শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় মামলা

ভয়েস প্রতিবেদক:

মহেশখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমজাদ হোসেন নিজে বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তবে এ মামলায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মফিজুল ইসলাম।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদের উপর হামলাকারীরা প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তাঘাটে ঘুরাঘুরি করছে বলে জানা যায়। আমজাদ হোসেনকে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে আসামীরা। এমনকি মামলা তুলে না নিলে প্রাণে মেরে গুম করে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন আমজাদ হোসেন।

মশেখালী থানার মামলা নং- ১৬, তাং ২৬/১১/২১ইং এ ২৫ জনের বিরদ্ধে ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬ ধারায় ৩৪ পেনাল কোডে মামলা রুজু হয়। এ মামলার আসামিরা হলেন- মহেশখালী পৌরসভার সিকদারপাড়া গোরকঘাটা এলাকার কুখ্যাত রাজাকার মৃত হাসেম সিকদারের ছেলে পৌরমেয়র মকছুদ মিয়া (৫৩), তার ছেলে হাম্মাম শাহাজাদ (২১), মিরাজ উদ্দিন নিশান (২২), ইসহাক মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ মামুন (৪২), মকছুদ মিয়ার ভাই আতা উল্লাহ বোকারী (৪৫), মৌলানা আব্দু সবুরের ছেলে শামসু উদ্দিন (২৮), মঈন উদ্দিন (৩০), মৃত জাফরের ছেলে বশির উদ্দিন (৩৩), নুরুল ইসলামের ছেলে সাহেদুল ইসলাম (৩১), তৌহিদুল ইসলাম (৩৪), মৃত গুরা মিয়ার ছেলে সোলতানুল আলম (৫৬), মৃত জাফরের ছেলে রকি (২৮), মৃত ইসহাকের ছেলে জাহাঙ্গীর-প্রকাশ বিলাই জাহাঙ্গীর (৪৫), হাসান মোর্শেদ (২৫), পশ্চিম সিকদারপাড়ার মৃত মৌলভী আতিকুর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান (৩৫), মিজানুর রহমান (৪০),

গোরকঘাটার চরপাড়া ৯নং ওয়ার্ড এলাকার আব্দুল হকের ছেলে মাঈন উদ্দিন (২৮), পূর্ব সিপাহীর পাড়া এলাকার ছৈয়দ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শান্ত (২৬), জসিম উদ্দিন (২৪), ৪নং ওয়ার্ড নয়াপাড়া এলাকার মতলবের ছেলে গোলাপ শাহা (৩৫), ছোট মহেশখালী ডেইলপাড়া এলাকার মৌলভী আবছারের ছেলে ওবাইদুল মোস্তফা কাউছার (৩৬), ঘোনাপাড়া এলাকার সোলতান আহমদের ছেলে ফরিদ আলম- প্রকাশ কালা ফরিদ (২৭), দক্ষিণ ঘোনাপাড়া এলাকার মৃত মোছন আলীর ছেলে আলা উদ্দিন (৩৫), মহেশখালী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত মোহাম্মদ আমিরের ছেলে আলা উদ্দিন (৩২), মৃত নজিরের ছেলে আমান উল্লাহ (৩৫)।

গত ২৪ নভেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন গোরকঘাটা বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ১৫/২০ জনের সন্ত্রাসীদের দলবল তাকে খুন করার উদ্দেশ্য কুপিয়ে মারাত্মক জখম আবস্থায় লিডার শীপ স্কুল এন্ড কলেজের সামনে ফেলে চলে যায়। পরে মূমুর্ষ অবস্থায় আত্মীয় স্বজন এবং এলাকার লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় ।

উল্লেখ্য, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার লোকজন কতৃক কুতুবজুমস্থ আমজাদ হোসনের ‘১৪ লাখ টিক্কা’ নামক চিংড়ি ঘের ডাকাতির ঘটনা নিয়ে আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে ওই ঘটনায় মেয়র মকছুদ মিয়াসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা রুজুর ঘটনা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল বলে পারিবারিক সুত্রে জানা যায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে মেয়র সমর্থিতি লোকজনের নানা হুমকির মুখে ছিলেন আমজাদ। এমনকি আমজাদকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছিল প্রতিনিয়ত। যা তিনি সংবাদ সম্মেলনে আশঙ্কা করে বলেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে আমজাদ হোসেন পূনরায় মেয়র সমর্থিত লোকজনেরে বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেন বলে জানা যায়।

আমজাদ হোসেনের ছেলে মাস্টার দেলোয়ার হোসেন জানান, ‘মকছুদ মিয়ার সন্ত্রাসী বাহিনীর হত্যা প্রচেষ্টার পর তার বাবা কোনো রকমে জানে বেঁচে গিয়ে বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। একটু স্বস্তি পেলেও পুরোপুরি আশঙ্কা মুক্ত নন।

তিনি জানান, মাথায় লম্বা দা তিনটি কোপ, হাতে পায়ে রডের আঘাতে পুরো শরীর জর্জরিত। সবচেয়ে যেটি বেশি এখনো আশঙ্কাজনক তার মাথার পিছন সাইডে একটি আঘাত। ডাক্তারগণ আশ্বস্ত করেছেন চিকিৎসার পর ভালো হবে তবে সময় লাগবে।

এ ব্যাপারে মামলার আসামি মেয়র মকছুদ মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলাটি সবে মাত্র হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আসামিদের মধ্যে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এর আগে মেয়র মকছুদ মিয়া ও তার লোকজনেরে বিরুদ্ধে মামলা করায় আমজাদকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কেঁদে কেঁদে এসব ঘটনার বিবরণ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ। দোষীদের আইনের আওতায় এনে, কঠোর শাস্তির দাবি জানালেন এলাকাবাসী।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION