সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

চট্টগ্রাম ভাসছে ১৩৭৪ কোটি টাকার প্রকল্পে

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রামের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে সাত বছর আগে প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ধাপে ধাপে বেড়েছে ব্যয় ও সময়।নতুন করে আবারও ব্যয় ও সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ৩২৬ কোটি টাকার প্রকল্প হয়ে যাচ্ছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।

জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ‘বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন’ প্রকল্প হাতে নেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। প্রকল্পটি ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ধাপে ধাপে বেড়েছে সময় ও ব্যয়। পরিকল্পনা কমিশনে নতুন করে আবারও প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

চসিকের প্রস্তাবনায় সোমবার (০৭ জুন) প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করেছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। প্রস্তাবিত ব্যয় ও সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, সংশোধিত ডিপিপিতে ৫ হাজার ৮০০ মিটার রাস্তা নির্মাণের জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কিন্তু রেইট সিডিউল পরিবর্তন হওয়ায় রাস্তা নির্মাণের ব্যয় বাড়িয়ে ২৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ২৯০০ মিটার ড্রেন নির্মাণের জন্য ৯ কোটি টাকা নির্ধারিত ছিল। এখন ড্রেনের মোট দৈর্ঘ্য হয়েছে ৫৫০০ মিটার। এ কারণে ব্যয় আরও ২৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে, যা খুব বেশি বলে মনে হয়েছে।

প্রকল্পে ৮টি ব্রিজ ও ১টি কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের নির্ধারিত স্থান এবং ডুইং ডিজাইন আরডিপিপিতে সংযুক্ত করা হয়নি। এছাড়া ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের ব্যয় প্রাক্কলনের ভিত্তি এবং প্রতিটি ব্রিজ নির্মাণের একক ব্যয় প্রকল্পে উল্লেখ করা হয়নি।

প্রকল্পে ৫ হাজার ৫০০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের জন্য ৩৬ কোটি টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়। বর্তমানে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯২ কোটি ৯০ লাখ টাকা, অর্থাৎ ৫৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের একক ব্যয়, ডিজাইন ব্যয় বৃদ্ধির যৌক্তিকতা ও ভিত্তি নিয়ে সভায় আলোচনা এবং ব্যয় কমানোর সুপারিশ করেছে কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) কাজী জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের সময়-ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব আমাদের হাতে এসেছে। প্রকল্পের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভা হয়েছে। কিছু কিছু খাতের ব্যয় বাড়তি। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা জানতে চেয়েছি। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জুনের পরে এক ধাপে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর পরে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। নতুন করে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের সময় আবারও ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

মূলত ভুল পরিকল্পনা ও নকশার কারণে প্রকল্পের মেয়াদ-ব্যয় বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফলে আবারও প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন হচ্ছে।

ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব:
প্রকল্পটির ৯০ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে। এটি চূড়ান্ত না হওয়ায় প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা যায়নি বলে জানানো হয়েছে।

স্লুইস গেইট নির্মাণ:
প্রকল্পের ১ম সংশোধনীতে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১টি সুইস গেইট নির্মাণের অনুমোদন ছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকায় তা বাদ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।

রাস্তার উন্নয়ন:
প্রকল্পের ১ম সংশোধনীর অনুমোদিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) ৫ হাজার ৮০০ মিটার সড়ক পথের জন্য ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারিত ছিল। নির্মাণ কাজের ব্যয় বাড়ার ফলে তা  ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা করা হয়েছে।

ব্রিজ:
প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতে ৬টি ব্রিজের জন্য মূল্য নির্ধারিত ছিল ১৫ কোটি ৯ লাখ টাকা।  ২০১৪ সালে প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ার পর বর্তমান সময়ে এসে প্রস্তাবিত খালের এলাইনমেন্টে ৩টি নতুন সংযোগ সড়কের সৃষ্টি হয় যেখানে ব্রিজ নির্মাণ জরুরি। তাই ব্রিজ সংখ্যা বেড়ে ৮টি ও ১টি কালভার্ট নির্মাণ করা প্রয়োজন হয়। ফলে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৪১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

চসিক সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামে ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যানের সুপারিশক্রমে ড্রেনেজ এরিয়া ৭ এ মোট ২ হাজার ২৬৪ হেক্টর পানি নিষ্কাশন তথা জলাবদ্ধতা নিরসনের স্বার্থে নগরীর বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খননের সিদ্ধান্ত হয়।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION