মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
নতুন ১০০ টাকার নোট মঙ্গলবার থেকে বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার দুই পিঠে প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন, বাঘের মুখচ্ছবিসহ বিভিন্ন ছাপ রয়েছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বাজারে ছেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নোটটি প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে পাওযা যাবে। ধীরে ধীরে অন্যান্য ব্যাংকেও এই নোট পাওয়া যাবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যকে নতুন ১০০ টাকার নোটে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
আসল-নকল নোট যাতে গ্রাহকরা চিনতে পারেন, সেজন্য বিস্তারিত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নোটটির নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যে বলা হয়েছে, ১০০ টাকার নতুন নোটের আকার ১৪০ মি.মি.x ৬২ মি.মি.। নোটের সম্মুখভাগে বাঁ পাশে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি ও মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি এবং নোটের পেছন ভাগে সুন্দরবনের ছবি মুদ্রিত আছে। নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ, এর নিচে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে 100 ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে। নোটটিতে নীল রঙের আধিক্য রয়েছে।
১০০ টাকা মূল্যমানের নোটটিতে মোট ১০ ধরনেরর নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটের সম্মুখভাগে ডান দিকে কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ১০০ রঙ পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি দ্বারা মুদ্রিত। নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রঙ সোনালি থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়। নোটটির সম্মুখভাগে বাঁ পাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া লাল রঙ এবং উজ্জ্বল রুপালি বার এর সমন্বয়ে পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা রয়েছে।
নোটটি নাড়াচাড়া করলে নিরাপত্তা সুতার রঙ লাল থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়, যাতে ১০০ টাকা খচিত রয়েছে এবং উজ্জ্বল রংধনুর রঙের বারে রূপান্তরিত হয়ে ওপর থেকে নিচে চলতে দেখা যাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের সম্মুখভাগে ডানে নিচের দিকে তিনটি ছোট বৃত্ত রয়েছে, যা হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভূত হয়।
নোটটিতে ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলো হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভব করা যাবে। ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলোর মধ্যে রয়েছে, নোটের সম্মুখভাগের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রতিশ্রুত বাক্য, বাংলা ও ইংরেজিতে মূল্যমান নোটের ডান দিকে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত ছয়টি লাইন এবং নোটের পেছন ভাগে সুন্দরবনের ছবি, সকল মূল্যমান (অঙ্কে ও কথায়), বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম, BANGLADESH BANK ইত্যাদি।
নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতাসংলগ্ন নকশাগুলো বিশেষ কালিতে মুদ্রিত, যা আইআর ডিটেক্টর ম্যাশিনে দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতার বাঁ পাশে ও BANGLADESH BANK লেখাটির নিচে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে উলম্বভাবে BANGLADESH BANK 100 Taka বারবার মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছন ভাগে বাঁ পাশে নিচে ও ডান পাশে উলম্বভাবে BANGLADESH BANK এবং বাঁ পাশে ওপরে 100 Taka মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে বারবার মুদ্রিত রয়েছে, যা শুধু আতশি কাঁচে দেখা যাবে।
নোটটিতে গভর্নরের স্বাক্ষরের ডান পাশে সি থ্রু ইমেজ হিসেবে ১০০ মুদ্রিত রয়েছে, যা আলোর বিপরীতে ধরলে ১০০ লেখা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নিচের দিকের বর্ডারের মাঝখানে নীল ডিজাইন অংশে গুপ্তভাবে 100 লেখা আছে, যা নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যাবে। নোটের কাগজে লাল, নীল ও সবুজ রংয়ের অসংখ্য ফাইবার রয়েছে, যা ইউভি ডিটেক্টর ম্যাশিনে দৃশ্যমান হয়। নোটটির উভয় পৃষ্ঠে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে নোটটি চকচকে অনুভূত হবে, নোটের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পাবে।
নতুন ডিজাইনের ১০০ টাকা মূল্যমানের নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০ টাকা মূল্যমানের নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে, যা মিরপুরের টাকা জাদুঘর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
ভয়েস/আআ