শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৩ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো। মঙ্গলবার (১৮ মে) যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) ঘোষণা নিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের জন্য প্রণীত ২০২১ সালের যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) প্রকাশ করেছে। এই পরিকল্পনায় ৮ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৪ লাখ ৭২ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণের জন্য ৯৪.৩ কোটি মার্কিন ডলারের আবেদন করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এবারের জেআরপিতে সবমিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ মানুষের সুরক্ষা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে যার অর্ধেকই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ২০২১ সালের জেআরপির জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিলের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছে। যা মোট আবেদনের ৩৫ শতাংশের বেশি।
এবারের জেআরপি বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘের সংস্থা ও এনজিওসহ ১৩৪টি অংশীদারের প্রচেষ্টাকে সংযুক্ত করেছে। অংশীদারদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বাংলাদেশি এনজিও রয়েছে। এই আবেদনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা জোরদার করা, মানসম্পন্ন জীবন রক্ষাকারী সহায়তা দান, ক্যাম্পের আশেপাশের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূল হলে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ স্থায়ী প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলোর মধ্যে রয়েছে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য ও নগদ অর্থের সরবরাহ। এছাড়া করেনার কারণে স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা ও জীবনমানের ওপর যে প্রভাব পড়েছে সে সংক্রান্ত বিষয়গুলোও উঠে এসেছে। করোনা মহামারি শরণার্থী ও বাংলাদেশি উভয় জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর নিকোল এপটিং বলেন, এ বছরের আবেদনের ৪০ শতাংশেরও বেশি অর্থ প্রয়োজন হবে সবচেয়ে জরুরি ও মৌলিক দুটি চাহিদা অর্থাৎ খাদ্যনিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে। এছাড়া নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, হাইজিন ও শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা সংশ্লিষ্ট উদ্বেগগুলো দূর করাও অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনরক্ষায় জরুরি সেবাসমূহ যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০১৭ সালে সংকটের শুরু থেকে বিগত চার বছরে জেআরপির মাধ্যমে ২৩২ কোটি মার্কিন ডলার তহবিলের প্রতিশ্রুতি এসেছে। যা প্রয়োজনীয় চাহিদার ৬৯ শতাংশ।
মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো জানায়, পরিস্থিতি অনুকূল ও নিরাপদ থাকলে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্থায়ী প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত, মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতি ও সংহতি প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আবেদন জানাচ্ছে।
ভয়েস/আআ