সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের প্রাপ্তি-প্রত্যাশায় স্বাধীনতার হাফ সেঞ্চুরি

ইউসুফ আরমান,ফাইল ছবি

ইউসুফ আরমান :
বাংলাদেশের প্রাপ্তি-প্রত্যাশায় স্বাধীনতার হাফ সেঞ্চুরি উদযাপনের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে নিজেকে বড় ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। কত বীর মুক্তিযোদ্ধা ৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের উল্লাসে মুক্ত জন্মভূমিতে স্বাধীনতা অর্জনের আনন্দে উল্লাসিত হয়েছেন, কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর তথা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে সামিল হতে পারেননি বহু মুক্তিযোদ্ধা। যারা দেশের নিবেদিত সৈনিক ছিল। ত্রিশ লাখ শহীদ কয়েক লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা। সে সকল মা-বোন ও শহীদের প্রতি জানায় বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
               ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো আজ আমাদের মতো নবীনদের স্মৃতির জানালা খুলে দিয়েছে। পেছন ফিরে তাকালে কোটি কোটি মানুষের দুঃখ-দুর্দশার ছবি ভেসে ওঠে। আপন জন্মভূমি মৃত্যু গুহা হিসেবে দেখতে বাধ্য হওয়া অগণিত মানুষের অশ্রু আর রক্তের মর্মস্পর্শী সেই ঘটনাপ্রবাহ স্মৃতিকে আপ্লুত করে দেয়।
               কিন্তু স্বাধীনতা ঊষালগ্নে দেখা বঙ্গবন্ধুর দ্রারিমুক্ত-ক্ষুধামুক্ত-শোষনহীন-সমাজতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক দেশের মহৎ স্বপ্নটি তার দল আজ মুলত ছেড়ে দিলেও সাধারণ মানুষ দেশবাসী জনগণ এবং তার দলের ভেতরে ও বাইরে এখনো থেকে যাওয়া লাখ লাখ অনুসারী ভক্ত নিশ্চয়ই সেই স্বপ্ন ছাড়েন নি। সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নের সঠিক পথটি না বের করা পর্যন্ত সব শহীদের প্রতি আমাদের ঋণ পূর্ণভাবে পরিশোধিত হবে না। আসুন স্বীয় কর্তব্য করার জন্য ব্রুসের  মত অধ্যবসায় ও মনোযোগ দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আবার আমরা সেই হারানো সিঁড়ির চাবি টি খুঁজে বের করি।  আমরা শহীদের প্রতি আমাদের ঋণ পরিশোধ করি। বিশ্বের বুকে আমাদের প্রিয় স্বদেশ শোষণহীন-লুন্ঠনহীন-দুর্নীতিহীন গণতান্ত্রিক উন্নত স্বচ্ছ এক দেশ হিসাবে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।
              ১৯৭১ বিজয় অর্জনের সময়টায় জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। দেশটি তখনো এ জনসংখ্যার ভার সইতে পারছিল না। খাদ্য সংস্থান করতে পারেনি। দুর্ভিক্ষে না খেয়ে মানুষ মরেছে। গত ৪৭-৪৮ বছরে তার দ্বিগুণের বেশি মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। না খেয়ে কারো মৃত্যু হচ্ছে না। এ সাফল্য নিয়ে মত পার্থক্য বহু দিনের। কারো মতে, এটা সরকারের কৃতিত্ব। কেউ বলেন, জন মানুষের এই অগ্রগতি মূলত তাদেরই খাটুনির ফসল। আবার কারো মতে, এটা একেবারেই আল্লাহর দান। অলি-আউলিয়ার দেশকে আল্লাহই রহম করেন। যুক্তি-ব্যাখ্যা যাই হোক জীবন-জীবিকায়, আয়-আয়ুতে বাংলাদেশ এগোচ্ছে এ কথা শতভাগ সত্য। দেশের অর্থনীতির পরিসর বড় হচ্ছে। অংশীদারির ব্যাপ্তিও ঘটছে। মানুষের স্ব স্ব জীবনে গতি, বৈচিত্র্য আসছে। এর ওপর চলাচল ও যোগাযোগের বিশ্বায়ন এবং বাজার অর্থনীতির একচ্ছত্র দাপটও কম নয়। অনিবার্যভাবে সব উতরে সামনে যাচ্ছে দেশ, দেশের মানুষ।
              “দেশ কিভাবে এগিয়ে যাবে সেই কাঠামোর মধ্যে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের পাশাপাশি চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি পরিবেশকেও গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের অস্তিত্বের লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। প্রাকৃতিক যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশে তা থেকে উত্তরণটা হবে আরও বড় চ্যালেঞ্জ”।
              কখনো কখনো জীবন বাজি রেখে সাত সমুদ্দুর পাড়ি দিয়ে নিজের ভাগ্য গড়ার ঝুঁকি। পাশাপাশি রেমিট্যান্স যোগ করে দেশের অর্থনীতির শিরায় রক্ত প্রবাহ বাড়াচ্ছে এই অভাজনরাই। এর বিপরীতে গণতন্ত্র-সুশাসনে আমাদের ঘাটতি অনেক। এর বাইরে স্বজনপ্রীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধীরগতি, নীতি-নির্ধারকদের দেশপ্রেমের অভাব কাটিয়ে উঠতে পারলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের গতি আরো ত্বরান্বিত হবে। স্বাধীনতার পরবর্তীকালে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে উপহাস করেছিলেন। আজ এই তলাবিহীন ঝুড়ির তলাটা অনেক শক্ত হয়েছে। একটু একটু করে আমাদের যে সব প্রাপ্তি যোগ হয়েছে সেটা স্বাধীনতারই প্রাপ্তির বিজয়ের ফল। শুভ হোক স্বাধীনতার হাফ সেঞ্চুরি।
লেখক পরিচিতি
ইউসুফ আরমান
কলামিষ্ট ও সাহিত্যিক
দক্ষিণ সাহিত্যিকাপল্লী
বিজিবি স্কুল রোড় সংলগ্ন
পৌরসভা, কক্সবাজার।
০১৮১৫৮০৪৩৮৮/০১৬১৫৮০৪৩৮৮

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION