রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০১:২৬ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক, টেকনাফ:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কেউ দয়া করে ভয় করবেন না এটিকে সাহসিকতা দিয়ে জয় করতে হবে।
তবে বেশি চিন্তা ছিলাম চৌদ্দ মাস বয়সের দুগ্ধ পান করা শিশুকন্যাকে নিয়ে। ও সময় আমাকে বেশি সাহস ও বট গাছের ছায়ার মত সাহস যুগিয়েছেন স্বামী। নিজের অনুভূতি কথা জানালেন করোনা কে জয় করে আসা টেকনাফে নারী চিকিৎসক নাঈমা সিফাত।
তিনি বলেন, চিকিৎসকেরা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কঠিন রোগের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। তারা কখনো কঠিন জটিল রোগীর পাশে না গিয়ে থাকতে পারছে না। কারণ তাদের পাশেই হচ্ছে মানুষের সেবা করা। অথচ ঐসব চিকিৎসকদেরা এসব রোগে আক্রান্ত হলে নিজের আত্মীয়-স্বজনরা বেশি তাদেরকে তুচ্ছ করছেন। সহজে আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না। এমনকি তারা পাশেও আসছে না।
এটি এমন একটি রোগ নিজের স্বজনরাও দূরে ঠেলে দিচ্ছেন নিজের আপন জনকে একটাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহায্য সেবা দিতে গিয়ে তারাই কিনা আবার আক্রান্ত হয়ে যায় সব ভুল।
আক্রান্ত নারী চিকিৎসক বলেন, সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল গরম পানি, লেবু চা, লং জিরা, আদা, এলাচি, দারুচিনি, মধু, কালিজিরা মিশ্রিত গরম পানির ভাপ নেওয়া। দৈনিক তিন থেকে চার বার এভাবে ভাব নিতে পারলে কোন করুণা আপনাকে বস করতে পারবে না। আপনি এখন উনাকে অবশ্যই করবেন। আপনারা মনোবল হারাবেন না নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে এবং জয়ী হতে হবে।
গত ২৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস সনাক্ত হওয়ার পর প্রথম চারদিন টেকনাফের চিকিৎসক কোয়ার্টারে আইসোলেশন ছিলেন তিনি। তৃতীয়বার নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে ছাড়পত্র দেয়।
এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাঈমা সিফাত গত ৩০ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১১দিন চিকিৎসাধীন পর করোনাকে জয় করে চট্টগ্রাম শহরের কাপাসগোলা নিজের বাড়িতে ফিরেছেন নাঈমা সিফাত। তিনি ছিলেন কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া প্রথম চিকিৎসক।
টিটু চন্দ্র শীল আরও বলেন, চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোর, ইনডোর, হাসপাতাল গেইট এলাকার১২টি দোকান, মেরিন সিটি প্রাইভেট হাসপাতাল, সাউথইস্ট ব্যাংকের লকডাউন করা হয়েছিল। বর্তমানে এসব লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত ৪৩০জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত ছয়জনের পজেটিভ ও বাকীদের নেগেটিভ এসেছে।
বর্তমানে হোম কোয়ারান্টাইনে ৬৫০জন রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে,আমরা সকলে সচেতন হয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করবো।
ভয়েস/আআ