মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

পৃথিবীর শাসক নমরুদের ভয়ংকর পরিণতি

ইউসুফ আরমান,ফাইল ছবি

ইউসুফ আরমান:
নবীদের জীবনে ঘটে যাওয়া সম্মিলিত ঘটনা নিয়ে আমার ক্ষুদ্র লেখা প্রায়স।

পৃথিবীর বাদশাহ ছিল নমরুদ ও ইবরাহিম (আ.)। সে ছিল পৃথিবীর চারজন বড় বড় শাসকের অন্যতম। নমরুদ প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করেছে। পবিত্র কোরআনে তার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। পৃথিবীতে সে-ই সর্বপ্রথম রাজমুকুট পরিধান করেছে এবং নিজেকে খোদা দাবি করেছে।

হযরত ইব্রাহীম (আ) বাবলে পৌঁছেই সর্বপ্রথম নমরুদের সাথে সাক্ষাক করে বললেন, হে নমরুদ! তুমি এক নিরাকার সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে পাঠ করঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইব্রাহীমু খালিলুল্লাহ।

নমরুদ জবাব দিল, হে ইব্রাহীম (আ)! তোমার আল্লাহর নিকটে আমার কোন প্রয়োজন নেই। আমি নিজেই তো খোদা।

আমি অন্য খোদার বশ্যতা স্বীকার করতে পারি না। তবে আমি সত্বরই তোমার খোদার প্রাণ শেষ করে তার রাজ্য কেড়ে নেব।

হযরত ইব্রাহীম (আ) বললেন, হে কাফের নমরুদ! তুমি আমার আল্লাহর নিকট যাবে কিভাবে বা কেমন করে? নমরুদ জবাবে বলল, সেজন্য তোমাকে চিন্তা করতে হবে না।

এভাবেন একাধারে তিনদিন তিন রাত্রি ক্রমাগত উপরে আরোহণ করার পর সে মনে করল যে, এখন আসমানবাসী খোদার একেবারে নিকটে পৌঁছেছে। (নাউজুবিল্লাহ) অতএব নমরুদ সেখান হতে উপরের দিকে কতগুলো তীর নিক্ষেপ করল।

আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতা জিব্রাইল (আ) কে বললেন, জিব্রাইল! আমি আমার পরম শত্রু কে ও নিরাশ করি না। তুমি নমরুদের মনের আশা পূর্ণ করে দাও। তার নিক্ষিপ্ত তীরের কয়েক টি কে ধরে একটি মাছের রক্ত দ্বারা রঞ্জিত করে দাও ডাতে তার মনে এরূপ ধারণা হয়যে, সে আসমানবাসী খোদা কে নিহত করেছে।

ফেরেশতা জিব্রাইল (আ) আল্লাহর আদেশ মতে নমরুদের তীরে সত্যিই রক্ত মাখিয়ে দিলেন। ঐ রক্তমাখা তীর গুলো নমরুদের শকুনী চালিত রথের উপর পতিত হল। তা দেখে নমরুদ খোদা কে নিহত করেছে মনে অত্যন্ত আনন্দিত হলো।

পাপীষ্ঠ নমরুদ তখন গৌরবের অহমিকায় অস্থির হয়ে পড়ল। সর্বপ্রথমেই সে গেল হযরত ইব্রাহীম (আ) এর নিকটে। তাকে রক্তমাখা তীর গুলো দেখিয়ে সগৌরবে বলতে লাগল, দেখলে তো ইব্রাহীম! তোমার খোদার বড়াই এবার শেষ করে দিলাম। আমার নিক্ষিপ্ত তীরে তোমার খোদা কে বিদ্ধ করে ফিরে এসেছে। এ দেখ, প্রত্যেক টি তীরেই রক্তমাখা রয়েছে।

হযরত ইব্রাহীম (আ) বললেন, ওহে নির্বোধ কাফের! আমার আল্লাহ তায়ালা কে হত্যা করতে পারে, এমন শক্তি কারো নেই। তিনি অদৃশ্যমান ও নিরাকার। তাকে মানুষের আকারে কল্পনা করা বোকামীর লক্ষণ। তার উপরে কারো কোন প্রকার শক্তি ও ক্ষমতা সক্রিয় হতে পারে না।

হযরত ইব্রাহীম (আ) এর এসব কথার প্রতি মোটেই গুরুত্ব না দিয়ে সে বলল, তোমার খোদার সৈন্য সংখ্যা কত, তা বলতে পারো কি? তোমার খোদা কে তো আমি শেষ করেছি, এখন তার সকল সৈন্য -সামন্ত কে ও শেষ করতে চাই।

হযরত ইব্রাহীম (আ) নমরুদের কীর্তি কলাপ দেখে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, হে মাবুদ! আপনি সকল কিছুই দেখেছেন। বাদশাহ নমরুদ যেভাবে স্পর্ধার সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং অহংকারে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে, তার দর্প শেষ না করলে দুনিয়ার সাধারণ লোকজনও তা দেখে ব্যাপকাকারে বিভ্রান্ত হবে এবং বিপথে চলে যাবে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত ইব্রাহীম (আ) এর দোয়া মঞ্জুর করলেন। ফেরেশতা জিব্রাইল (আ) এসে হযরত ইব্রাহীম কে জানিয়ে গেলেন, হে আল্লাহর নবী! আপরার চিন্তার কোন কারণ নেই। অতিশীঘ্রই আল্লাহ তায়ালা পাপীষ্ঠ নমরুদ কে চরম শাস্তি প্রদান করবেন। সে ও তার বেঈমান সৈন্য-সামন্ত সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
(চলবে)

তথ্যসূত্রঃ-
কুরআন মাজীদ
হাদিস শরীফ
নবী রাসূলের জীবনী।

লেখক পরিচিতি
ইউসুফ আরমান
কলামিস্ট, সাহিত্যিক
দক্ষিণ সাহিত্যিকাপল্লী
০৬ নং ওয়ার্ড, পৌরসভা
কক্সবাজার
০১৬১৫-৮০৪৩৮৮
yousufarmancox@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION