতে যেমন ফসল ফলানোর জায়গা কমে যাচ্ছে, তেমনি ঝুঁকিতে পড়ছে ব্রিজ, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি। এস্কাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। এসব মাটি ডাম্প ট্রাক দিয়ে ক্রেতার কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে কৃষিজমির পাশাপাশি গ্রামীণ এবং পাকা রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের নিরব রহস্যময় ভূমিকার কারণে মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে লাগামহীন হয়ে উঠেছে। এনিয়ে স্থায়ীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।

রবিবার সরেজমিন সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের ব্রেইন ওয়াশ করে নামমাত্র টাকা দিয়ে ফসলি জমিতে ৫-১০ ফুট গভীর গর্ত করে মাটি নিয়ে বিভিন্ন বাড়ি-ভিটে, পুকুর ভরাটে এবং ইটভাটায়। নির্বিচারে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটা। এভাবে মাটি কেটে নেওয়ার কারণে যেমন ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি। তেমনি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। এছাড়া মাটিবোঝাই ভারী ডাম্প ট্রাক চলার কারণে ধুলোবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

দন্ডবিধিতে কোন সরকারি সম্পদের ক্ষতি করলে এর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা আছে। ৪৩১ ধারা মোতাবেক সরকারি রাস্তার ক্ষতি সাধন দন্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম জেলসহ অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে।

স্থানীয় বরাতে জানা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে জমির মালিকরা মাটি বিক্রিতে অস্বীকার করলে, তাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রশাসনের সঙ্গে মাটি ব্যবসায়ীদের সখ্যতা রয়েছে বিধেয় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার ভূমি এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার অবহিত করলেও এব্যাপারে তারা কোন পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী না। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুম এলেই নদীর তীর, ফসলি জমি, বিল ঝিলের মাটি কাটার কারণে গ্রামীণ প্রত্যন্ত এলাকাগুলো দিন দিনই অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। এতে অতিষ্ঠ জনসাধারণ। এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের নিকট জড়িতদের কঠোর শাস্তি চেয়েছেন তারা।

কৃষক আবদুল্লাহ, আব্দুস শুকুর, মোহাম্মদ করিম জানিয়েছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কয়েক মাটিখেকো চক্র অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের উৎপীড়নে দিশাহারা জমির মালিক ও কৃষি শ্রমিক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেকুয়া উপজেলা, ঈদগাহ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব ভাদির তলা, মাইজপাড়ার ঝাইক্কাকাটা বিল থেকে মাটি কাটছে আবদু শুক্কুর। ইতোমধ্যে জালালাবাদ ইউপির ধনকা বিলের ৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার খবর জানিয়েছে স্থানীয়রা। ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বোয়ালখালী কোনাপাড়া বদিউদ্দিন পাড়া, রামু চাকমারকূল, সদর উপজেলার ঝিলংজা খরুলিয়া, দরগাহপাড়া, পিএমখালী ইউপির মুহসিনিয়াপাড়া, ছনখোলা বড়বিলসহ আরো একাধিক এলাকায় চলছে মাটি কাটার রমরমা ব্যবসা।

স্থানীয়দের দাবি, পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং হামলা মামলার শঙ্কায় পড়তে হয় তাদের।

এব্যাপারে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী ও কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সুলাইমান হায়দার ফোন রিসিভ করেনি। খুদে বার্তা পাঠালে কোন সাড়া দেয়নি জেলা উপজেলার এ দুই শীর্ষকর্তা।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION