শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
ভয়েস প্রতিবেদক:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ৪নং সাক্ষী হিসাবে মো: কামাল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহন ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।সোমবার (৬সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণের অংশ হিসাবে এ সাক্ষ্য নেয়া হয়।
বাদি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, ‘মামলার অন্যতম সাক্ষী মো: কামাল হোসেন সংগঠিত ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। সে পেশায় সিএনজি চালক। টেকনাফ শামলাপুর পুলিশের চেকপোস্টে মেজর সিনহা হত্যার সংঘটিত ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছেন। সে যা দেখেছেন, সবকিছু আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতের নিষেধ থাকায় মিডিয়ায় প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, সোমবার দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহনের দ্বিতীয় দিনে ৪র্থ নং সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহন সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিচারাধীন কোন মামলার আদালতের অভ্যন্তরীণ বিষয় প্রকাশ করা আইনের পরিপন্থী। তাই, মিডিয়ায় দেয়ার মত কোন তথ্য নেই।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত জানান, দীর্ঘ সময় ধরে সাক্ষী কামাল হোসেন আদালতে যে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন তা আমরা মনযোগ সহকারে শুনেছি। সাক্ষী কামাল হোসেন যে নিজেকে সিএনজি চালক তা তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে যেমন কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। একইভাবে আজ আদালতে সাক্ষী দিতে এসেও কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। সুতরাং ঘটনার সময় সে কিছু দেখেছে বলে মনে হয়নি।’
এর আগে গত রবিবার মোহাম্মদ আলী নামের ৩নং সাক্ষী হিসাবে আদালতে সাক্ষ্যগ্রহন শেষ করেন তিনি। এছাড়াও গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিনদিন মামলার ১নং সাক্ষী ও বাদি শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস ও ২নং সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহন শেষ করেন আদালত।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারি আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামী টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামীদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারি পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ভয়েস/আআ