শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক:
টেকনাফে আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত ষষ্ট ধাপের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ ১৫, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয়ে ষষ্টধাপের সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ দিনের বিচারিক কাজ শেষ হয় সন্ধ্যা সাতটায়। এ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহ ও মো. দেলোয়ার হোসেন শামীম। আসামীপক্ষের আইনজীবিরা তাদের জেরাও শেষ করেছেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ষষ্ট ধাপের শেষ দিনে দুই সিনিয়র ম্যাজিষ্ট্রেটসহ ৬ জন সাক্ষীকে উপস্থাপন করা হয়। সেখান থেকে দুই বিচারকের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৫,১৬ ও ১৭ নভেম্বর দিন ধায্য করেছেন।
এ মামলায় এক থেকে ষষ্ঠধাপে ৫৯ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজকে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৮ তম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহর ও ৫৯ তম সাক্ষী মো. দেলোয়ার হোসেন শামীমের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে পুলিশ আটক করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করা হয়। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।
সিনহা হত্যার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
আসামিদের মধ্যে পুলিশের ৯ জন সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন- বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।
অপর আসামিরা হলেন- আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।
ভয়েস/আআ