শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ১২:১২ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার যোগপাট্টা গ্রাম। অবাক হওয়ার মতোই সত্যি এই যে, এই গ্রামে গড়ে ওঠা একটি ভেড়া-ছাগলের খামারে পাহারাদারের কাজ করছে একটি বিদেশি কুকুর।
ওই গ্রামের খোলা মাঠে সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মাঠজুড়ে দেখা মিলবে এক ব্যতিক্রম দৃশ্যের। সারি সারি ভেড়া আর ছাগল ঘুরে বেড়াচ্ছে সবুজ ঘাসের মধ্যে। আর এদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে এক বিদেশি প্রজাতির কুকুর-জার্মান শেফার্ড।
একা একাই গোটা মাঠের পাহারাদার! চোখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, শরীর জুড়ে সতর্কতা। কেউ সীমা পেরোলেই ছুটে গিয়ে ফিরিয়ে আনে। রাতে আবার অন্য ভূমিকায়-চোর কিংবা শেয়াল ধারে-কাছে ঘেঁষতে পারে না। যা দেখে অবাক স্থানীয়রাও।
স্থানীয়দের চোখে খামারের এই ব্যতিক্রম দৃশ্য অনেককেই আকৃষ্ট করছে। কেউ দেখছেন কৌতূহল নিয়ে, কেউবা বলছেন এটি গ্রামের গর্ব।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রথমে যখন শুনলাম কুকুর ভেড়া পাহারা দিচ্ছে, বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু এসে দেখে মন ভরে গেল। এমন ব্যবস্থাপনা আমাদের দেশে খুব কমই দেখা যায়।’’
আরেক পথচারী রোজিনা খাতুন বলেন, ‘‘কুকুরটা যে এতটা দক্ষ, সেটা নিজের চোখে না দেখলে বুঝতাম না। দিন-রাত পাহারা দিয়ে যায়। খামারটাও খুব সুন্দরভাবে সাজানো।’’
এই খামারের প্রতিদিনকার দেখাশোনা করেন পরিচর্যাকারী নুরুল হক। তিনিই জানান কুকুর আর ভেড়াগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্কের কথা। নুরুল হক বলেন, ‘‘আগে রাতে অনেক ভয় পেতাম। চোর, শেয়াল কিছুই বাদ ছিল না। কিন্তু এখন কুকুরটা আসার পর সব সমস্যা দূর হয়েছে। রাতে পাহারা দেয়, সকালে আবার ভেড়াগুলোর সঙ্গে মাঠে ঘোরে। এমনকি ওদের কাউকে আলাদা করে ফেললে কুকুরটা খুঁজে নিয়ে আসে। যেন পরিবারের একজন হয়ে গেছে।’’
এ বিষয়ে খামারি সুমন খান বলেন, ‘‘প্রথমে শখ করে ২০টা ভেড়া আর কিছু ছাগল নিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু সমস্যা হলো নিরাপত্তা। তখনই ভাবলাম, বিদেশে তো কুকুর দিয়ে পশু পাহারা দেওয়া হয়-আমরা পারব না কেন? তাই জার্মান শেফার্ড আনি, প্রশিক্ষণ দিই। এখন দেখি, সে একাই ৬-৭ জন লোকের কাজ করে দিচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘‘ভবিষ্যতে খামারটি আরও বড় করব। আমি চাই, দেশের অন্য খামারিরাও বুঝুক-একটা প্রশিক্ষিত কুকুর কতটা উপকারী হতে পারে। এটা শুধু খরচ বাঁচায় না, শান্তি আর সুরক্ষা-দুটোই নিশ্চিত করে।’’
ভয়েস/আআ